Saturday, January 28, 2023

মুফতি শহিদুল ইসলাম: মানবসেবায় উৎসর্গ যার জীবন

মুনশী নাঈম:

মানব সেবামূলক সংগঠন আল মারকাজুল ইসলামীর (এএমআই) চেয়ারম্যান, নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুফতি শহিদুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জে তার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসা আবু হুরায়রায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ডায়াবেটিস, প্রেশারসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ চত্বরে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন ফিলিস্তিনের বায়তুল মুকাদ্দাসের ইমাম শায়খ আলী ওমর আল আব্বাসি। পরে কেরানীগঞ্জে তার প্রতিষ্ঠিত জামিআতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার পাশে কবর দেওয়া হয়।

হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেছেন, আল মারকাজুল ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সমাজসেবক মুফতি শহীদুল ইসলামের ইন্তেকালে দেশ একজন বিশিষ্ট আলেম সমাজসেবককে হারিয়েছে। তার মৃত্যুতে দেশ ও ইসলামি অঙ্গনের যে ক্ষতি হয়েছে, তা অপূরণীয়। মারকাজুল ইসলামীর মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সেবায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি তার সেবামূলক কাজের জন্য আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

এই মানুষটি তার ভূমিকা, সেবা, অবদানে এদেশে একটি শিরোনামে পরিণত হয়েছিলেন। সেবক-আলেম হিসেবে শত্রু-মিত্র দেশের সব পক্ষের মানুষ তাকে চিনতো। বাংলাদেশের আলেম-সমাজের জন্য প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সেবার অঙ্গনের দরজা দৃশ্যমানভাবে প্রথমে খুলে দিয়েছেন তিনি। এই লেখায় তার সংক্ষিপ্ত জীবন-বিবরণী তুলে ধরছি।

জন্ম, পড়াশোনা, পরিবার

মুফতি শহীদুল ইসলাম হাফি: ১৫ মার্চ ১৯৬০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ফরিদপুরের ঝিলটুলী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। পৈত্রিক নিবাস নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায়। তার পিতা শামসুল হক সরদার।

গোপালগঞ্জের গহরডাঙ্গা মাদ্রাসায় তিনি তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন। গওহারডাঙ্গায় হিফজ শেষ করার পর এসে ভর্তি হন জামিয়া মুহাম্মদিয়া যাত্রাবাড়ীতে। সেখানে ডক্টর আসাদুল্লাহ গালিবের কাছে ‘ফিকহে মুহাম্মদী’ অধ্যয়ন করেন। পরবর্তীতে লালবাগ মাদরাসা এবং কামরাঙ্গীরচর মাদরাসায় পড়ে পাকিস্তানের করাচীর বিন্নুরী টাউন মাদ্রাসায় ভর্তি হোন। সেখান থেকে ১৯৮৮ সালে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) শেষ করে ইফতাও (ইসলামি আইনশাস্ত্রের পাণ্ডিত্ত্ব) সম্পন্ন করেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই পুত্র ও চার কন্যার জনক ছিলেন। পুত্র দুইজন হলেন: মুফতি তালহা ইসলাম এবং মাওলানা হামজা ইসলাম। হামজা ইসলাম মারকাজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

আল-মারকাজুল ইসলামী প্রতিষ্ঠা

তার কর্মজীবনের বড় একটি অধ্যায়জুড়ে রয়েছে সেবাসংস্থা আল-মারকাজুল ইসলামী। বেসরকারি এই সেবা সংস্থা দেশ-বিদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের সাহায্য-সহযোগিতায় বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বিন্নুরী টাউন মাদ্রাসায় অধ্যয়নকালে ১৯৮৮ সালে তিনি আল মারকাজুল ইসলামী প্রতিষ্ঠা করেন। বিভিন্ন দেশের বন্ধুদের পরামর্শে এই সংস্থার প্রথম নামকরণ করেন ‘মুসলিম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’। পরে বিন্নুরী টাউনের এক উস্তাযের পরামর্শে ‘আল মারকাযুল ইসলামী বাংলাদেশ’ নাম রাখেন। পাকিস্তানে এ সংস্থার অর্থ জমা রাখতেন শায়খ আব্দুল মালেক হাফি.-এর কাছে।

দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তির অর্থ-সহযোগিতা বিশেষ করে সৌদি আরব, কাতার, দুবাই, আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায় মারকাযের বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। নব্বই দশকের শুরুতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মারকাজের কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাবর রোড ও শ্যামলীতে সংস্থাটির নিজস্ব সম্পত্তি রয়েছে। বর্তমানে কেরানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজনগর ইউনিয়নে ১৬০ বিঘা জমির ওপর আল মারকাযুল ইসলামীর বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

এ সংস্থার অধীনে বেশ কয়েকটি কওমি ও মহিলা মাদ্রাসা পরিচালিত হয়। এ ছাড়া মারকাজুল ইসলামী অসংখ্য মসজিদ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নলকূপ স্থাপন করে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করেছে, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ফ্রি চিকিৎসার পাশাপাশি ঠোঁট কাটা, তালু কাটা রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা করেছে। মারকাজুল ইসলামীর অধীনে মানবসেবামূলক নানা কাজ চালু রয়েছে। হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, লাশ বহন, লাশের গোসল করানো থেকে শুরু করে বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের সংক্রমণের সময় মৃতদের দাফন ও সৎকার কার্যক্রম নিয়ে সর্বমহলের ব্যাপক প্রশংসা পায় সংস্থাটি। ১৯৮৮ সালের বন্যার সময় বাংলাদেশের প্রায় সব মাদ্রাসায় চাউল বিতরণ করেছিলেন তিনি।

তিনি মানবসেবার উদ্দেশ্যে বহু এম্বুলেন্স ক্রয় করেছেন। রাজধানী ঢাকায় যে কোনো শীর্ষ আলেমের ইন্তিকাল হলেই আল মারকাযুল ইসলামীর এম্বুলেন্স এসে হাজির হয়ে যায়। এম্বুলেন্সের প্রথম টাকা দিয়েছিলেন তার মা। বিভিন্ন ঘরোয়া আলোচনায় তিনি এ কথা জানিয়েছেন।

শিক্ষা বিস্তারে অবদান

বাংলাদেশে আরবী ভাষা-সাহিত্যের জোয়ার তৈরীর পেছনের তার অবদান খাটো করে দেখা যাবে না। তিনি মারকাযুল ইসলামীর অধীনে আরবী সাহিত্য বিভাগ খুলে এর দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন শায়খ শহীদুল্লাহ ফজলুল বারী রহ: এর হাতে। তিনি তার নিপুণ কারিশমায় দেশে আরবি চর্চার জোয়ার তৈরী করেন।

মুফতী শহীদুল ইসলাম আল মারকাযুল ইসলামীর পক্ষ থেকে প্রতি মাসে আরবী ম্যাগাজিন প্রকাশ করতেন। বিভিন্ন ইসলামী রাষ্ট্র থেকে আরবী ভাষার বিভিন্ন কিতাব এনে বাংলাদেশের উলামা-তালাবার মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করতেন। তার ভাষ্যমতে, বিভিন্ন দেশ থেকে আগত কিতাব অনেক সময় মুফতী আবদুর রহমান বসুন্ধরা রহ: এর পরিচালনাধীন আল মারকাযুল ইসলামীতে চলে যেতো।

তিনি দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিদের শিক্ষা-দীক্ষার লক্ষ্যে আফ্রিকা থেকে শিক্ষক এনে অন্ধ বিভাগ চালু করেন। যার মাধ্যমে শত শত অন্ধ মানুষ কুরআন এবং দ্বীনী জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে।

রাজনৈতিক জীবন

তিনি ইসলামী ঐক্যজোট করতেন এবং মজলিসে শূরার সদস্য ছিলেন। পরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস (২০০১-২০০৯) করেছেন। মজলিসের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির ছিলেন। ২০১১ সালের ২১ জুলাই দলটির নায়েবে আমিরের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ গণসেবা আন্দোলন নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। তিনি এ দলের চেয়ারম্যান।

চারদলীয় ঐক্যজোটের অধীনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের পক্ষ থেকে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-২ আসনে সাংসদ পদে নির্বাচনে করেন। এ নির্বাচনে শেখ হাসিনা ৪ হাজার ২৩৩ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। পরে শেখ হাসিনা আসনটি ছেড়ে দিলে ২০০২ সালের উপনির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। ২০১৮ সালে নড়াইল-২ আসনে একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। কিন্তু তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি।

