Thursday, May 21, 2020

বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত, প্রাণ গেছে ১৩ জনের

ফাতেহ ডেস্ক

ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে দেশের উপকূলীয় বেশিরভাগ অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে খুলনার কয়রা উপজেলার ১১টি জায়গায় বেড়ি বাধ ভেঙ্গে ৪টি ইউনিয়নের অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে ৮ জেলায় ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ঝড়ে গাছ পড়ে, দেয়াল চাপায় ও ট্রলার ডুবে এদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বিধ্বস্ত হয়েছে অসংখ্য ঘর-বাড়ি। বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকার নিম্নাঞ্চল।

এর মধ্যে কয়রা সদর, উত্তর বেদকাশি, দক্ষিণ বেদকাশি ও মহারাজপুরে ভেসে গেছে চিংড়ি ঘের। এছাড়া দাকোপ বটিয়াঘাটাসহ জেলার বিভিন্নস্থানে ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।

নোয়াখালীতে সুখচর, নলচিরা, চরঈশ্বর ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এতে প্লাবিত হয়েছে অন্তত ২৬ গ্রাম। হাতিয়া উপজেলায় জোয়ারে বেড়িবাঁধ ভেঙে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে ও রাতে দুই দফায় চার ইউনিয়নের কয়েকটি বেড়িবাঁধে এই ভাঙন দেখা দেয়।

পটুয়াখালীতে আম্পানের প্রভাবে বেড়িবাঁধ উপচে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে সদর উপজেলা, রাঙ্গাবালী, দশমিনা, গলাচিপা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ে বহু কাঁচাঘর, গাছপালা ভেঙে পড়েছে। ক্ষতি হয়েছে ক্ষেতের ফসলের। অনেক পানবরজ ভেঙে পড়েছে।

ঝিনাইদহে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে অনেক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, উপড়ে গেছে গাছপালা। তলিয়ে গেছে ধান ক্ষেত। আম্পানের প্রভাবে বুধবার বিকেল থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে ঝিনাইদহ, যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, লক্ষ্মীপুরসহ অনেক জেলা। ঝিনাইদহ জেলা উঁচু অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এ অঞ্চলে সাধারণত বন্যা দেখা যায় না। বড় ধরনের ঝড় দেখা যায় না। কিন্তু আম্ফান বুধবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়েছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে, ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের কাজ শুরু হয়েছে মাঠ পর্যায়ে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় কাজ শুরু করেছে প্রশাসন।

বাগআঁচড়া এলাকায় যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ওপর বহু গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে ওই সড়কে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীতে বাস বন্ধ থাকলেও এখন পণ্যবাহী যানও চলতে পারছে না।

জোয়ারের তোড়ে বাঁধ ভেঙে বরগুনায় আটটি গ্রাম প্লাবিত হয়। বরগুনার প্রধান তিনটি নদীর পানি দুপুরেই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। জোয়ারের তোড়ে বাঁধ ভেঙে দুই উপজেলার আট গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা ও বরগুনা সদরের বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে।

বু্ধবার দুপুরে ভোলার চরফ্যাশনের দক্ষিণ আইচা এলাকায় গাছের ডাল ভেঙে মারা যায় সত্তুর বছর বয়সী ছিদ্দিক ফকির। এছাড়া বরিশালের আলতুমিয়ার ঘাট এলাকায় মেঘনায় ট্রলার ডুবে বোরহানউদ্দিন উপজেলার রফিকুল ইসলাম নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। সাতক্ষীরার জেলা শহরের কামালনগরে আম কুড়াতে গিয়ে গাছ চাপায় এক নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

পটুয়াখালীর শহর রক্ষা বাঁধসহ বিভিন্ন বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। কুয়াকাটায় সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া ঝড়ো বাতাস ও ভারি বর্ষণে গাছ-পালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। জেলার গলাচিপায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় গাছের ডাল ভেঙে মারা গেছে শিশু রাশেদ। আর সকালে কলাপাড়ায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রচার চালাতে গিয়ে খালে পড়ে নিখোঁজ স্বেচ্ছাসেবীর মরদেহ পাওয়া যায় ৯ ঘণ্টা পর।

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় দেয়াল চাপায় এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের স্বন্দীপে জলোচ্ছ্বাসে ভেসে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

-এ

The post বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত, প্রাণ গেছে ১৩ জনের appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/3e6u4Ew

No comments:

Post a Comment