Saturday, September 23, 2023

মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের ৩০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন

ফাতেহ ডেস্ক:

করোনার সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মাধ্যমিক শিক্ষার যে ক্ষতি হয়েছে তা পুনরুদ্ধারে ৩০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক বোর্ড। বাংলাদেশি টাকায় এ অর্থের পরিমাণ ৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকা।

ওয়াশিংটন সময় শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিশ্বব্যাংকে প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশকে এই ঋণ ক্রেডিটটি বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) দেওয়া হয়েছে। যা ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরের মেয়াদে পরিশোধ করতে হবে।

বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক জানান, বাংলাদেশ কয়েক বছর ধরে শিক্ষার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে এবং নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লিঙ্গ সমতা অর্জনকারী প্রথম কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে ছিল। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন দীর্ঘায়িত স্কুল বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার ওপর গভীরভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এবং অনেক দরিদ্র মেয়েকে স্কুল ছেড়ে যেতে বাধ্য করেছে। বিশ্বব্যাংক শেখার ফলাফল এবং শিক্ষার গুণমান উন্নত করে শেখার ক্ষতি থেকে পুনরুদ্ধার করতে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে। যাতে শিক্ষার্থীরা সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ জীবনযাপন এবং সমাজে সংগ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিয়ে স্নাতক হতে পারে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, লার্নিং অ্যাক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন অপারেশন সরকারের সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রোগ্রামকে সমর্থন করবে। শিক্ষাকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে, প্রোগ্রামটি ৬, ৪তম গ্রেডের জন্য গণিত, ইংরেজি এবং বাংলার মতো মূল বিষয়গুলোতে ফোকাস করবে, কারণ এগুলো ভবিষ্যতের শিক্ষার ভিত্তি। এটির লক্ষ্য চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গণিতে দক্ষতা বর্তমান ২৮ শতাংশ থেকে ৬৫ শতাংশে এবং বাংলায় ৬৬ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশে উন্নীত করা। ঝরে পড়ার হার কমাতে, প্রোগ্রামটি ৪ মিলিয়ন শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি পেতে সহায়তা করবে। এছাড়া, আরও প্রায় ৭ হাজার ২০০টি স্কুলে পড়ার দক্ষতা উন্নত করার জন্য প্রোগ্রাম থাকবে এবং ১৫ হাজার শিক্ষক তাদের শেখানোর দক্ষতা উন্নত করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রোগ্রামটি মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সেলিংকেও সহায়তা করবে এবং কমপক্ষে ৩০ শতাংশ লক্ষ্যযুক্ত বিদ্যালয়ে লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তা করবে।

সংস্থাটি আরও জানায়, কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন শিক্ষার ক্ষতি থেকে পুনরুদ্ধার করতে প্রোগ্রামটি নতুন অনুমোদিত পাঠ্যক্রমের ডিজিটাইজেশন এবং পর্যায়ক্রমে রোলআউটের পাশাপাশি শেখার পুনরুদ্ধারের জন্য অতিরিক্ত প্রতিকারমূলক ক্লাসগুলোকে সহায়তা করবে। এটি সরকারের মিশ্রিত শিক্ষার মাস্টারপ্ল্যানকেও সমর্থন করবে। এছাড়া, ক্লাসে এবং অনলাইন শিক্ষার সংমিশ্রণ শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগতকৃত সংস্থানগুলো অফার করবে যাতে তারা তাদের নিজস্ব গতিতে শিখতে পারে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র এডুকেশন স্পেশালিস্ট এবং প্রকল্পের দলনেতা টি.এম.আসাদুজ্জামান জানান, জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে শিশুদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রাখার জন্য, প্রোগ্রামটি উপবৃত্তি প্রদানের বাইরেও অতিরিক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। যারা বাদ পড়েছেন তাদের পুনরায় তালিকাভুক্ত করতেও সহায়তা করবে। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়, বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে স্কুলগুলো বন্ধ করতে বাধ্য হলেও মিশ্রিত শিক্ষা ট্র্যাকে শিখতে সাহায্য করবে। এই প্রোগ্রামটি জলবায়ু-স্মার্ট মানসিকতা এবং আচরণকে উত্সাহিত করার জন্য পাঠ্যক্রমের মূলধারার জলবায়ু শিক্ষাকেও যুক্ত করবে।