মুফতি আজিজুল হক কাসেমী স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘মুফতি শহিদুল ইসলাম শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ.-এর অত্যন্ত প্রিয়ভাজন ছিলেন। চারদলীয় ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে ইসলামী ঐক্যজোটকে একটি মন্ত্রীত্বের পদ দিতে চাইলে শায়খুল হাদীস রহ. সে পদটি মুফতী শহীদুল ইসলামকে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। মুফতী সাহেব সে মন্ত্রীত্বের পদ নিতে রাজি হননি। যখন শাইখুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. ঢাকা পল্টনের মুক্তাঙ্গনে স্বীকৃতির জন্য ডাক দিয়েছিলেন, তখন তিনি শাইখুল হাদীস রহ.-এর ডান হাত ছিলেন। তখনকার সময়ে উলামা-তালাবার খানার ব্যবস্থা তিনিই করতেন। তিনি আমাদেরকে বলেছেন, সে আন্দোলনে প্রথম দিনের প্রথম খাবার ব্যবস্থা করেছিল আমার এক হিন্দু ভক্ত।’

শেষ বিদায়

২৪ জানুয়ারি এএমআই সিটি কেরাণীগঞ্জে অবস্থিত জামিআতুল উলূম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার ২০২৩-এর বার্ষিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এএমআই -এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মুফতী শহিদুল ইসলাম । মোট ৪টি অধিবেশনে মোট ৯টি বিষয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। চতুর্থ অধিবেশনে পুরস্কার বিতরণ ও গুণীজনদের মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় এ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে তিনি ছাত্রদের বলেন, ‘তোমারা আমার জন্য দোয়া করবে, আমি শহিদুল ইসলাম যেন শহিদ হয়ে মারা যাই।’

তিনি চলে গেলেন জুমার পবিত্র এক রাতে। রেখে গেলেন তার কর্মবহুল জীবন। যে মানুষের সেবায় জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছেন এই আলেম, সে মানুষের দোয়ায় তার কবর হয়ে উঠুক জান্নাত। তার কবরে ঝরে পড়ুক রহমতের শবনম।

The post মুফতি শহিদুল ইসলাম: মানবসেবায় উৎসর্গ যার জীবন appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/gbcsA1y

Saturday, January 21, 2023

একুশে বইমেলায় ইসলামি প্রকাশনীগুলো কেন স্টল বরাদ্দ পায় না?

রাকিবুল হাসান নাঈম:

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের স্মৃতিজড়িত ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন ২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলা শুরু করতে যাচ্ছে বাংলা একাডেমি। করোনা অতিমারির কারণে গত দুটি বইমেলা ঐতিহ্যবাহী রীতি অনুসারে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন শুরু হতে পারেনি। এবার মেলার মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘পড় বই গড় দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।

বইমেলার স্টল বরাদ্দের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছিল ৬ ডিসেম্বর, যা শেষ হয়েছে ২০ ডিসেম্বর। ৪৫৩টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। স্টল নং নির্ধারিত না হলেও কে কতটি স্টল পাবে, তা বরাদ্দ দেওয়া দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে ইসলামি প্রকাশনীর সংখ্যা নিতান্তই হাতেগোণা। তালিকা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ইসলামি প্রকাশনীগুলোর মধ্যে স্টল বরাদ্দ পেয়েছে রাহনুমা প্রকাশনী, হুদহুদ প্রকাশন, সন্দ্বীপন প্রকাশন, বইঘর, বিশ্বকল্যান পাবলিকেশন্স এবং বাড কম্প্রিন্ট এন্ড পাবলিকেশন্স। তারা গত বছরও স্টল বরাদ্দ পেয়েছিল। নতুন কোনো ইসলামি প্রকাশনী এবার বরাদ্দ পায়নি এখন পর্যন্ত।

কেন বাতিল জানা যায় না কারণ

প্রতি বছরই অনেক ইসলামি প্রকাশনী স্টল বরাদ্দ চেয়ে আবেদন জানায়। কিন্তু স্টল বরাদ্দ পায় না। এমনকি কী কারণে স্টল বরাদ্দ পেলো না, তার কারণও জানতে পারে না প্রকাশনী কর্তৃপক্ষ। কারণ না জেনেই প্রতি বছর অবেদন করতে হচ্ছে তাদের। এদের মধ্যে অন্যতম একটি প্রকাশনী হলো গার্ডিয়ান পাবিলিকেশন্স।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় গার্ডিয়ান পাবিলিকেশন্সের জিএম নাজমুল হুদার সঙ্গে। তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরেই আমরা স্টল বরাদ্দের আবেদন করে আসছি। ইতোমধ্যে আমাদের বইয়ের সংখ্যা ১৩০। এরমধ্যে চলতি বছরই প্রকাশ করেছি ৩৩টি বই। কিন্তু অন্যবারের মতো এবারও আমরা স্টল বরাদ্দ পাইনি।’

