Saturday, July 23, 2022

তুরস্কের ড্রোন কিনছে বাংলাদেশ

ফাতেহ ডেস্ক:

রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেন যে ড্রোন ব্যবহার করে রুশ বাহিনীকে বিপাকে ফেলেছে, তুরস্কের তৈরি সেই বাইরাকটার টিবি২ ড্রোন কিনছে বাংলাদেশ।

এ ড্রোন কেনার জন্য বাংলাদেশ সম্প্রতি চুক্তি করেছে বলে ঢাকায় নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ড্রোন বাইরাকটার টিবি২–এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাইকার টেকনোলজির সঙ্গে বাংলাদেশে সশস্ত্র বাহিনী সম্প্রতি চুক্তি সই করেছে।

এর আগে গত বছর তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মসউদ মান্নান ওই দেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদুলুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘তুরস্কের তৈরি ড্রোন আন্তর্জাতিক মানের। তাই আমরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর চাহিদা মাথায় রেখে ভবিষ্যতে আধুনিক সরঞ্জাম কেনার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে পারি।’

কূটনৈতিক সূত্র থেকে জানা গেছে, এর আগে দুই দেশের বিদ্যমান প্রতিরক্ষা সহযোগিতার আওতায় তুরস্ক নির্মিত মাইন থেকে সুরক্ষাকারী যান, সাঁজোয়া যান এবং বহুমাত্রিক রকেট প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কিনেছে বাংলাদেশ। গত বছর বাংলাদেশের কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত কামানের গোলা বিক্রির বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের কাছে সামরিক হেলিকপ্টার ও ট্যাংক বিক্রিতে আগ্রহী তুরস্ক।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম বছরে অর্থাৎ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত সাভাসগলু বাংলাদেশ সফর করেন। তখন তিনি বাংলাদেশের কাছে সমরাস্ত্র বিক্রি করতে তুরস্কের আগ্রহের বিষয়টি জনসমক্ষে আনেন।

The post তুরস্কের ড্রোন কিনছে বাংলাদেশ appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/UG4yoJB

Wednesday, July 20, 2022

সরকারি সব দপ্তরে ২৫ শতাংশ বিদ্যুতের ব্যবহার কমানোর আট দফা সিদ্ধান্ত

ফাতেহ ডেস্ক:

করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক অভিঘাতের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ওপর বেশ ভালোভাবেই পড়েছে। কয়েক মাস ধরেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম চড়া। বিশ্বব্যাপী জ্বালানিসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকার একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে। পরিকল্পিত লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্তের পর এখন সরকারি সব দপ্তরে বিদ্যুতের ২৫ শতাংশ ব্যবহার কমানো, জ্বালানি খাতের বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহারের ব্যবস্থা করাসহ নতুন করে আরও আট দফা সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।

বাসস জানায়, গতকাল সভার বিষয়ে করা ব্রিফিংয়ে মুখ্য সচিব বলেছেন, ‘আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ভবিষ্যতে যাতে আমাদের কোনো ধরনের সংকটে পড়তে না হয়, তার জন্য সতর্কতামূলকভাবেই এই ব্যবস্থা।’

গতকাল বুধবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ে কার্যকর কর্মপন্থা নিরূপণে’ অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কে এম আলী আজম, অর্থ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়াসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

গতকাল নতুন করে নেওয়া সিদ্ধান্ত ও নির্দেশনাগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে অনিবার্য না হলে শারীরিক উপস্থিতিতে সভা পরিহার করতে হবে। অধিকাংশ সভা অনলাইনে করতে হবে। অত্যাবশ্যক না হলে বিদেশ ভ্রমণ যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে বাজার মনিটরিং, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মজুতদারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যান্য পদক্ষেপ জোরদার করতে হবে।

এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী পরিবহনে ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার যৌক্তিকীকরণের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবে। আর অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বাড়াতে অর্থবছরের শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি মন্ত্রণালয় নিজস্ব ক্রয় পরিকল্পনা পুনঃ পর্যালোচনা করে রাজস্ব ব্যয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

এদিকে পানি ভবনের শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রাখা, ব্যক্তিগত কাজে অফিসের গাড়ি ব্যবহার থেকে বিরত থাকা, সকাল নয়টায় অফিসের কার্যক্রম শুরু করে বিকেল পাঁচটার মধ্যেই অফিস ত্যাগ করার নির্দেশনা দিয়েছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ অন্য সংস্থাগুলোর সব অফিসে ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে জরুরি এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। রাজধানীর পানি ভবনের সম্মেলনকক্ষে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভায় এমন একগুচ্ছ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

The post সরকারি সব দপ্তরে ২৫ শতাংশ বিদ্যুতের ব্যবহার কমানোর আট দফা সিদ্ধান্ত appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/lth4PNK

Monday, July 18, 2022

নামাজের সময় মসজিদের এসি চলবে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

ফাতেহ ডেস্ক:

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে মসজিদে এসি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে এসি একেবারে বন্ধ করা হবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। নামাজের সময় মসজিদের এসি চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এই কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী জানান, আগামীকাল থেকে এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং দেওয়া হবে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া না গেলে দুই ঘণ্টা করে লোডশেডিং হবে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিটি মসজিদের এসি বন্ধ রাখা হবে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকে প্রশ্ন তুলেন, সরকারি অফিস-আদালত, বিভিন্ন মার্কেটে যেখানে প্রচুর বিদ্যুৎ ব্যয় করে এসি চলে সেখানে বন্ধ না করে মসজিদের এসি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করতে আরও কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে ১৯ জুলাই থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং, দিনে এক-দুই ঘণ্টা লোডশেডিং, ডিজেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ, সপ্তাহে এক দিন বন্ধ থাকবে পেট্রোল পাম্প, রাত আটটার পর শপিং মল বন্ধ, সরকারি-বেসরকারি সভা হবে ভার্চুয়ালি এবং অফিসের সময় এক থেকে দুই ঘণ্টা কমানো।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক ই এলাহী চৌধুরী বলেন, করোনার অভিঘাতের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিষয়টি নিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন।

সারাদেশে বিদ্যুতের যে চাহিদা রয়েছে, উৎপাদন হচ্ছে তার চেয়ে প্রায় ৯ শতাংশ কম, যা লোড ব্যবস্থাপনার (লোডশেডিং) মাধ্যমে সমন্বয় করতে হচ্ছে।

The post নামাজের সময় মসজিদের এসি চলবে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/5RvZ6rj

Friday, July 15, 2022

প্রাকৃতিক বিপর্যয় : যেভাবে পাশে দাঁড়াচ্ছে ধর্মীয় সমাজ

ইবনে আবেদীন:

২০২০ সালে করোনার প্রকোপে যখন সারাবিশ্ব থমকে দাঁড়ালো, কলকারখানা, অফিসসহ সকল কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে গেলো, বাংলাদেশে তখন সবচেয়ে কঠিন সময় পাড় করছিলেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। অপরদিকে কোভিড–১৯ কে একটি সংক্রামক ভাইরাস হিসেবে ঘোষণা করায় মানবতাও যেন হারিয়ে গেয়েছিল অচিনপুরে! সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে অসুস্থ স্বামীকে ছেড়ে স্ত্রীর বাপের বাড়ি চলে যাওয়া, বৃদ্ধ মাকে রাস্তায় ফেলে সন্তানদের পালিয়ে যাওয়ার মতো নির্মম ঘটনাগুলো ঘটতে ছিল। কোনো মানুষ মারা গেলে তার দাফন-কাফন তো দূরের কথা একান্ত স্বজনেরাও তার লাশ ছেড়ে পালাতে মরিয়া ছিল। ঠিক মানবতার এই চরম সংকটকালে ভাগ্যাহত জীবিত ও মৃত মানুষের পাশে উদার মানবতা ও বুকভরা ভালোবাসা নিয়ে যারা দাঁড়িয়েছিলেন, তারা হলেন এদেশের আলেম সমাজ, আপামর ধর্মীয় সমাজ।

লকডাউনের সময়টাতে সবার মত আলেমদের কর্মসংস্থানও বন্ধ থাকায় তারাও অনেক সংকটে ছিলেন। কিন্তু এই সংকট আর্ত মানবতার পাশে দাঁড়াতে তাঁদের বাঁধা হতে পারেনি। নিজের যতটুকু আছে তা নিয়েই এগিয়ে গিয়েছিলেন আরেক ভাইয়ের সাহায্যে। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন স্বজনদের ফেলে রাখা লাশের কাফন-দাফনে। কিন্তু মিডিয়া বরাবরের মতোই আলেমদের এসব অবদান থেকে চোখ বন্ধ করে রেখেছিল। বরং নানাভাবে আলেমদের উত্যক্ত করে আসছিল। নানুপুর পীর সাহেবের ছেলেরা যখন তাদের ওয়েলফেয়ার সংগঠন আল মানাহিলের ব্যানারে চট্টগ্রামে পাঁচ শ শয্যার করোনা হাসপাতাল করে মানুষকে সেবা দিচ্ছিলেন, মিডিয়া তখন তুলকালাম করছিল কোন হুজুরের জানাযায় কারা অংশগ্রহণ করে করোনা বাড়ালো তা নিয়ে। মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে আপনজনদের ফেলে রাখা লাশগুলোকে যখন ইসলামী আন্দোলনের স্বেচ্ছাসেবকগণ সম্মানের সাথে কাফন-দাফনের ব্যবস্থা করছিলেন, মিডিয়া তখন ব্যস্ত ছিল কোন আলেমের কত টাকা আছ তার অনুসন্ধানী রিপোর্ট তৈরিতে। আসলে আলেম সমাজ নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করেন না। মানবতার সেবা করে প্রচার চান না। যশ-খ্যাতিও কামনা করেন না। যা করেন আল্লাহর জন্যই করেন। আল্লাহর কাছেই তাঁদের প্রাপ্য।