The post মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের ৩০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/P9kGn4T

Monday, September 18, 2023

খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ল

ফাতেহ ডেস্ক:

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে আগের দু’টি শর্তেই মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানোর বিষয়ে মত দিয়ে এ সংক্রান্ত ফাইল আইন মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, খালেদা জিয়া আগের মতোই ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। এই সময় তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এই দুটি শর্তেই দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

দুটি মামলায় সাজা হওয়ায় কারাবন্দি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বর্তমানে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত থাকায় তিনি কারামুক্তি রয়েছেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায়ের পর তাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার সাজা আরও পাঁচ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।

একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন একই আদালত।

২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়।

খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির সবশেষ মেয়াদ শেষ হবার কথা ছিলো আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর। এর আগেই তার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হয়। এর প্রেক্ষিতে অষ্টমবারের মতো খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়লো।

The post খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ল appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/qc29Y7l

ওমরার স্বপ্ন চলে যাচ্ছে নাগালের বাইরে

আব্দুল্লাহ আফফান।।

বাংলাদেশ থেকে বহু ধর্মপ্রাণ মুসল্লি হজ ও ওমরা পালন করেন। তাদের অধিকাংশই পুরো জীবন টাকা জমান মক্কা, মদিনায় একবার যাওয়ার জন্য। এই শহর দু’টির সাথে জড়িয়ে আছে ধর্মীয় ভাবাবেগ। নতুন হিজরি সাল শুরুর পর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ওমরা পালন করেছেন ২ লাখ ৩১ হাজারের বেশি মানুষ। নতুন হিজরি বর্ষ শুরুর প্রথম ৬ মাসের ওমরাকারীদের তথ্য জানাতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছে সৌদি হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে ওমরা করেছিল ৫২ হাজার ৮৪৮ জন। সে হিসেবে গত তিন বছরে ওমরাকারী বেড়েছে প্রায় কয়েকগুন।

করোনার আগে এজেন্সিভেদে ওমরার সর্বনিম্ন প্যাকেজ ছিল ৮০ হাজার টাকা। করোনা বিধিনিষেধের কারণে ওমরা পালনে ব্যয় বেড়েছিল কয়েকগুন। চলতি বছর হজ ও ওমরার খরচ কমিয়েছে সৌদি সরকার। সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় ৪১৩ সৌদি রিয়াল কমিয়েছে। গত বছর করোনার কারণে আবাসন ও পরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা বাধ্যতামূলক ছিল। যা এ বছর শিথিল হয়েছে। তবে সে তুলনায় বাংলাদেশে কমেনি ওমরা খরচ। গত বছর এজেন্সিভেদে ওমরা খরচ ছিল এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা। চলতি বছর ওমরা করতে খরচ হবে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লক্ষ ১০ হাজার পর্যন্ত।

দিন দিন মধ্যবিত্তদের আওয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে ওমরার খরচ। এবিষয়ে জানতে চাইলে ফাতেহ টোয়েন্টিফোরকে হলি টুরিজম বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর শাহাদাত হোসাইন জানিয়েছেন, হজ ও ওমরা এটি শারীরিক ও আর্থিক এবাদত। শারীরিক সুস্থতা ও আর্থিক সক্ষমদের জন্য হজ ও ওমরা। যাদের আর্থিক সক্ষমতা নেই তারা ওমরা করবে না। এটা তো ফরজ না। আর হজ ফরজ হয় আর্থিক সক্ষমতার ভিত্তিতে। তাই খরচ বাড়াকে খুব বড় সমস্যা মনে হয় না।