কেন বারবার রিজেক্ট হচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের জানামতে আমরা সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসহই আবেদন করেছি। কিন্তু কেন বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে না, তা জানতে পারিনি। জানার কোনো মাধ্যমও নেই। বাংলা একেডেমি কাকে কেন রিজক্টে করা হচ্ছে, তার কোনো ব্যাখ্যা দেয় না। এই ব্যাখ্যা না জানলেও প্রতিবছর আবেদন করে যাচ্ছি। সামনেও আবেদন করে যাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে এটা নিয়ে আমরা তেমন চিন্তিত নই। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, আমরা যদি ভালো কন্টেন্ট দেই, তাহলে মানুষ পড়বে। সারা বছরই আমাদের বই বিক্রি হয়। এতটুকু সত্য, একুশে বইমেলায় স্টল পেলে আমাদের আরও প্রচার-প্রসার হতো। তবে সেটা যেহেতু হচ্ছে না, কেন হচ্ছে না সেটাও যেহেতু জানতে পারছি না, তাই বিষয়টি নিয়ে অতটা চিন্তিত নই।’

কেন পাচ্ছে না স্টল?

গত কয়েক বছর ধরেই একুশে বইমেলায় স্টল পেয়ে থাকে বিশ্বকল্যান পাবলিকেশন্স। এর কর্ণধার মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। তার কাছে জানতে চাই, অনেকে বলে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ ইসলামি প্রকাশকদের স্টল দেয় না। অথচ আপনি সবসময় মেলায় স্টল পাচ্ছেন। এর পেছনে সবচে বড় ভূমিকা কোন জিনিসের? তিনি ফাতেহকে বলেন, ‘আমরা নিজেদের যোগ্যতাবলে স্টল বরাদ্দ পাই, কারও দয়ায় পাই না। আমাদের কন্টেন্ট দেখেন, বুঝতে পারবেন। আমরা সমাজের মূল স্রোতের সাথে মেশার চেষ্টা করি। দেশের ও দশের কথা বলি। বাংলায় কথা বলি। ইসলামি প্রকাশনীগুলো বাংলা একাডেমিতে যায়ই না। বই মেলায় স্টল পাওয়ার জন্য তারা আবেদনই করে না। তারা মিথ্যাচার করছে যে, বাংলা একাডেমি ইসলামি প্রকাশনাগুলোকে স্টল দেয় না। বাংলা একাডেমির ডিজিসহ আরো উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আমি নিজে কথা বলেছি, তাদেরকে আমার অনেক ধর্মপরায়ণ মনে হয়েছে। গত বছর পর্যন্ত বাংলা একাডেমির সচিব ও বই মেলার দায়িত্বে ছিলেন জালাল আহমেদ। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন। এ বছর তিনি রিটায়ার্ড হয়েছেন। ‘

অনেকে আবেদন করে। তবুও স্টল পায় না। কেন পায় না? মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘একটু খতিয়ে দেখুন, তাদের কোনো ট্রেড লাইসেন্সই হয়তো নেই। তারা সরকারকে ঠিক মতো ট্যাক্সও দেয় না। বইতে হাজার হাজার বানান ভুল এবং মনমতো অনুবাদ প্রকাশ করেন তারা। লেখকের সাথে ঝামেলা তো বেধেই থাকে। এমনকি প্রকাশনাগত কোনো আইনও তারা মানেন না। বাংলা ভাষা বাদ দিয়ে উর্দূ নাম দিয়ে যারা বই প্রকাশ করেন, বাংলা একাডেমি কেন তাদের স্টলের জায়গা দেবে! তাদেরকে যে এখনও এই ব্যবসা করতে দিচ্ছে এটাই তো কপাল। বই মেলাতে ইসলামি প্রকাশনীগুলো স্টল না পাওয়ার পিছনে দায়ী তারাই। এর বাহিরে আর আমি কিছুই মনে করি না।’

এবার স্টল পেয়েছে সন্দ্বীপন প্রকাশন। যারা স্টল পাচ্ছে না কেন পাচ্ছে না জানতে চাইলে এর কর্ণধার রুকনুদ্দিন ফাতেহকে বলেন, ‘আমাদের প্রকাশকরা প্রফেশনাল না। অনেকে আবেদন করে ঠিক। কিন্তু দেখা যায়, তাদের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করা নেই। সরকারের টেক্স পরিশোধ করা নেই ঠিকমতো। ফলে আবেদন একাডেমি গ্রহণই করে না।’

আবেদনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কেউ কেউ

এতবছর আবেদন করেনি। তবে সামনে বছর বইমেলায় স্টল বরাদ্দের জন্য আবেদন করবে মুহাম্মদ পাবলিকেশন। এর কর্ণধার মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ খান ফাতেহকে বলেন, ‘বইমেলায় স্টল বরাদ্দের আবেদন করার জন্য সমস্ত ডকুমেন্টস আমাদের আছে। তবুও আবেদন করিনি।’ কেন করেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দৃষ্টিতে শর্ত পূর্ণ হলেই হবে না, একাডেমি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিতেও সেটা পূর্ণ লাগতে হবে। তাদের দৃষ্টিতে পূর্ণ না হলে হবে না।’ একডেমিক শর্তের বাইরে ‘কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি’ জিনিসটা কী খোলাসা করেননি তিনি।

তবে বিষয়টি তিনি খোলাসা না করলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকাশক দাবি করেছেন, ‘স্ট্রং লবিং ছাড়া একুশে বইমেলায় স্টল বরাদ্দ পাওয়া যায় না। দেখা যাচ্ছে, সব শর্ত প্রকাশনী পূর্ণ করেছে, কিন্তু লবিং না থাকার কারণে প্রকাশনী স্টল বরাদ্দ পাচ্ছে না।’

এ প্রসঙ্গে কথা হয় একাডেমির পরিচালক (প্রশাসন) ও মেলা কমিটির সদস্যসচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলামের সঙ্গে। ইসলামি প্রকাশনীগুলো একাডেমির মেলায় কেন বরাদ্দ পায় না জানতে চাইলে ফাতেহকে তিনি বলেন, ‘স্টল বরাদ্দ পায় না ভুল কথা। বরাদ্দ পায় তারাই, যারা শর্ত মেনে আবেদন করে। শর্ত পূরণ না করলে আবেদন গ্রহণ করা হয় না। এছাড়া বাংলা একাডেমি তাদেরকে স্টল না দেয়ার অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে না। ইসলামিক-ননইসলামিক ধরনের বৈষম্য বাংলা একাডেমি সৃষ্টি করে না, ধর্মভিত্তিক বিভাজন হিসেবেও বাংলা একাডেমি কাউকে স্টল দেয় না। বইয়ের গুণগত মান, ৫ বছরে কমপক্ষে নিজস্ব ৫০ টা বই এবং যে বছরে আবেদন করছে সে বছরে ২৫টা বই ছাপছে কি না তা দেখে। এ বিষয়গুলো তো আমরা দেখি না, বইমেলার জন্য আমাদের কমিটি আছে। সে কমিটিতে পুস্তক প্রকাশনা সমিতির সাধারণ সম্পাদক থাকে, প্রতিনিধি থাকে। সকলের মূল্যায়ন বিবেচনায় যে সমস্ত প্রকাশনাগুলোর নাম আসে তাদের স্টল দেয়া হয়।’

এতটুকু বলেই কথা সমাপ্ত করেন মেলা কমিটির সদস্যসচিব। এ প্রসঙ্গে আরও কথা বলার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় মেলা কমিটির সদস্য সাহেদ মন্তাজের সঙ্গে। কিন্তু তিনি জানান, বইমেলা নিয়ে তিনি সঠিক তথ্য দিতে পারবেন না। যা বলার সদস্যসচিবই বলবেন। আর তিনি যদি বলে থাকেন কিছু, তার বাইরে আমার কোনো কথা নেই।