এবারের সীতাকুণ্ড দূর্ঘটনা ও সিলেটের ভয়াবহ বন্যায়ও বরাবরের মতোই এগিয়ে ছিলেন আলেম সমাজ। মিডিয়া আগের মতো এবারও প্রচার না করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসী দেখেছেন আলেমদের স্বেচ্ছাসেবা ও ত্রাণ বিতরণের দৃশ্য। সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপো বিস্ফোরণে আহত-নিহতদের উদ্ধারকার্যের সহযোগিতায় সবচেয়ে তৎপর দেখা গেছে আলেমদের, বিশেষত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কর্মীদের।

দেশের সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কুড়িগ্রামে আকস্মিক ও ভয়াবহ বন্যা দেখা দিলে বন্যার্ত মানুষের জন্য যারা কাজ করেছে তাদের ভেতর আলেমসমাজের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। সংকটের প্রথম দিন থেকে তাঁরা মাঠে থেকে কাজ করছেন। এখন অবধি কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে সে সময়ে প্রকাশিত কয়েকটি জাতীয় দৈনিকের রিপোর্ট অনুসারে আলেমদের পরিচালিত ও নেতৃত্বাধীন কিছু সংগঠন ও সংস্থার ত্রাণ তৎপরতা তুলে ধরা হলো—

আস সুন্নাহ ট্রাস্ট : গত ২৪ জুন পর্যন্ত সুনামগঞ্জে প্রায় ১০০ টন ত্রাণ পাঠিয়েছেন শায়খ আহমদুল্লাহ। তিনি নিজে সুনামগঞ্জের দুর্গম হাওর অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের ক্রয়কৃত ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, লবণ, সয়াবিন তেল, খেজুর, হলুদ-মরিচের প্যাকেট, চিড়া, শিশুখাদ্য, ছাতু, ওষুধ ইত্যাদি। সুনামগঞ্জ ছাড়াও তিনি সিলেট সহ বন্যা কবলিত অন্যান্য অঞ্চলেও ত্রাণ পাঠিয়েছেন। এবারের কুরবানির ঈদে ‘সবার জন্য কুরবানী’ শিরোনামে দেশব্যাপী ১০০ গরু ও শতাধিক ছাগল কুরবানি করে দরিদ্রদের মাঝে গোশত বিতরণ করেছেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও নানা বিপর্যয়ে জনসেবা করে এরই মধ্যে সাধারণ মানুষ ও গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সিলেট বিভাগে বন্যা শুরু হওয়ার একদম শুরু থেকে বানভাসি মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে তারা। মূল দলের কেন্দ্রীয় কমিটির তত্ত্বাবধানে একযোগে কাজ করেছে দলটির ছাত্র ও যুব সংগঠনসহ সব সহযোগী ও অঙ্গসংগঠন। গত ২৪ জুন দৈনিক কালের কণ্ঠ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের দেওয়া সাক্ষাৎকার থেকে আমরা জানতে পারি, তিনি বলেন, ‘দলের আমির ও নায়েবে আমিরের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় আমরা প্রথম দিন থেকে কাজ করছি। দলের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম গত ২১ জুন নিজে ত্রাণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছিলেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘কাজের ক্ষেত্রে আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। কেননা এসব অঞ্চলে সহজে ত্রাণ পৌঁছায় না। আমাদের সহায়তার মধ্যে শুকনা ও প্রস্তুত উভয় প্রকার খাবার আছে। ত্রাণসামগ্রী প্রক্রিয়াজাত করতে আমরা সিলেট শহরে দুটি এবং সুনামগঞ্জে একটি পয়েন্ট নির্ধারণ করেছি। বন্যার পানি যেসব এলাকায় নেমে গেছে সেখানে আমরা পুনর্বাসনে সহযোগিতা করছি। মানুষের ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ, বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা ইত্যাদি কাজে সাহায্য করছি। বন্যা ও বন্যা-পরবর্তী সময়ে রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তাই আমরা একটি মেডিক্যাল টিমও গঠন করেছি, যারা বন্যাদুর্গত এলাকায় চিকিৎসাসেবা দেবে।’ সিলেট সুনামগঞ্জের বাইরে নেত্রকোনা, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামেও ইসলামী আন্দোলন ত্রাণ তৎপরতা চালাচ্ছে বলে জানান মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।

পিসব : বন্যাদুর্গত এলাকায় পিপলস্ ইমপ্রুভমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ (পিসব) ১৯ মে ২০২২ থেকে ধারাবাহিক কাজ করে যাচ্ছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জে এখন পর্যন্ত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সাত হাজার পাঁচ শ পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া সিলেট ও সুনামগঞ্জের দুই শতাধিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে মাছ ধরার বিভিন্ন ধরনের জাল, হাঁড়িপাতিল, টিন এবং দুই হাজার মানুষের মাঝে পুষ্টিকর প্রস্তুত খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম, জামালপুর, কিশোরগঞ্জে এক হাজার ৫০০ পরিবারকে ১৬ কেজি করে খাদ্য ও ওষুধ বিতরণ কার্যক্রম চলছে। বন্যা-পরবর্তী স্যানিটেশন, টিউবওয়েল, গৃহ সংস্কার, নৌকা, জাল বিতরণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। ওই প্রকল্প পরিচালনা করছেন মাওলানা ইমরান হুসাইন হাবিবী ও তাঁর সঙ্গীরা।

খেলাফত মজলিস : সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার পরিবারের কাছে সহায়তা পৌঁছানোর চেষ্টা করেছে খেলাফত মজলিস। বানভাসি মানুষকে সহযোগিতা করতে সিলেট জেলা ছাত্র মজলিসের পাঁচটি স্বেচ্ছাসেবক দল ও জেলা খেলাফত মজলিসের ১০টি স্বেচ্ছাসেবক দল একযোগে কাজ করেছে। তাদের সহযোগিতার মধ্যে আছে শুকনা ও প্রস্তুত করা খাবার। সিলেট বিভাগের বাইরে কুড়িগ্রামেও একটি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল কাজ করেছে। দলের কেন্দ্রীয় সহপ্রচার সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু জানান, খেলাফত মজলিস কেন্দ্রীয়ভাবে ফান্ড সংগ্রহ করলেও তাদের দলের সিলেট জেলা শাখার নিজস্ব বাজেট এক কোটি টাকা। বন্যার পানি নেমে গেলে তাদের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হবে।

জামায়াতে ইসলামী : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও বন্যার্ত মানুষদের সহযোগিতায় উদারভাবে হস্তপ্রসার করেছে। তারা বড় অংকের বাজেট নিয়ে বিপর্যস্ত অঞ্চলগুলোতে ত্রাণ বিতরণ করেছেন ও করে আসছেন। সিলেটে বন্যাগ্রস্ত লোকদের মাঝে উপস্থিত হয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান নিজে ত্রাণ বিতরণ করেছেন। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের ত্রাণ কার্যক্রম চালু রয়েছে।

সিয়ানাহ ট্রাস্ট : একটি গবেষণাধর্মী ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন হলেও জনসেবামূলক কাজ করে যাচ্ছে সিলেটের সিয়ানাহ ট্রাস্ট। সিলেট বিভাগে যখন প্রথম ধাপে বন্যা শুরু হয়, তখন থেকেই বন্যার্ত মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে বলেন জানান ট্রাস্টের পরিচালক মুফতি জিয়াউর রহমান। তিনি জানান, প্রথম ধাপের বন্যায় খাদ্য বিতরণ ও পুনর্বাসনে জন্য ১০ লাখ টাকা বিতরণ করেছিল সিয়ানাহ ট্রাস্ট। দ্বিতীয় ধাপে বন্যা শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১০ লাখ টাকার খাদ্যসামগ্রী, প্রস্তুত ও শুকনা খাবার বিতরণ করেছে তারা। বন্যা-পরবর্তী সময়ে পুনর্বাসন নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা আছে তাদের। পুনর্বাসন প্রকল্পের জন্য সিয়ানাহ ট্রাস্ট্রের লক্ষ্যমাত্রা ৫০ লাখ টাকা।

সৃজন ঘর : সিলেটের তরুণ আলেমদের সংগঠন ‘সৃজন ঘর’ও বন্যার্ত মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত তারা শতাধিক পরিবারকে নগদ অর্থ দান, কয়েক হাজার পরিবারের মধ্যে খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানি বিতরণ করেছে। তরুণ এই আলেমরা শুধু নিজেরাই সহযোগিতা করছেন এমন না, বরং বানভাসি মানুষের জন্য কাজ করছে এমন একাধিক সংগঠন ও সংস্থার সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সহযোগিতাও করছেন।

দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসা থেকেও ১১টি নৌকাসহ বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে বন্যাগ্রস্ত সিলেটে। এ ছাড়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশ, আল মুঈন ত্রাণ তহবিল, আল মানাহিল ফাউন্ডেশন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, হাফেজ্জী হুজুর (রহ.)
সেবা সংস্থা, বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরাম, (পুরান ঢাকার) ইমাম পরিষদ, ইকরামুল মুসলিমিন ফাউন্ডেশন, সাবউ সানাবিল, তাসমিয়া ট্রাস্ট, বাসমাহ ট্রাস্ট,
আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ, বারাকাহ ইত্যাদি সংগঠন ও সংস্থা বানভাসি মানুষের জন্য কাজ করছে।
সাংগঠনিক কাঠামোর বাইরেও বহু আলেম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ কর্তৃপক্ষ বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাধ্যের সবটুকু নিয়ে। এদেশের আলেম ও ধর্মীয় সমাজের এই ত্যাগ, স্বচ্ছসেবা ও স্বেচ্ছাশ্রম মানবতার ইতিহাসে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে জ্বলজ্বল করবে। আগামী প্রজন্ম এর দ্বারা অনুপ্রাণিত হবে। মানবতার সেবায় নিঃস্বার্থভাবে আত্মনিয়োগ করবে। এহেন বাস্তবতায় যে কথাটা স্পষ্ট, ধর্মীয় সমাজের রেখে যাওয়া এই দৃষ্টান্তের একটি ক্ষুদে কণাও ধর্মবিরোধী কারো থেকে আশা করাটা যে আকাশ কুসুম কল্পনা— দেশবাসী তা জেনে গেছে।

সূত্র :
১. কালের কণ্ঠ
২. নয়া দিগন্ত ও
৩. বাংলাভিশন সহ জাতীয় দৈনিক সমূহ

The post প্রাকৃতিক বিপর্যয় : যেভাবে পাশে দাঁড়াচ্ছে ধর্মীয় সমাজ appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/RGxO8AU

জলবায়ু পরিবর্তন : প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ ও ইসলামী দৃষ্টিকোণ

নাসিম ইমরান:

পরিবেশ

বস্তুজগত ও জীবজগতের ভারসাম্যমূলক ব্যবস্থা হচ্ছে পরিবেশ (Environment)। অর্থাৎ ভূমণ্ডল ও বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত সকল উপাদানের মধ্যে একটি সমন্বয় বা একে অন্যের উপর নির্ভরশীলতা। বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী ম্যাকাইভার (১৮৮২-১৯৭০) বলেন আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পারিপার্শ্বিক অবস্থা হলো পরিবেশ। মানব জীবন, সামাজিক পরিবেশ এবং উন্নয়নে প্রভাব বিস্তারকারী সবধরণের বাহ্যিক উপাদানকে বোঝানো হয় পরিবেশ দ্বারা। বস্তুত মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, আচরণ, পেশা, সংস্কৃতি, আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা পরিবেশের সাথে সম্পর্কিত, পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত এবং কখনও কখনও পরিবেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এখানে “আচরণ” এর সাথে যদি সভাব-চরিত্র ও বিশ্বাস যুক্ত করা হয় তাহলে বস্তুজগতের সাথে অবস্তুজগতেরও সমন্বয় সাধন হয়।

মোটকথা পৃথিবীর সবকিছু যা ভূ-পৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর পর্যন্ত বিস্তৃত যথা আলো, বাতাস, পানি, মেঘ, কুয়াশা, মাটি, শব্দ, বন, পাহাড়, পর্বত, নদী-নালা, সাগর মহাসাগর, মানব নির্মিত সর্বপ্রকার অবকাঠামো এবং গোটা উদ্ভিদ ও প্রাণীমণ্ডলের সমন্বয়ে যা সৃষ্টি তাই পরিবেশ।

পরিবেশ দূষণ

ক্ষতিকর পদার্থ পরিবেশের উপাদানসমূহে যুক্ত হওয়ার দ্বারা পরিবেশের রাসায়নিক ও জৈবিক বৈশিষ্ট্যের যে অবাঞ্চিত পরিবর্তন জীবের জীবনধারণকে ক্ষতিগ্রস্ত করে বা পরিবেশগত ভারসাম্য ধ্বংস করে তাকে পরিবেশ দূষণ (Environmental pollution) বলে।

পরিবেশের উপাদানসমূহ দূষণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ হয়ে থাকে। যেমন – আলো দূষণ, বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, মেঘ নিয়ন্ত্রণ, মাটি দূষণ, শব্দ দূষণ, বৃক্ষ নিধন, বন উজাড়, পাহাড় কাটা, নদী শাসন, সাগর মহাসাগর দূষণ, জীব বৈচিত্র বিলুপ্তি ইত্যাদি।

পরিবেশ দূষণের কারণে পরিবেশে স্বাভাবিক ভারসাম্য বিনষ্ট হয়। এছাড়া জীবজগতের স্বাভাবিক এবং স্বতঃস্ফুর্ত বিকাশ ব্যাহত হয়। দূষণ মানবস্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। পরিবেশ দূষণের ফলে মানব সভ্যতা সবচেয়ে বড় যে সংকটের সম্মুখীন হয়েছে তা হলো বৈশ্বিক উষ্ণতায় (Global warming) জলবায়ু পরিবর্তন (Climate change)।

জলবায়ু

জলবায়ু বলতে বোঝায় কোনো নির্দিষ্ট স্থানের দীর্ঘ সময়ের (সাধারণত ৩০-৩৫ বছরের) আবহাওয়ার বিভিন্ন অবস্থার গড়পড়তা হিসাবকে। বস্তুজগতের সাধারণত বৃহৎ এলাকাজুড়ে নির্ণয় করা হয়।

জলবায়ু যে সমস্ত বিষয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় যেগুলো জলবায়ুর নিয়ামক। যেমন অক্ষাংশের ভিন্নতার ফলে জলবায়ুর তারতম্য ঘটে। নিরক্ষিয় অঞ্চলে উষ্ণ জলবায়ু এবং মেরু অঞ্চলে শিতল জলবায়ু বিরাজ করে।

উচ্চতার বৃদ্ধিতে প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় ৬.৪° সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস পায়। এমনকি উচ্চতার তারতম্যে একই অক্ষাংশে অবস্থিত দুই অঞ্চলের তাপমাত্রা দুরকম হয়। উঁচু পর্বতে বায়ুপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে আবহাওয়া ও জলবায়ুগত পার্থক্য দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, হিমালয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মৌসুমী জলবায়ু বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়।

কোনো স্থান সমুদ্র থেকে কতটা দূরে তার প্রেক্ষিতে বাতাসের আর্দ্রতার মাত্রা নির্ভর করে আর আর্দ্রতার প্রেক্ষিতে জলবায়ুর উষ্ণতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। সমুদ্র থেকে প্রবাহিত জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু যে অঞ্চল দিয়ে বয়ে যায়, সে অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেশি হয়। কিন্তু স্থলভাগ থেকে প্রবাহিত শুষ্ক বায়ু উষ্ণতা বাড়ায়। শীতল বা উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের কারণে উপকূলবর্তি এলাকার আবহাওয়া পরিবর্তন হয়।

কোনো স্থানে বৃষ্টিপাত হলে সেখানকার উত্তাপ কমে আবার বৃষ্টিপাতহীন অঞ্চলে উষ্ণতা বেশি থাকে। তাই মরুভূমি এলাকায় জলবায়ু উষ্ণ। তাছাড়া বৃষ্টিপাতের মাত্রার উপর আর্দ্রতার মাত্রাও নির্ভরশীল, যা জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে।

গাছের প্রস্বেদন ও বাষ্পীভবনের মাধ্যমে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। বনভূমির প্রগাঢ়তার কারণে কোনো কোনো স্থানে সূর্যালোক মাটিতে পড়ে না, ফলে ঐসকল এলাকা ঠান্ডা থাকে। তাছাড়া বনভূমি ঝড়, সাইক্লোন, টর্নেডো ইত্যাদির গতিপথে বাধা সৃষ্টি করে বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থার রূপ বদলে দেয়।

জলবায়ু পরিবর্তন

কোন স্থানের গড় জলবায়ুর দীর্ঘমেয়াদী ও অর্থপূর্ণ পরিবর্তনকে জলবায়ু পরিবর্তন (Climate change) বলে। জলবায়ু পরিবর্তন বিভিন্ন নিয়ামকের উপর নির্ভরশীল; যেমন- জৈব প্রক্রিয়াসমূহ, পৃথিবী কর্তৃক গৃহীত সৌর বিকিরণের পরিবর্তন, ভূত্বক গঠনের পাততত্ত্ব (plate tectonics), আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত, ইত্যাদি। তবে বর্তমান কালে সামাজিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে জলবায়ু পরিবর্তন বললে সারা পৃথিবীর ইদানীং সময়ের মানব কার্যকর্মের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনকে (Climate change) বোঝায় যা ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি করে বলে বৈশ্বিক উষ্ণতা (Global warming) নামে বেশি পরিচিত।