এবিষয়ে স্কাই হলিডেইজের প্রশাসন বিভাগের হেড সাইয়্যেদ মিনহাজ নবী জানিয়েছেন, করোনার পর ভিসার খরচ কিছুটা কমিয়েছে সৌদি আরব। তবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বিমান ভাড়া বেশি। এছাড়া ডলারের রেটও বেশি। এসব কারণে খুব বেশি কমেনি ওমরার খরচ।

ভারত, পাকিস্তানসহ এশিয়ার দেশগুলোর হজের খরচ একই। তবে আমাদের বিমান ভাড়া তুলনামূলক বেশি। এছাড়া হজের অন্যান্য খরচে কোন পার্থক্য নেই বলে দাবি করেছেন হলি টুরিজম বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর শাহাদাত হোসাইন।

শাহাদাত হোসাইন বলেন, সৌদি আরবে যাওয়া ও আসার বিমান ভাড়ায় পার্থক্য রয়েছে। যাওয়ার ভাড়া তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে। অথচ রুট এক, বিমান এক, তেল খরচও এক; তবুও খরচে পার্থক্য হবে কেন? অন্য সময়ের চেয়ে হজের সময় বিমান ভাড়া বেশি রাখা হয়। এমনটা কেন করা হয় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ভালো বলতে পারবে।

জানা যায়, গত বছর ভারতে থেকে হজ করতে খরচ হয়েছে (বাংলাদেশি টাকায়) ৪ লাখ টাকার কম। পাকিস্তানের খরচ হয়েছে (বাংলাদেশি টাকায়) ৪ লাখ ৪৭ হাজার ৬১৮ টাকা। বাংলাদেশ থেকে বেসরকারি ভাবে খরচ হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৭৪৪ টাকা।

এ বছর বিমান ভাড়া বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে শাহাদাত হোসাইন বলেন, প্রতি বছরই আমরা বিমান ভাড়া বিষয়ে কথা বলি। এবছর বিমান ভাড়া কমানো বিষয়ে বিমান প্রতিমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে হজ্জ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। চিঠির জবাব এলে এ বছর বিমানের ভাড়া কমবে কিনা সেটা বলা যাবে।

ওমরার খরচ বাড়া-কমার কারণ হিসেবে স্কাই হলিডেইজের সাইয়্যেদ মিনহাজ নবী বলেছেন, এয়ারলাইন্সগুলোর টিকেট গ্রুপ ভিত্তিক আগের থেকে নিতে পারলে খরচ কিছুটা সাশ্রয়ী হয়। সৌদি আরবে লোকাল, ইন্টারন্যশনাল ছুটির কারণে খরচ কম-বেশি হয়। বাইতুল্লাহ থেকে হোটেলের দূরত্ব, রুম ও ট্রান্সপোর্ট শেয়ার, বাসের পরিবর্তে আলাদা গাড়ি ব্যবহারে খরচ বাড়ে। এছাড়া জ্বালানি মূল্য ও ডলার মূল্য বৃদ্ধি তো আছেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ওমরা প্রত্যাশী জানান, কাবা ছোঁয়া, রাসূল সা. এর করব জিয়ারত করা সকল মুসলমানের স্বপ্ন। আগের তুলনায় এখন ওমরা করা সহজ। কিন্তু খরচের কারণে ওমরা করতে পারছে না অনেকে। ওমরার খরচ কমলে সাধারণ মানুষের জন্য সুবিধা হয়। তারা ওমরা করার সুযোগ পায়। করোনার পর পর ওমরার খরচ অনেক বেশি ছিল। এখন কিছুটা কমেছে। সরকার অনেক ক্ষেত্রে ভুর্তুকি দেয়। হজ ওমরাতেও যদি কিছুটা ভূর্তুকি দিতো, তাহলে সাধারণ মানুষের ওমরা করতে সহজ হতো।