এবারের মেলাও হবে দুটি অংশে। বাংলা একাডেমির মাঠে থাকবে সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার স্টল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ থাকবে প্রকাশকদের জন্য। উদ্যানের প্রায় ছয় লাখ বর্গফুট এলাকা নিয়ে হবে মেলার পরিসর। প্রকাশনার সব স্টল থাকবে স্বাধীনতাস্তম্ভের সামনে থেকে উদ্যানের পশ্চিম অংশে। শিশুদের বইয়ের কর্নার থাকবে মুক্তমঞ্চের কাছে। এই অংশে এবার অন্য কোনো স্টল থাকবে না। ফলে যারা শুধু বই কিনতে চান, তাদের আর পূর্ব–পশ্চিম দুই প্রান্ত ঘুরতে হবে না। পূর্ব প্রান্ত অর্থাৎ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের পাশের অংশে থাকবে খাবারের দোকান, মোড়ক উন্মোচন, লেখক বলছি মঞ্চ, নামাজের স্থান, শৌচাগার ও মেলার সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর স্থাপনা। এবার মেলার ভেতরে ক্রেতাদের বসার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকবে। গাড়ি পার্কিং থাকবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রান্তের প্রবেশপথের পাশে। এ ছাড়া এবার ক্রেতাদের সুবিধার্থে প্রবেশপথের সামনে বড় আকারের দুটি ডিজিটাল বোর্ডে মেলার দিকনির্দেশনা থাকবে। উপরন্তু প্রতি সারির সামনে স্টলের নম্বর ও প্রকাশকদের পরিচিতিসহ একটি করে ডিজিটাল বোর্ড বসানো হবে। এতে পছন্দের প্রকাশকদের স্টল খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।

The post একুশে বইমেলায় ইসলামি প্রকাশনীগুলো কেন স্টল বরাদ্দ পায় না? appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/OtP2lxF

Tuesday, January 17, 2023

অন্যদেশের নয়, শুধু সৌদির হজযাত্রীদের খরচ কমবে ৩০ শতাংশ: হাব

ফাতেহ ডেস্ক:

চলতি বছর হজে সব দেশের জন্য নয়, শুধু সৌদি আরবের নিজস্ব (ডোমেস্টিক) হজযাত্রীদের খরচ ৩০ শতাংশ কমবে বলে জানিয়েছে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।

চলতি বছর থেকে সারাবিশ্বের মুসল্লিদের জন্য হজ প্যাকেজের মূল্য কমালো সৌদি আরব সরকার। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে হজের খরচ ৩০ শতাংশ কমানো হয়েছে। দেশটির হজ ও উমরাহ মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব ড. আমর বিন রেদা আল মাদ্দাহ রোববার (১৫ জানুয়ারি) এ তথ্য জানান বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি স্পষ্ট করলো হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হাব।

এতে বলা হয়, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর পরিবেশন করা হচ্ছে যে, আগামী ২০২৩ সালের হজযাত্রীদের হজব্রত পালনের খরচ ৩০ শতাংশ কমিয়েছে সৌদি সরকার। প্রকৃতপক্ষে ৩০ শতাংশ খরচ কমানোর এ খবরটি শুধু সৌদি আরবের ডোমেস্টিক হজযাত্রীদের জন্য প্রযোজ্য। বাংলাদেশের কিংবা অন্যান্য দেশের হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়।

হজের মতো একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে যাতে কোনোরূপ বিভ্রান্তি তৈরি না হয়, সে কারণে সংশ্লিষ্ট সবার অবগতির জন্য বিষয়টি স্পষ্টিকরণ করা হলো বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানায় হাব।

চলতি বছর হজ পালনে গত ৯ জানুয়ারি সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক হজচুক্তি করেছে বাংলাদেশ। গত ১৫ জানুয়ারি ধর্মবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান সাংবাদিকদের জানান, সম্পাদিত হজচুক্তি অনুযায়ী করোনা উত্তর পরিস্থিতিতে এ বছর বাংলাদেশের কোটার পূর্ণ সংখ্যক হজযাত্রী হজে যেতে পারবেন। এ বছর সর্বমোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী বাংলাদেশ থেকে হজে গমন করবেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন পবিত্র হজ পালন করবেন।

এ বছর বয়সের সর্বোচ্চ সীমার শর্ত তুলে দেওয়া হয়েছে অর্থাৎ ৬৫ বছরের বেশি বয়সী হজযাত্রীরা হজে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।

The post অন্যদেশের নয়, শুধু সৌদির হজযাত্রীদের খরচ কমবে ৩০ শতাংশ: হাব appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/ldh469m

Wednesday, January 11, 2023

টঙ্গীর তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল

ফাতেহ ডেস্ক:

করোনার কারণে গত দুই বছর বিশ্ব ইজতেমা হয়নি। এবার ২০২৩ সালে এসে হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। ১৩ জানুয়ারি, শুক্রবার ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হবে। এরই মধ্যে টঙ্গীর তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে মুসল্লিরা আসছেন বিশ্ব ইজতেমা মাঠে। বিদেশিরাও এসেছেন। শীত উপেক্ষা করে চটের ছাউনির নিচে অবস্থান নিয়েছেন তারা।