এ পর্যন্ত পরিবেশ, পরিবেশ দূষণ, জলবায়ু ও জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত প্রাথমিক ও উইকি নির্ভর কিছু ধারণার পর পরিবেশ দূষণের কারণ সমূহ কিছুটা বিশ্লেষণ করে সেই সাথে এর ক্ষতিকর প্রভাব ও ইসলামী দৃষ্টিকোণ দেখার চেষ্টা করবো।

কারণ ও ক্ষতিকর প্রভাব

আমরা আগেই জেনেছি পরিবেশের উপাদানসমূহ দূষণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ হয়ে থাকে।

আলো দূষণ : অন্ধকার রাতে উজ্জ্বল জোরালো বৈদ্যুতিক আলো জালানোর ফলে উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ ব্যাহত হওয়কে আলো দূষণ (Light pollution) বলে। পবিত্র কুরআনের সুরা নাবার ১০ ও ১১ নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে, “আর আমি রাতকে করেছি আবরণ। আর আমি দিনকে করেছি জীবিকার্জনের সময়।”

সৃষ্টির স্বাভাবিক নিয়মেই উদ্ভিদ ও প্রাণী দেহে দিনে ও রাতে দুটি ভিন্ন প্রকারের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ সংঘঠিত হয়। প্রাণীজগতে দিনের বেলা খাদ্য সংগ্রহ ও অন্যান্য কাজ এবং রাতে বিশ্রামের সময়। আলো দূষণের কারণে বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটে। প্যাচা সহ বিভিন্ন প্রকার নিশাচর প্রাণী, কীটপতঙ্গের স্বাভাবিক জীবনচর্যায় বাধা পড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে মানুষ যদি অন্ধকারে না ঘুমিয়ে আলতে ঘুমায় তাহলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা অধিক হারে বৃদ্ধি পায়। সাধারণত সূর্য দিগন্তের ১৮ ডিগ্রি নিচে গেলে এস্ট্রোনমিক্যাল সানসেট হয় এবং সূর্য দিগন্তে উদিত হবার ১৮ ডিগ্রি আগে এস্ট্রোনমিক্যাল সানরাইজ হয়। এ দুয়ের মধ্যবর্তী সময় এস্ট্রোনমিক্যাল রিসার্চের জন্য উপযুক্ত কিন্তু আলো দূষণের কারণে সেখানেও ব্যাঘাত ঘটে। সাধারণত শহরাঞ্চলে এই আলো দূষণ বেশি লক্ষ করা যায়।

বায়ু দূষণ : শিল্প, যানবাহন, নগরায়ন, বর্জ্য নিষ্কাশনে অনিয়ম বায়ু দূষণের (Air pollution) কয়েকটি প্রধান কারণ। এ ছাড়াও মরুঅঞ্চলে ধুলোঝড় এবং বনে বা ঘাসে আগুন লাগার ফলে নির্গত ধোঁয়া বাতাসে রাসায়নিক ও ধুলিকণাজনিত দূষণ ঘটিয়ে থাকে।

কয়েকটি প্রধান বায়ু দূষণকারী পদার্থ হল:

১. কার্বন মোনো-অক্সাইড (CO)- সাধারণত যানবাহনের থেকে এই গ্যাসের উৎপত্তি। পেট্রোল, ডিজেল সহ নানা ধরনের কার্বন-যুক্ত জ্বালানি আধপোড়া হলে এই রঙবিহীন গন্ধবিহীন গ্য‌াসটি তৈরি হয়। সিগারেট বা কাঠ পোড়ালেও এই গ্য‌াস বের হয়।

এ গ্যাস মানুষের শ্বাসক্রিয়ার জন্য চূড়ান্ত ক্ষতিকারক। এই গ্য‌াস আমাদের রক্তে অক্সিজেন গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। এই গ্য‌াসের প্রতিক্রিয়ায় সব সময় ঝিমোনো ভাব আসে। বিভিন্ন ব্য‌াপারে সিদ্ধান্তহীনতারও শিকার হতে হয়। এই গ্যাস বায়ুমণ্ডলের গ্যাসীয় ভারসাম্য বিঘ্নিত করে।

২. কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO2)- কলকারখানা বা যানবাহনে কয়লা, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস পোড়ানোর ফলে নির্গত হয় এই গ্যাস। এটি মানুষের নানা কর্মকাণ্ডের ফলে নির্গত প্রধান গ্রিন হাউস গ্যাস। পরিবেশের নেসেসারি ইভিল এই গ্যাসীয় উপাদানের অতিরিক্ত উপস্থিতি ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়।

৩. সালফার ডাই-অক্সাইড (SO2)- মূলত তাপ বিদ্য‌ুৎ কেন্দ্রে কয়লা পোড়ানোর ফলে এই গ্য‌াস নির্গত হয়। অন্য‌ান্য‌ শিল্পজাত প্রক্রিয়ার ফলেও এই গ্য‌াস নির্গত হয় যেমন কাগজ উৎপাদন পদ্ধতিতে, ধাতু গলানোর ক্ষেত্রে ইত্য‌াদি। এই গ্য‌াস অ্য‌াসিড বৃষ্টি এবং ধোঁয়াশা সৃষ্টির একটি প্রধান কারণ। সালফার ডাইঅক্সাইডের প্রভাবে ফুসফুসের নানা ধরনের জটিল রোগ হয়।

৪. ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC)- মূলত ফ্রিজ ও এসি থেকে এই গ্য‌াস নির্গত হয়। বাতাসে এই গ্য‌াস নির্গত হওয়ার পরে স্ট্র্য‌াটেস্ফিয়ারে চলে যায়, সেখানে অন্য‌ান্য‌ গ্য‌াসের সংস্পর্শে আসে। এর ফলে ওজোন স্তর পাতলা হয়ে যায়। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির বিকিরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার স্বাভাবিক ক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৫. সাসপেনডেড পার্টিকুলার ম্য‌াটার (SPM)- ধোঁয়া, ধুলো, বাষ্প এবং একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে বাতাসে ভেসে থাকা কঠিন পদার্থের কণাকে এসপিএম বলে। এটি বায়ু দূষণের অন্য‌তম প্রধান কারণ। ধোঁয়াশা একটা অন্যতম কারণ এসপিএম। এসপিএম বেশি থাকলে দূরের জিনিস দেখার ক্ষেত্রে খুব অসুবিধা হয়। এই ধরনের পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা ফুসফুসে প্রবেশ করে শরীরের এই অন্য‌তম প্রধান অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। নিঃশ্বাসপ্রশ্বাসের ক্ষেত্রে সমস্য‌ারও সৃষ্টি করে।

বায়ু দূষণের ফলে স্বাস্থ্য‌ের ক্ষতি হয়, পরিবেশ এবং সম্পদও নষ্ট হয়। এর ফলে বায়ুমণ্ডলে ওজোন স্তর পাতলা হয়ে যায়। এর প্রভাব পড়ে জলবায়ুর উপর এবং তা বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনেরও কারণ হয়। ইবনে কায়্যিম তাঁর ‘তিব্বে নববী’ গ্রন্থে বলেন, মহামারীর সক্রিয় কারণ ও হেতুগুলোর অন্যতম একটি হলো বায়ু দূষণ। ইবনে খালদুন মুকাদ্দিমায় বায়ু দূষণের সাথে দুর্ভিক্ষ ও মহামারীর সম্পর্ক উল্লেখ করেছেন।

বায়ু দূষণ ও ইসলাম : ইসলামে বায়ু দূষণ থেকে মুক্ত থাকার ব্যাপারে নির্দেশনা এসেছে। যার মাধ্যমে বায়ু দূষণের ক্ষতিকর বিষয় থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি। যেমন কষ্টদায়ক বস্তু সরানোর মাধ্যমে। রাস্তাঘাটে যদি কোন কষ্টদায়ক বস্তু, বায়ু দূষণকারী পদার্থ থাকে, তাহলে তা সরানোর মাধ্যমে বায়ু দূষণরোধ করা যায়। হাদীসে বলা হয়েছে,
“ঈমানের তেহাত্তর বা তেষট্টিটি শাখা রয়েছে। ওসবের মধ্যে সর্বোত্তমটি হলো- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা এবং সর্বনিম্নটি হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে ফেলা।”
(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং : ৬০)

মু’আয ইবন জাবাল রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, “তোমরা অভিশাপ ডেকে আনে এরূপ তিনটি কাজ থেকে বিরত থাক। চলাচলের রাস্তায়, রাস্তার মোড়ে অথবা ছায়াদার স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করা থেকে।”
(সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং : ২৬)

আমাদের চলাচলের পথে মানুষের জন্য কষ্টদায়ক ও বিপদজনক অনেক বস্তু পড়ে থাকে। যেমন মরা জীবজন্তু, কাঁটা, ময়লা, কলার ছোলা, পিচ্ছিল পলিথিন, জলন্ত সিগারেটের কিয়দাংশ ইত্যাদি। ঈমানের দাবি হলো, এগুলো পথ থেকে অপসারণ করা। এ সব কষ্টদায়ক বস্তুর মধ্যে এমন উপাদান বা জীবাণু থাকতে পারে, যার দ্বারা বায়ু দূষিত হবে। রাসূলের এ হাদীসগুলো যদি বায়ু দূষণরোধের মূলনীতি হিসাবে ধরা যায় তাহলে বায়ুদূষণ রোধ করা সম্ভব।