হজ ও ওমরা সহজ করতে স্বচেষ্ট সৌদি সরকার

সৌদি সরকার হজ ও ওহরা সহজ করার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম নুসুক অ্যাপ। এর মাধ্যমে হজ ও ওমরার আবেদন করা যায়। বাংলাদেশ থেকে হজ ব্যবস্থাপনা আরও সহজ ও গতিশীল করতে ‘নুসুক’ অ্যাপ উদ্বোধন করেছে সৌদি আরব। এর ফলে বাংলাদেশিদের জন্য সৌদি আরব ভ্রমণ আরও সহজ হবে। ওমরাহ পালনে ব্যক্তিগতভাবেই আবেদন করতে পারবেন আগ্রহীরা। অ্যাপটি ইউরোপ-আমেরিকায় আগেই চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ধীরে ধীরে কমে আসবে এজেন্সি-নির্ভরতা।

The post ওমরার স্বপ্ন চলে যাচ্ছে নাগালের বাইরে appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/0UgLpEf

Saturday, September 16, 2023

হাফেজ রেজাউল করিম হত্যার বিচার কি হবে না?

মাদরাসার ছাত্র রেজাউল করিম হত্যার পর তো অনেক দিন পার হয়ে গেল। কোনো বিচার শুরু হয়েছে বলে শোনা যায়নি। কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও খবর পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যে পাঠকবৃন্দ জেনে গেছেন-‘রাজধানীর গুলিস্তানে ‘শান্তি সমাবেশ’শেষে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত রেজাউল করিম (২১) যাত্রাবাড়ীর একটি মাদরাসায় পড়তেন। কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না তিনি। রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ঢামেকের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা। এর আগে ঘটনার দিন রাতে সিআইডির একটি দল ময়নাতদন্ত করে। রোববার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

রেজাউলের ফুপু ফারিয়া যুগান্তরকে জানান, তার ভাতিজা যাত্রাবাড়ীর জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদরাসায় জালালাইন জামাতে অধ্যয়নরত ছিল। কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল না। আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যকার বিরোধ একটি নিরপরাধ ছেলের জীবন কেড়ে নিয়েছে। রেজাউল অসুস্থ ছিল। করোনার পর তার ডেঙ্গু হয়। সুস্থ হওয়ার পর জন্ডিস হয়। তাই নিয়মিত ডাক্তার দেখাত, ওষুধ খেত।

নিহতের বেয়াই রাসেল মিয়া জানান, গত বুধবার গ্রাম থেকে এসে রাজধানীর খিলগাঁও গোড়ানে তার বাসায় ওঠে রেজাউল। সেখানে অসুস্থতা অনুভব করে। বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসকের কাছে গেলে তাকে বাসায় অবস্থান করে প্রয়োজনীয় ওষুধ খেতে পরামর্শ দেওয়া হয়। পরদিন শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রেজাউল বাসা থেকে বের হয়। যাওয়ার সময় বলে যায়, মাদরাসায় গিয়ে ছুটি নিয়ে ফিরবে। শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, গুলিস্তানে এক যুবক মারা গেছে। এরপর ঢামেকে গিয়ে তিনি রেজাউলের লাশ শনাক্ত করেন।’-যুগান্তর, ৩১ জুলাই ২০২৩

একটি দেশের রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে কওমী মাদরাসার একজন ছাত্রকে হত্যা করা হল। এ নিয়ে কারও তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া শোনা গেল না। চারদিক থেকে তার মতো বা তার সহপাঠীদের গালমন্দ বা বকাঝকা শুনে দুচারটা বিবৃতি পর্যন্ত গিয়েই থেমে গেছে। অথচ এটা তো স্বতঃস্বিদ্ধ বিষয় যে, ঘটনাটা ঘটিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন। তাদের পারস্পরিক সংঘর্ষের মাঝে এই ছেলেকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এখান থেকে বহু প্রশ্ন, বহু কিছুই উত্থাপিত হয়। অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের শিরোনাম ছিল, ‘আ.লীগের সংঘর্ষ চলাকালে রেজাউলের পায়ে কোপ দিল কারা?’