এবার ইজতেমার মাঠকে ৯১টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা তাদের নিজ নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। ১৬০ একর খোলা ময়দানে বাঁশের খুঁটির ওপর পাটের চট দিয়ে টানানো হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। তবে বিদেশি মেহমানদের জন্য টিন দিয়ে করা হয়েছে আবাসস্থল।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) বিকেল পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানে ২৫টি দেশের প্রায় দেড় হাজার বিদেশি মেহমান উপস্থিত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ।

এদিকে টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তারা মুসল্লিদের নিরাপত্তায় সচেষ্ট রয়েছেন। এছাড়া সাধারণ মানুষের ইজতেমা ময়দানে প্রবেশের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়েছে ম্যাপ। গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ। কোন রাস্তা কখন খোলা বা বন্ধ থাকবে সে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। ইজতেমার নিরাপত্তার জন্য ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সাদা পোশাক ও পোশাকে থাকবে পুলিশ।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ১৪টি কন্ট্রোল রুম করেছে। র‌্যাবের কন্ট্রোল রুম থাকবে। এছাড়া ডিএমপি তার এলাকায় কন্ট্রোল রুম খুলবে। এসবি, এটিও, সিআইডি, নৌপুলিশ, অবজারভেশন টিম থাকবে, র‌্যাবের হেলিকপ্টার টহলে থাকবে। ডগ স্কোয়াড টিম, মোবাইল পেট্রোল টিম, বোম ডিসপোজাল টিম থাকবে।

এদিকে ইজতেমায় আসা-যাওয়ার জন্য পাঁচ জোড়া বিশেষ ট্রেন চালু করেছে রেলওয়ে। অন্যদিকে গাজীপুরের স্বাস্থ্য বিভাগের সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত। এছাড়া বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা এবং ওষুধ প্রদান করবে শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান।

The post টঙ্গীর তুরাগ তীরে মুসল্লিদের ঢল appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/xFNGVR7

Sunday, January 8, 2023

রিজার্ভ নামলো ৩২ বিলিয়নের ঘরে

ফাতেহ ডেস্ক:

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত (রিজার্ভ) আরও কমেছে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১১২ কোটি ডলার পরিশোধের পর ৩২ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমেছে রিজার্ভ। রোববার (৮ জানুয়ারি) দিন শেষে রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ৩২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ২৫৭ কোটি মার্কিন ডলার।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর মানদণ্ড অনুযায়ী বর্তমান রিজার্ভ থেকে আরও ৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার বাদ যাবে। এতে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ দাঁড়াবে ২৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে। আইএমএফ’র মানদণ্ড অনুসারে, দেশের মজুতকৃত রিজার্ভ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ঋণ এবং রিজার্ভ থেকে দেশীয় প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যয় বাদ যাবে। তবে সরকার এখন আইএমএফ এবং নিজস্ব অর্থাৎ দুই ধরনের হিসাবই রাখছে।

অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে আমদানি দায় কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন আমদানিতে বাণিজ্যিক ঋণপত্র (এলসি) কমলেও আগের দায় পরিশোধে কিছুটা চাপের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ কমেনি। গত নভেম্বর মাস পর্যন্ত পাঁচ মাসে আমদানি দায় পরিশোধ বেড়েছে ৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার। আর একই সময়ে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে।

আমদানি দায় পরিশোধে গত বছর রিজার্ভ থেকে ১২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসবের প্রভাবে কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।

২০২১ সালের আগস্টে প্রথমবারের মতো দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। আর ২০১৭ সালের মাঝামাঝি ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছিল রিজার্ভ। করোনার প্রভাব আর রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির কারণে রিজার্ভ কমতে থাকে। সবশেষ রিজার্ভ ৩৩ থেকে ৩৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ওঠানামার মধ্যে ছিল।

অন্যদিকে রিজার্ভের পতন ঠেকাতে আইএমএফ’র তহবিল থেকে সাড়ে ৪ বিরিয়ন ডলার ঋণ নেওয়ার আলোচনাও চূড়ান্ত পর্যায়ে। তাছাড়া দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে সরকার বিশ্বব্যাংক, জাইকাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে।

আকু হলো একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যেকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। দায় পরিশোধের মতো রিজার্ভ না থাকায় গত অক্টোবরে আকু থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করেছে শ্রীলঙ্কা।

The post রিজার্ভ নামলো ৩২ বিলিয়নের ঘরে appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/K8l53Bm

এবার হজে যাবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন

ফাতেহ ডেস্ক:

২০২৩ সালে দেশের সম্ভাব্য হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।

রোববার জাতীয় সংসদে এম আব্দুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে হজযাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ৬২৮ জন, যা ২০১৯ সালে বেড়ে হয় ১ লাখ ২৬ হাজার ৯২৩ জন; কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২২ সালে হজযাত্রীর সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৬০ হাজার ১৪৬ জনে।

তিনি বলেন, চলতি বছরে (২০২৩) হজযাত্রীর সম্ভাব্য কোটা বেড়ে হচ্ছে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন; যা ২০০৯ এর তুলনায় ১৪৮ শতাংশ বেড়েছে; এটা সরকারের সাফল্যের একটি মাইলফলক।

The post এবার হজে যাবেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/1B7Jbrj

Wednesday, January 4, 2023

আরও ১৮ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে অ্যামাজন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

অনিশ্চিত অর্থনীতির দোহাই দিয়ে ১৮ হাজার কর্মী ছাঁটাই করার কথা ঘোষণা দিয়েছে অ্যামাজন।

বুধবার প্রতিষ্ঠানটি এমন ঘোষণা দেয়।

অ্যামাজনের সিইও অ্যান্ডি জেসি বলেছেন, ‘আমরা জানি, ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের জীবন কতটা কঠিন হয়ে যায়। আমরাও বিষয়টি হালকাভাবে নিচ্ছি না।’

করোনাকালে চাহিদা সামলাতে দ্রুত প্রচুর কর্মী নিয়োগ করেছিল অ্যামাজন। এর আগে নভেম্বরে তারা ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করে। এবার করছে ১৮ হাজার।

অ্যামাজনের সিইও বলেছেন, ‘নভেম্বরের পর এবার আমরা আরো ১৮ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করছি। প্রতিটি কর্মীকে আমরা প্যাকেজ দিচ্ছি। সেপারেশন পেমেন্ট যেমন করা হবে, তেমনই তারা যাতে স্বাস্থ্যবিমার সুযোগ পান, সেটাও দেখা হবে। অন্য চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রেও তাদের সাহায্য করা হবে।’

জেসি জানিয়েছেন, ১৮ জানুয়ারি থেকে ছাঁটাই শুরু হবে। এর মধ্যে ইউরোপে কিছু ছাঁটাই হবে। তিনি জানিয়েছেন, তাদের এক সহযোগী খবরটা ফাঁস করে দেয়ায় তারা হঠাৎ এই ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছেন।

জেসি বলেছেন, ‘অতীতেও অ্যামাজন অনিশ্চিত অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছে। এবারো করবে।’

অ্যামাজন ২০২০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রচুর কর্মী নিয়োগ করেছিল। বিশ্বজুড়ে তাদের কর্মীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়। গত সেপ্টেম্বরের হিসাব অনুযায়ী, অ্যামাজনের কর্মীসংখ্যা ছিল ১৫ লাখ ৪০ হাজার। এর মধ্যে উৎসবের সময় কয়েকমাসের জন্য যে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা হয়, তা ধরা হয়নি।

সূত্র : ডয়েচে ভেলে

The post আরও ১৮ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে অ্যামাজন appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/iab1gMG

Sunday, January 1, 2023

দেশে করোনার নতুন উপধরন বিএফ.৭ শনাক্ত

ফাতেহ ডেস্ক:

দেশে করোনাভাইরাসের ওমিক্রনের নতুন উপধরন বিএফ.৭ শনাক্ত হয়েছে। চীন থেকে আসা কোয়ারেন্টাইনে থাকা একজন চীনা নাগরিকের নমুনায় করোনার এই নতুন উপধরন শনাক্ত হয়েছে।

রোববার (১ জানুয়ারি) দুপুরে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. তাহমিনা শিরীন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, তার (চীনা নাগরিক) নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে এই নতুন ধরন চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে আক্রান্ত নাগরিক সুস্থ আছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, মহাখালীর ডিএনসিসি হাসপাতালে কোয়ারেন্টিনে থাকা চার চীনা নাগরিকের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করে একজনের শরীরে বিএফ.৭ শনাক্ত হয়েছে। বাকি তিনজনের মধ্যে দুজনের ওমিক্রন বিএ ৫.২ উপধরন এবং আরেকজনের বিএ ৫.২.১ উপধরন শনাক্ত হয়েছে।

The post দেশে করোনার নতুন উপধরন বিএফ.৭ শনাক্ত appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/JAgnzcQ