কেউ মারা গেলে ইসলাম সঙ্গে সঙ্গে তাকে কবর দিতে বলে, যাতে পরিবেশের কোন ধরনের দূষণ না হয়। কুরআন থেকে জানা যায়, যে জিনিসটা পঁচে যায় তা মরে যাওয়ার পর মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয়। যেমন কাবিল যখন হাবিলকে হত্যা করে তখন দুটি কাক সেখানে আসে আর তাদের একজন আরেকজনকে হত্যা করে এবং মৃত কাককে দাফন করে ফেলে তা দেখে কাবিল মাটি দিয়ে হাবিলকে ঢেকে ফেলে। এব্যাপারে কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, “অতঃপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভাইয়ের শবদেহ কীভাবে গোপন করা যায় তা দেখাবার জন্য মাটি খনন করতে লাগল।” (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৩১)

অতএব কুরআন এই নির্দেশনা দিচ্ছে যে, কেউ মারা গেলে তাকে মাটির নিচে কবরস্থ করতে হয়। ইসলাম শুধুমাত্র মৃত লাশকে দাফন করতে বলে না বরং ইসলাম অন্যান্য পঁচা-দুর্গন্ধ বস্তুকে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার ব্যাপারে বিশেষভাবে গুরুত্ব প্রদান করেছে।

বায়ু দূষণ রোধে জাবির রা. থেকে বর্ণিত হাদীসটি এখানে প্রণিধানযোগ্য। রাসূল সা. বলেন,
“যে ব্যক্তি কাঁচা পেঁয়াজ খাবে, সে যেন আমাদের থেকে অথবা আমাদের মসজিদ থেকে দূরে থাকে এবং ঘরে বসে থাকে।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নং : ৫৪৫২)

ইসলাম শুধুই বস্তুজগতের ক্ষতিকে দূষণের মাপকাঠি মনে করে না বরং আত্মিক ক্ষতিকেও দূষণের মাপকাঠি মনে করে। তাই তো সুঘ্রাণ হওয়া সত্তেও ইসলাম নারীর সুগন্ধি ব্যবহার করে বহির্গমণকে পরিবেশ দূষণ হিসেবে দেখেছে। হাদীসে এ জাতীয় দূষণের ভয়াবহতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। আবূ মূসা আল-আশ’আরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, “যে কোন মহিলা সুগন্ধি বা পারফিউম ব্যবহার করে, অতঃপর মানুষের সামনে দিয়ে অতিক্রম করে, যাতে তারা তার সুবাস পায় সে একজন ব্যভিচারিণী। (জামে তিরমিজি, হাদীস নং : ২৭৮৬)

সত্যিই উন্মুক্ত স্থানে বা রাস্তাঘাটে নারীর সুগন্ধি ব্যবহার এমন এক দূষণ, যা খাটি মুত্তাকীদের ঈমানের স্বচ্ছতাকে কর্দমাক্ত করে এবং পরিবেশ বিপর্যয় করে। যদিও সুগন্ধির প্রতি দুর্বলতা, সুগন্ধি ছড়ানো এবং অন্যকে তা উপহার প্রদান পরিবেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। বরং ইসলাম এর প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে। যেমন আবূ হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সা. বলেন, “যার সামনে সুগন্ধি উপস্থাপন করা হয় সে যেন তা প্রত্যাখ্যান না করে। কারণ তা বহনে হালকা এবং বাতাসকে সুবাসিত করে।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং : ৫৮৩৫)

নবী করিম সা. যখন সিংগা দিতেন অথবা লোম পরিষ্কার করতেন, নখ কাটতেন তখন তিনি তা বাকীউল গারকাদ কবরস্থানে পাঠাতেন, তারপর তা পুঁতে ফেলা হত। (আখলাকুন নবী, ৩৫৯)

আমরা অনেক সময় হাঁচি, কাশি দেয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখি না। এতে নির্গত ময়লা ও জীবাণু দ্বারা অন্যরা আক্রান্ত হতে পারে। এ ব্যাপারে মহানবী সা. এর বিশেষ আচরণ বর্ণিত হয়েছে। আবূ হুরায়রা রা. বলেন, মহানবী সা. যখন হাঁচি দিতেন তখন এক টুকরা কাপড় বা নিজ হাত দ্বারা মুখ ঢেকে ফেলতেন এবং নিম্ন আওয়াজ করতেন। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং : ৪৯৪৫)

পানি দূষণ : অপর্যাপ্তভাবে পরিশোধিত বা অপরিশোধিত বর্জ্যজল যদি স্বাভাবিক জলাশয়ে জমা হয়ে জলাশয় দূষিত করে তাকে পানি দূষণ (Water pollution) বলে।

সাধারণত যেসব কারণে পানি দূষণ হয় তা হলো, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণজাত বর্জ্য, কীটনাশক এবং ভেষজনাশক, বিভিন্ন ধরনের অর্গ্যানোহ্যালাইডস এবং অন্যান্য রাসায়নিক যৌগ পেট্রোলিয়াম হাইড্রোকার্বন, যেমন পেট্রোল, ডিজেল জ্বালানি, জেট জ্বালানি, এবং জ্বালানি তেল, মোটর তেল, অনুপযুক্ত সঞ্চয়স্থান থেকে ছড়িয়ে পড়া কারখানার দ্রাবক, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি দ্রব্য এবং প্রসাধনী দ্রব্যে উপস্থিত বিভিন্ন রাসায়নিক যৌগ
ড্রাগ, ওষুধ ড্রাগ, বিপাকজাত দ্রব্য, গর্ভনিরোধক বড়ির মত হর্মোন ওষুধ।
অজৈব জল দূষণকারী পদার্থগুলোর মধ্যে রয়েছে: শিল্পকারখানার বর্জ্য বিশেষ করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সালফার ডাই-অক্সাইড,
খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের বর্জ্য থেকে প্রাপ্ত অ্যামোনিয়া, শিল্পকারখানার উপজাত হিসেবে প্রাপ্ত রাসায়নিক বর্জ্য, নাইট্রেট এবং ফসফেট জাতীয় উপাদানযুক্ত সার যা কৃষিজমি থেকে এবং বাণিজ্যিক ও গৃহস্থ ব্যবহারের ফলেও বৃষ্টির জলের সাথে যুক্ত হয়, মোটর গাড়ির ভারী ধাতু, খনির নর্দমা, মাটিতে মানুষের দ্বারা পরিত্যক্ত আবর্জনা যেমন, কাগজ, প্লাস্টিক, অথবা নষ্ট খাবার, পরিত্যক্ত ভাঙা জাহাজ, এর সাথে রয়েছে দুর্ঘটনাপ্রযুক্ত অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে আবর্জনার স্তুপ তৈরি, যা বৃষ্টির জলের সাথে ধুয়ে যায় এবং ভূপৃষ্ঠতলীয় জলে উন্মুক্ত হয়।

পানি দূষণ ও ইসলাম

পানি দূষণরোধে ইসলাম কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। জাবির রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“নবী করীম সা. বদ্ধ পানিতে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং : ৫৪৮)

আবূ হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন,
“তোমাদের কারও উচিত নয়, স্থির পানি যা প্রবাহিত হয় না সেখানে পেশাব করা, অতঃপর সেখানে গোসল করা।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নং : ২৪০)

কেননা, পেশাবের ভিতর এমন কিছু উপাদান আছে, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

উযু করার পূর্বে পাত্রের পানি যেন দূষিত না হয় এজন্য উচিৎ হাত ধুয়ে নেয়া। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, “তোমাদের কেউ ঘুম থেকে উঠে হাত না ধুয়ে যেন পানির পাত্রে হাত না দেয়। কারণ সে জানে না, রাতে তার হাত কোথায় ছিল।” (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং : ৫৩৬)

রাসূল সা. বলেছেন, তোমরা (খাবারের) পাত্র ঢেকে রাখ (পানির) মশকের মুখ বন্ধ করে রাখ, কেননা বছরে এমন রাত্রি আছে, যাতে মহামারি অবতরণ করে। সেই মহামারি যে খোলা পাত্র ও পানির মশকের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে তাতেই পতিত হয়। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং : ৫০৮৫)

পানিকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এ হাদীস বলা হয়েছে। যদি তা খোলা থাকে তাহলে সেখানে পোঁকা-মাকড় বা ধূলা-বালির মাধ্যমে তা দূষিত হয়ে পড়ে। তাই পানির পাত্র ঢাকার ব্যাপারে ইসলামে অনেক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

শব্দ দূষণ : মানুষ বা প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকে শব্দ দূষণ (Noise Pollution) বলে।

মানুষ সাধারণত ২০-২০,০০০ হার্জের কম বা বেশি শব্দ শুনতে পায় না। তাই মানুষের জন্য এই সীমার মধ্যেই তীব্রতর শব্দ দ্বারা শব্দ দূষণ হয়। ৪৫ ডেসিবেলের উচু আওয়াজে সাধারণ মানুষ ঘুমোতে পারে না, ৮৫-১২০ ডেসিবেলের উচু আওয়াজে কানের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে যায়। WHO আবাসিক এলাকায় ৫৫ ডেসিবেল শিল্প এলাকায় ৭০ ডেসিবেলের নিচে আওয়াজ রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকে। সেখানে ঢাকা শহরের হাসপাতালগুলোর সামনে গড় আওয়াজের পরিমান ৮১.৭ ডেসিবেল। Frontiers ২০২২ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকার গড় আওয়াজের পরিমান ১১৯ ডেসিবেল।