ক্ষমতাসীনদের অতীত তো এদেশের দ্বীনদার সমাজ ভুলবে না। তারা অতীতে ধর্মীয় লোকদের সাথে, মাদরাসার মানুষদের সাথে ১৯৯৬ থেকে ২০০১, ২০১৩, ২০১৪, ২০২১ পিরিয়ডে কী আচরণ করে এসেছে- তা কারও অজানা নয়। মাঝে মাঝে মনে হয়, তারা এসব থেকে কিছু না কিছু শিক্ষা নেয়। কিছু পরিবর্তন দেখায়। ভাব দেখায়, আমরা ধর্মীয় লোকজন, মাদরাসা-মসজিদের বিরোধী নই। কিন্তু মাঝে মাঝেই এমন ঘটনা ঘটে, যা থেকে প্রতীয়মান হয়- তারা যেই সেই রয়ে গিয়েছে। এখানে তো তাদের বিরুদ্ধে কেউ আন্দোলন করতে যায়নি। কেউ কিছু বলতেও যায়নি। এ ছেলে কোনো রাজনীতি করে- এমন কোনো তথ্য-প্রমাণ, পরিচয় এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

গুলিস্তান এলাকা কি ক্ষমতাসীন দলকে ভাড়া দিয়ে দেওয়া হয়েছে? ওখানকার ফুটপাথ, রাস্তা দিয়ে কেউ হেঁটে গেলে ওই দলের লোকজন মেরে ফেলবে? অনেকেই মনে করেন, এ ঘটনা ইচ্ছাকৃত ঘটানো হয়েছে। হয়তো তাদের দলের ধর্মবিদ্বেষী লোকজন এ ছেলেকে দাড়ি-টুপিওয়ালা দেখে প্রতিপক্ষের ধার্মিক সদস্য মনে করে ইচ্ছে করেই মেরে ফেলেছে। যারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? আমরা কি প্রতিকার করতে পেরেছি? খুব স্বাভাবিকভাবেই মাদরাসার ছাত্ররা দলীয় রাজনীতি করে না, ছাত্ররা তাদের শিক্ষকদের দিকনির্দেশনার বাইরে গিয়ে আন্দোলনও করে না। এ অবস্থার সুযোগ নিয়ে মাদরাসার দায়িত্বশীল বোর্ডগুলোর একটি-দুটি বিবৃতি দিয়েই কি দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়? এ ঘটনায় বোঝাপড়া করে দোষীদের গ্রেফতার করিয়ে বিচারের আওতায় আনার দায়িত্ব কি নেই কারও? কিন্তু এসব দায় গ্রহণ ও দায়িত্ব পালনের কোনো কিছুই দেখা যাচ্ছে না। একজন মাদরাসার শিক্ষার্থীকে যারা এভাবে শেষ করে দিয়েছে তারা কি এমনি এমনিই পার পেয়ে যাবে? আল্লাহর বিচার তো আছেই। এধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে তারা যদি পার পেতে থাকে তাহলে তারা অন্য সময়ও এমন খুন-খারাবি করতে দ্বিধা করবে না।

আলকাউসারের অনেক পাঠকই এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আমরা মনে করি, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে সুষ্ঠু বিচারের মুখোমুখি করা দরকার। সরকার ব্যবস্থা না নিলে কওমী মাদরাসার বোর্ডগুলোর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিষয়টি উত্থাপন করে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সোচ্চার হতে পারেন।