২০২২ সালের জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি থেকে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে শব্দ দূষণে শীর্ষে ঢাকা, ৪র্থ রাজশাহী।

শব্দ দূষণের ফলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের ১১.৮% সদস্য কানের সমস্যায় ভোগেন। শব্দ দূষণের ফলে সবচেয়ে সংকট পূর্ণ অবস্থায় থাকেন গর্ভবতী মা ও ছোট শিশুরা। ৩ বছরের ছোট বাচ্চার কাছে ১০০ ডেসিবেলের হর্ন বাজালে তার আজীবনের জন্য শ্রবণশক্তি নষ্ট হতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত শব্দ দূষণের ফলে মৃত্যুও হতে পারে। ২০২২ এর ইংরেজি নববর্ষে আতশবাজির উচ্চ আওয়াজে এক নবজাতকের মৃত্যু হয় ঢাকা নগরীতে।

WHO এর মতে দূষণ জনিত শরীর খারাপের কারণগুলোর মধ্যে এক নাম্বারে রয়েছে বায়ুদূষণ দুই নাম্বারেই শব্দ দূষণ। শব্দ দূষণের কারণে প্রতিবছর হার্ডের নতুন রোগী তৈরি হচ্ছে ৪৮ হাজার। করোনায় পুরা বিশ্বে মারা গিয়েছে ৬.৩১ মিলিয়ন মানুষ সে জায়গায় শব্দ দূষণের ফলে প্রতিবছর আক্রান্ত হচ্ছে ২২ মিলিয়ন মানুষ।

দূষণ প্রভাবিত এলাকার মানুষের মেজাজ খিটখিটে হয়। আচরণে অস্বাভাবিকতা ও মানসিক উত্তেজনা দেখা দেয়। মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়। বয়স্ক মানুষের স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায়। এমনকি বধির হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে।

যানজট, কলকারখানা, আতশবাজি গান-বাজনা ইত্যাদি থেকে দূষণ সৃষ্টিকারী তীব্র শব্দের উৎপত্তি হয়।

শব্দ দূষণ ও ইসলাম : শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে ইসলাম কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করেছে। মুসলিম হওয়ার মাপকাঠিই নির্ধারণ করেছে জিহ্বা দ্বারা তথা কটু কথা বা উচ্চ আওয়াজ করে মানুষকে কষ্ট দেয়া না দেয়ার উপর। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, “প্রকৃত মুসলিম সে-ই, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নং : ১০)

নিম্নস্বরে কথা বলার মাধ্যমে শব্দদূষণ রোধ করা সম্ভব । যেমন যখন কথা বলবে তখন উঁচু গলায় কথা না বলে নিম্নস্বরে কথা বলবে, তখন তার দ্বারা পরিবেশ দূষণ অনেকাংশে রক্ষা পাবে। পরিবেশ দূষণরোধে আল্লাহ নামাজের মত ইবাদাতেও স্বর উঁচু না করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, “তোমরা সালাতে স্বর উচ্চ কর না এবং অতিশয় ক্ষীণও কর না; এই দুইয়ের মাঝ পথ অবলম্বন কর।” (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১১০)

আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা চুপি চুপি করার জন্য পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে। যেমন আল্লাহ বলেন,
“তোমরা স্বীয় প্রতিপালককে ডাক কাকুতি মিনতি করে এবং সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদেরকে পছন্দ করেন না।” (সুরা আরাফ, আয়াত : ৫৫)

আয়াতে কারিমায় চুপিচুপি ও সংগোপনে দু’আ করা উত্তম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং আয়াতের শেষে এ বিষয়ে সতর্কও করা হয়েছে যে, দু’আ করার ব্যাপরে সীমা অতিক্রম করা যাবে না। কেননা, আল্লাহ্ তা’আলা সীমা আতিক্রমকারীকে পছন্দ করেন না।

স্বয়ং আল্লাহ্ তা’আলা যাকারিয়া আ. এর দু’আ উল্লেখ করে বলেন, “যখন সে তার পালনকর্তাকে অনুচ্চস্বরে ডাকল।” (সুরা মারইয়াম, আয়াত : ৩)

মানব কল্যাণে নিয়োজিত ও অকল্যাণ থেকে সতর্ক ইসলাম কুরআনে আরও নির্দেশ দেন,
“আর তোমার চলার ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন কর, তোমার আওয়াজ নিচু কর, নিশ্চয়ই সব চাইতে নিকৃষ্ট আওয়াজ হল গাধার আওয়াজ।” (সুরা লুকমান, আয়াত : ১৯)

একইভাবে মানুষের জন্য এমনভাবে গৃহ নির্মাণ করা জায়েয নয়, যা অন্যের বসবাসের জন্য হুমকি হতে পারে। তেমনি টেলিভিশন, রেডিও ইত্যাদির অতিমাত্রায় আওয়াজ করাও বৈধ নয়। কারণ তা প্রতিবেশীর শান্তি বিনষ্ট করে। উচ্চস্বরে ডাকাডাকি, চিৎকার, দু’আ ও যিকিরের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা সম্পর্কিত উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, ইসলাম শব্দ দূষণের ব্যপারে কতোটা সতর্ক।

মাটি দূষণ : মাটির প্রয়োজনীয় উপাদান হ্রাস ও অবাঞ্ছিত পদার্থসমূহের উপস্থিতি যা জীব ও উদ্ভিদজগতের জন্য ক্ষতিকর তাকে মাটি দূষণ বলে। মাটি দূষণ পরিবেশ দূষণের একটি প্রধান অংশ।

ব্যাপক জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ন, অর্থনৈতিক প্রয়োজনে রাস্তাঘাট, বাড়ি নির্মাণ, খনিজ সম্পদ আহরণের ফলে ভূমিকে সরিয়ে ফেলা, তেল সংগ্রহ, কৃষিক্ষেত্রে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক, তেজস্ক্রিয়, আবর্জনা, পৌর ও গ্রামীণ আবর্জনা, শিল্প আবর্জনা, খনিজ আবর্জনা মাটি দূষণের অন্যতম কারণ।

মাটি, পানি, বায়ু প্রকৃতির প্রতিটি বস্তুই একে অপরের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। কাজেই বায়ু দূষণ, পানি দূষণ ও মাটি দূষণ একটার সাথে আরেকটা জড়িত। যা বায়ুকে দূষিত করে তা পানিকেও দূষিত করে, দূষণযুক্ত বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে মাটি দূষিত হয়ে পড়ে।

মাটি দূষণ ও ইসলাম : ইসলাম মাটি দূষণকে নিন্দা করে, পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,
“যখন সে প্রস্থান করে তখন সে যমীনে অশান্তি সৃষ্টি করে এবং শস্যক্ষেত্র ও প্রাণী ধ্বংসের চেষ্টা করে। আর আল্লাহ ফাসাদ ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা পছন্দ করেন না।” (সুরা বাকারা, আয়াত : ২০৫)

আয়াতে কৃষিক্ষেত্র ও প্রাণীর ধ্বংসকে বিপর্যয় সৃষ্টির সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে, যা থেকে বোঝা যায়, ভূমি দূষণ পরিবেশ বিপর্যয়ের একটি কারণ। শুধু কারখানা, বসত-বাড়ি, কৃষিক্ষেত্রের বর্জ্য দ্বারাই মাটি দূষিত হচ্ছে না বরং আধুনিক চাষ পদ্ধতিও অনেকাংশে দায়ী। মাটির বুননে অনেক বিষয়ও উৎপাদন ও মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাসের জন্য দায়ী, যা মাটিকে ধ্বংস করছে। পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত এখানে অনুধাবনযোগ্য, “যে শহর উৎকৃষ্ট, তার ফসল তার প্রতিপালকের নির্দেশে উৎপন্ন হয় এবং যা নিকৃষ্ট তাতে অল্পই ফসল উৎপন্ন হয়। এমনিভাবে আমি আয়াতসমূহ কৃতজ্ঞ সম্প্রদায়ের জন্য ঘুর্ণায়মান করি।”
(সুরা আরাফ, আয়াত : ৫৮)

জমির উর্বর শক্তি বৃদ্ধির জন্য ইসলাম মানুষকে যেসব কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করে তার অন্যতম হলো কৃষি কাজ, যা পৃথিবীর পরিবেশ রক্ষায় মৌলিক উৎস। এবং শিল্প বিপ্লবের জোয়ারে কৃষি বিমুখ জাতির অনাগত খাদ্য সংকট ও দুর্ভিক্ষের একমত সমাধানও এই কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন। (এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা “শিল্পবিপ্লব ও কৃষি : ইসলামী অন্বেষা” শিরোনামে অন্যত্র করেছি।) ইসলাম একে গুরুত্ব দিয়েছে এবং একে ইবাদত হিসেবে গণ্য করেছে। রাসুলুল্লাহ সা. সাগ্রহে কৃষি কাজ ও বৃক্ষ রোপণে উদ্বুদ্ধ করেছেন, যাতে উদ্ভিদ সম্পদ বৃদ্ধি পায় এবং সুস্থ পরিবেশ রক্ষায় সহায়ক হয়। যেমন আনাস রা থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, “যদি কোনো মুসলিম কোনো গাছ রোপণ করে অথবা ক্ষেতে ফসল বোনে আর তা থেকে কোনো পাখি, মানুষ বা চতুষ্পদ প্রাণী খায়, তবে তা তার জন্য সদাকা হিসেবে গণ্য হবে।” (সহীহ বুখারী, হাদীস নং : ৩৮২৯)

অপর হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি কোনো মৃত (অনাবাদী) ভূমিকে জীবিত (চাষযোগ্য) করবে, তা তারই জন্য।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং : ৩০৬৩)

উপরোক্ত কুরআনের আয়াত ও হাদীসসমূহ দ্বারা স্পষ্ট বোঝা যায়, আল্লাহর কর্তৃক নির্দেশিত নিয়মনীতি মেনে চলা প্রকৃতির প্রতিটি বস্তুর জন্য জরুরী। কোন একটি দূষিত হলে প্রকারান্তরে গোটা সৃষ্টিতে বিপর্যয় ডেকে আনে।

বৃক্ষ নিধন ও পাহাড় কাটা : কল-কারখানা নির্মাণ, রাস্তা নির্মাণ, সহ বিভিন্ন কারণে মানুষ নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন করে চলছে। এমনকি বনের পর বন পর্যন্ত নিধন করে চলছে। পাহাড় কেটে চলছে। পাহাড় কাটার ফলে হচ্ছে পাহাড় ধস, সেই সাথে বৃক্ষ নিধন।

পরিবেশ রক্ষায় গাছপালার ভূমিকা যে সর্বাধিক তা বলাই বাহুল্য। উদ্ভিদ নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে, অন্য কোনো প্রাণী নিজের খাদ্য নিজে তৈরি করতে পারে না। সৌরশক্তিকে ব্যবহার করে সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভিদ কার্বোহাইড্রেট বা গ্লুকোজ নামক মৌলিক খাদ্য উপাদান প্রস্তুত করে। তারপর পর্যায়ক্রমে তার রূপান্তর ঘটে এক শ্রেণি থেকে অন্য শ্রেণিতে স্থানান্তরিত হয়ে শক্তির যোগান দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রত্যেক প্রাণীই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শক্তির জন্য উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল, তা সে মাংসাশী হোক বা নিরামিষাশিই হোক। তাই উদ্ভিদ হলো উৎপাদক আর বাকি সব প্রাণীই ভক্ষক। এক কথায় উদ্ভিদ ছাড়া এ পৃথিবীতে জীবন অকল্পনীয়।

অতি সম্প্রতি সিএনএনের খবরে বলা হয়, বিশ্বে উদ্ভিদের প্রায় ৪০ ভাগ প্রজাতি বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠান রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনস কিউ এক নতুন প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। ‘স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ডস প্ল্যান্টস অ্যান্ড ফানজি ২০২০’ নামের এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘মানুষের খাবারের চাহিদা মেটাতে গিয়ে গাছপালা কেটে জমি পরিষ্কার করার ফলে বনভূমি উজাড়ের হার বেড়েছে, বিশ্বে কার্বন ডাই অঙাইডের নিঃসরণ জলবায়ু ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, নতুন রোগজীবাণু আমাদের খাদ্যশস্য ও স্বাস্থ্যকে হুমকিতে ফেলেছে, অবৈধ বাণিজ্য বৃক্ষরাজিকে বিনাশ করছে।’

গবেষকেরা বলছেন, যেসব প্রজাতির উদ্ভিদ বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে তার অনেকগুলোই ঔষধি বৃক্ষ। গবেষণায় ৫ হাজার ৪১১টি ঔষধি বৃক্ষের ওপর পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এগুলোর মধ্যে ৭২৩ টিই রয়েছে বিলুপ্তির হুমকিতে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাধারণ ধারণার চেয়ে বিশ্বে ৫০০ গুণ দ্রুতগতিতে গাছ বিলুপ্তির ঘটনা ঘটছে। কিন্তু বিষয়টি সেভাবে মনোযোগ পাচ্ছে না। একটি শতকে বিলুপ্ত হওয়া পশুপাখির সম্পর্কে হয়তো মানুষ মোটাদাগে একটি ধারণা রাখে। কিন্তু গাছের ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটে না। অনেকেই বলতে পারবে না, কোন গাছটি এখন আর দেখা যায় না।
গবেষকেরা বলছেন, এই বিলুপ্তির পেছনে মানুষ অনেকাংশে দায়ী। প্রাকৃতিকভাবে প্রজাতি বিলুপ্তির গতি শুধু মানুষের উপস্থিতির কারণেই বেড়ে গেছে ৫০০ গুণ। তাঁদের মতে, এমনকি বিলুপ্ত উদ্ভিদের যে সংখ্যা উঠে এসেছে, তাও বর্তমান বিলুপ্তির গতি বোঝার জন্য যথেষ্ট নয়। কারণ, বর্তমানে মানুষের প্রকৃতি-ধ্বংসী কাজ আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়ে গেছে।

পরিবেশ দূষণ মানুষের জীবন-মৃত্যুর সাথে সংশ্লিষ্ট একটি বিষয়। পরিবেশ দূষণ জৈবিক বৈচিত্র্যকে ধ্বংস করে, তাই এটি প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ বিষয়ক একটি সমস্যা। সেই আদিকাল থেকেই পরিবেশ মানুষের দ্বারা দূষিত হয়ে আসছে। তবে এ সমস্যা তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে অষ্টাদশ শতাব্দির শিল্প বিপ্লবের সূচনা থেকে। উনবিংশ শতাব্দির ষাটের দশকে এসে দেখা গেল, পরিবেশ দূষণ কেবল সমস্যা নয়। এটি মানব সভ্যতাকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে পৃথিবী আজ বিপন্ন।

পরিবেশ ও ইসলাম : উপরিউক্ত পরিবেশ দূষণের কারণ সমূহে লক্ষ করলে দেখা যায় দূষণের প্রধান কারন মানুষের কাজ-কর্ম বা মানুষের বিশৃঙ্খলা। আধুনিক ব্যবস্থা শুধু মানুষের বস্তুজাগতিক বিশৃঙ্খলা নিয়েই কথা বলে, কিন্তু ইসলাম বস্তুজাগতিক বিশৃঙ্খলার সাথে সাথে আত্মিক বিশৃঙ্খলা নিয়েও কথা বলে। এই বিশৃঙ্খলার ফলে ঘটে পরিবেশ বিপর্যয়।

বিপর্যয় শব্দটির আরবী প্রতিশব্দ فساد (ফাসাদ), আভিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে যার অর্থ- বিকৃতি, ভ্রান্তি, পচন, দুর্নীতি, কল্যাণের বিপরীত ইত্যাদি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফাসাদ শব্দ দ্বারা মানুষের নৈতিক আচরণগত ত্রুটি বিচ্যুতি, খারাপ কাজ, নিকৃষ্ট অভ্যাস অথবা আল্লাহর সৃষ্টি জগতে মানুষ কর্তৃক সৃষ্ট বিপর্যয়কে বোঝানো হয়। পবিত্র কুরআনের বহু আয়াতে ফাসাদ শব্দ এসেছে, যাতে ভূ-পৃষ্ঠে মানব সৃষ্ট বিপর্যয়কে তুলে ধরা হয়েছে। যেমন পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, “পৃথিবীতে শান্তি স্থাপিত হওয়ার পর তাতে বিপর্যয় সৃষ্টি কর না, তোমরা ঈমানদার হয়ে থাকলে এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর।” (সুরা আরাফ, আয়াত : ৮৫)

অন্যত্র আল্লাহ বলেন, “জলে ও স্থলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ্ তাদেরকে তাদের কৃত-কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।” (সুরা রোম, আয়াত : ৪১)

উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় ‘ফাসাদ’ শব্দ দ্বারা কি বোঝানো হয়েছে তা নিয়ে তাফসীরবিদদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা রয়েছে। তাফসীরে রূহুল মা’আনীতে বলা হয়েছে, বিপর্যয় (ফাসাদ) বলে দুর্ভিক্ষ, মহামারী, অগ্নিকাণ্ড, বন্যা, শিকার (খাদ্যের) ঘাটতি, সবকিছু থেকে বরকত উঠে যাওয়া, উপকারী বস্তুর উপকার কমে যাওয়া, ক্ষতি বেশি হওয়া ইত্যাদি আপদ বোঝানো হয়েছে।

পবিত্র কুরআনে ফাসাদ বা বিপর্যয়- এর উল্লেখ দ্বারা আধুনিক বিশ্বের পরিবেশ দূষণ তথা ইকোসিস্টেমের বিপর্যয় বোঝানো যেতে পারে। কারণ পরিবেশগত পরিবর্তন যা মানব জাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছে তার সাথে পবিত্র কুরআন উল্লিখিত ফাসাদ এবং ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের বৈশিষ্ট্যের মিল রয়েছে।