বিজ্ঞ কিছু মহল থেকে আরেকটি বিষয়েও দীর্ঘদিন থেকে চাপা অসন্তোষ লক্ষ করা যাচ্ছে। তা হচ্ছে, কওমী মাদরাসার একটি বড় বোর্ডের ফেইসবুক-প্রীতি। তারা নাকি কোনো নোটিশ প্রদান করলে তা ফেইসবুকে করেন। বিবৃতি দেন ফেইসবুকে মহাপরিচালকের স্বাক্ষরে। এটি কেমন কথা! তাহলে কি তারা ধরে নিচ্ছেন যে, তাদের বোর্ড-সংশ্লিষ্ট সব ছাত্র-শিক্ষক বা মাদরাসাওয়ালারা অবশ্যই ফেইসবুক ব্যবহার করেন। ফেইসবুকে বিবৃতি দিতে হবে কেন? সেটা কি মাদরাসা-সংশ্লিষ্টদের ফেইসবুকের প্রতি আকর্ষণের একটি নীরব দাওয়াত হয়ে যাচ্ছে না? যদি অনলাইনেই দিতে হয়, তাহলে সেটা তো নিজস্ব ওয়েবসাইটেও প্রচার করা যেতে পারে। মাদরাসার ছাত্র রেজাউল করিম রাহ. হত্যার পর চারদিক থেকে শোকাহত লোকজনের প্রতিবাদী আওয়াজ ওঠার পর নাকি ফেইসবুকে একটি বিবৃতি এসেছে। কেউ কেউ বলছেন, তাতে নাকি অনেক ব্যক্তিত্বের নামের মাঝে মরহুম রেজাউল করিমের নাম বের করে নেয়া কষ্টকর ছিল। আবার ভিন্ন বিবৃতিতে নিহত ছাত্রটির পরিবারকে টাকা প্রদানের কথাও প্রচার করা হয়েছে। তাতেও দুঃখ লেগেছে অনেকের মনে। এ প্রচারণার কী অর্থ? এমন তো নয় যে আপনারা এক কোটি টাকা দিয়ে দিয়েছেন। ৫০ লক্ষ টাকা দিয়ে দিয়েছেন। এক লাখ টাকা দিয়ে আপনি প্রচার করছেন পুরো দুনিয়া। কোনো অনুদান দিলে তা তো ছেলেটির পরিবারকে নীরবেই দেওয়া যেত। এ ধরনের প্রচারণা কি শোকাহত পরিবারটির জন্য বিব্রতকর ও আরও কষ্টকর নয়?

এখানে আমরা তালেবে ইলমদের প্রতি একটি আহ্বান রাখতে চাই। সেটা হল, এ মুহূর্তে রাজনীতির মাঠ চারদিকে উত্তপ্ত। এসময়ে তালেবে ইলমদের চলা-ফেরায় খুব সতর্ক থাকা দরকার। বিনা প্রয়োজনে মাদরাসা থেকে বের না হওয়া। যে এলাকায় গণ্ডগোল কিংবা দলীয় কর্মসূচি চলছে, সেসব এলাকা থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকা। এসব বিষয়ে সতর্কতা কাম্য। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও তালেবে ইলম সবারই সতর্ক থাকা দরকার। বুঝতে হবে, এখনকার রাজনীতি মানুষকে মানুষ মনে করে না। নিজেদের ক্ষমতাটাকেই বড় বিষয় হিসেবে ধরে নিয়েছে। তাই নিজেদের সতর্কতা অবলম্বন অতীব জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মাদরাসা-সংশ্লিষ্ট সকল স্তরের উলামা-তলাবা-অভিভাবকদেরকে হেফাজত করুন। অন্যদের অনিষ্ট থেকে, ষড়যন্ত্র থেকে এবং অন্যদের আধিপত্যের মুখে পড়া থেকে রক্ষা করুন।

(আল-কাউসার থেকে নেয়া)

The post হাফেজ রেজাউল করিম হত্যার বিচার কি হবে না? appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/crtmC7N