পরিবেশ সংরক্ষণে ইসলাম : পরিবেশ একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ, যা জীবনের সকল পর্যায়কে অন্তর্ভুক্ত করে। পরিবেশের রয়েছে মহান স্রষ্টা এবং মহাপ্রজ্ঞাবান পরিচালক আল্লাহ প্রবর্তিত একটি ভারসাম্যপূর্ণ ব্যবস্থা। আল্লাহ বলেন, “এটা আল্লাহর কুদরতের বিস্ময়কর কীর্তি, যিনি প্রতিটি জিনিস সুষম করেছেন।” (সুরা নমল, আয়াত : ৮৮)

ইসলাম কল্যাণমুখী এক জীবনব্যবস্থা। এতে মানুষের পরিবেশকে যথাযথভাবে সংরক্ষণের ব্যাপারে বিশেষ ভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। যেমন আল্লাহ বলেন, “তোমরা কি লক্ষ্য কর না, আল্লাহ্ আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন এবং তোমাদের প্রতি তাঁর প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করে দিয়েছেন।” (সুরা লোকমান, আয়াত : ২০)

আল্লাহ তায়ালা বলেন, “তিনি পৃথিবীর সবকিছু তোমাদের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন। ” (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৯)

আল্লাহ ভূমিকে মানুষের কল্যাণে কীভাবে নিয়োজিত করেছেন তার সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন,
“তাদের জন্য একটি নিদর্শন মৃত ভূমি। আমি একে সঞ্জীবিত করি এবং তা থেকে উৎপন্ন করি শস্য, তা তারা ভক্ষণ করে।” (সুরা ইয়াসিন, আয়াত : ৩৩)

বৃষ্টি সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যে পবিত্র সত্তা তোমাদের জন্য ভূমিকে বিছানা ও আকাশকে ছাদস্বরূপ স্থাপন করে দিয়েছেন আর আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তোমাদের জন্য ফল-ফসল উৎপন্ন করেছেন তোমাদের খাদ্য হিসেবে।” (সুরা বাকারা, আয়াত : ২২)

পরিবেশ ধ্বংসকে পবিত্র কুরআন ‘বিশৃঙ্খলা’ হিসেবে এবং অধুনা বিজ্ঞান ‘দূষণ’ নামে অভিহিত করেছে। পরিবেশের শৃঙ্খলায় ব্যাঘাত ঘটায় এবং পৃথিবীর জীবনকে অসম্ভব ও ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে এমন যেকোনো অনাচারের বিরুদ্ধেই ইসলাম সোচ্চার। তা রোধে ইসলাম নানা উপায় ও বিভিন্ন ধরনের শিক্ষার প্রবর্তন করেছে।

(এ প্রবন্ধটি শুরু হয়েছিল “প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ ও জলবায়ু পরিবর্তন : ইসলামী দৃষ্টিকোণ” শিরোনামে। প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ মূলত পরিবেশ দূষণের চরম পর্যায়। এবং এর ফলেই নেতিবাচক ভাবে জলবায়ু পরিবর্তন হয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি করে। তাই পরিবেশ দূষণ নিয়ে কিছু কথা না বলে আলোচনা শুরু করার উপায় নেই। এ কারণে শিরোনাম পরিবর্তন করে রাখা হয় “পরিবেশ দূষণ, প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ ও জলবায়ু পরিবর্তন : ইসলামী দৃষ্টিকোণ” কিন্তু পরিবেশ দূষণ নিয়ে আলোচনা এতোটা দীর্ঘ হয় যে নির্ধারিত শব্দ সীমা অতিক্রম করে ও সময় সংকীর্ণ হয়ে যায়। তাই পরিশেষে এখানেই সমাপ্ত করে এ প্রবন্ধের শিরোনাম দেয়া হয় “পরিবেশ দূষণ : ইসলামী দৃষ্টিকোণ” এবং আগামী সপ্তাহে ইনশাল্লাহ “প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ ও জলবায়ু পরিবর্তন : ইসলামী দৃষ্টিকোণ” শিরোনামে কাঙ্খিত লেখাটি আসবে। এ লেখাটি তার ভূমিকা এবং ওই লেখাটি মূল উদ্দেশ্য। একটি আরেকটির পরিপূরক।)

সহায়তা

১. আল কুরআন
২. সহীহ বুখারী
৩. সহীহ মুসলিম
৪. জামে তিরমিজি
৫. সুনানে আবু দাউদ
৬.আখলাকুন নবী
৭. আল মুকাদ্দিমা
৮. Frontiers ২০২২
৯. আইন ও বিচার সংখ্যা ৫৬
১০. উইকিপিডিয়া

The post জলবায়ু পরিবর্তন : প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ ও ইসলামী দৃষ্টিকোণ appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/Jv8Q1Yf

Thursday, July 7, 2022

চামড়া-সিন্ডিকেট : সরকার কী করতে পারে?

রাকিবুল হাসান নাঈম:

কয়েক বছর ধরে কোরবানির পশুর চামড়া বিপনন ও সংরক্ষণ নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। চামড়ার দাম পড়ে গেছে কল্পনাতীত। অথচ অর্থমূল্য বিবেচনায় বাংলাদেশ থেকে রফতানি হওয়া শীর্ষ পাঁচ পণ্যের একটি হলো চামড়া। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরের ১২ মাসে অর্থাৎ জুলাই-জুনের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানি হয়েছে ১২৪ কোটি ৫১ লাখ ৮০ হাজার ডলারের। এর আগের অর্থবছরে রফতানি হয়েছিল ৯৪ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার ডলারের। এ হিসেবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি বেড়েছে ৩২ দশমিক ২৩ শতাংশ। রফতানি বাড়লেও দেশে চামড়ার দাম পড়ে যাওয়ার জন্য এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা একে অপরকে দোষারোপ করছেন। তবে গত কয়েক বছর ধরে চামড়ার মারাত্মক দরপতনের জন্য সরকারকেও দোষারোপ করছেন অনেকে। সংশ্লিষ্টগণ জানিয়েছেন, সরকার আরেকটু উদ্যোগী হলে চামড়ার বাজারে উন্নতি ঘটবে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চামড়া  খাতটি দেখভালের জন্য নেই কোনো মন্ত্রণালয়, দপ্তর কিংবা বোর্ড। অথচ ক্ষুদ্রতম খাত রেশম উন্নয়নে পৃথক বোর্ড আছে, তুলা উন্নয়নেও আছে। ফলে খাতটির উন্নয়ন দেখভালের দায়িত্ব যেমন সরকারের কোনো সংস্থার হাতে নেই, দীর্ঘদিনের খেয়াল-খুশিতে এ খাতে গড়ে ওঠা ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙারও কোনো উদ্যোগ নেই। এর খেসারত গুনতে হচ্ছে কোরবানির চামড়ার হকদার এতিম-দুখীদের, সংকোচিত হচ্ছে রপ্তানি সম্ভাবনা। প্রতিবছর ঈদুল আজহার দিন কয়েক আগে কোরবানির পশুর চামড়ার দর নির্ধারণ ও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে রপ্তানির বিপরীতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তার ব্যবস্থা করা ছাড়া এ শিল্পে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যত কোনো কাজ নেই। ট্যানারি শিল্প শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন হলেও ট্যানারি পল্লী স্থাপনে প্রকল্প নেওয়া ছাড়া এ মন্ত্রণালয়ও খাতটির জন্য কিছু করেনি।

আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন নেই

চামড়ার দরপতনের পেছনে সরকারকে দায়ি করেন ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারী মো. সাখাওয়াতুল্লাহ। ফাতেহকে তিনি বলেন, ২০১৭ সালে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সাভারে স্থানান্তরের কারণে এ শিল্পের উৎপাদন ও রপ্তানি দুটোই কমেছে। স্থানান্তরের সময় অনেকগুলো ট্যানারি বন্ধ করে দেয়া হয়। তখনই চামড়ার বাজার পড়ে যায়। এর আগে কখনো বাজার পড়েনি। ২০১৮-১৯ সালে সংকট কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেছি, পারিনি। ২০২০ সাল গেলো করোনায়। ২০২১-২২ সালে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আবার সমস্যায় ফেলে দিল। কিন্তু সব ঠিক থাকলে, বাধা সরাতে পারলে, আমরা আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারব।’

বাধাটা কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সাভারে যে ট্যানারি পল্লী করা হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক মানের নয়। ট্যানারি পল্লীতে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগারের (সিইটিপি) আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন নেই। ২০০৩ সালে প্রকল্প নিয়ে গত ১৬ বছরে প্রকল্পের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত না করেই হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সাভারে স্থানান্তরের কারণে এ শিল্পের উৎপাদন ও রপ্তানি দুটোই কমেছে। সিইটিপির সার্টিফিকেশন না থাকায় ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ধনী দেশগুলোর ক্রেতারা বাংলাদেশি প্রক্রিয়াজাত চামড়ার কোনো পণ্য নিতে আগ্রহী নয়।’

তবে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা সরকারও করছে বলে জানিয়েছেন ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের এই নেতা। তিনি বলেন, সরকারকে আমরাও সাহায্য করছি।

মধ্যস্বত্বভোগী সমস্যা

চামড়ার দাম পড়ে যাওয়ার পেছনে মধ্যস্বত্বভোগীদের দায়ী করেছেন ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ। তিনি ফাতেহকে বলেন, মধ্যস্বত্বভোগী না থাকলে গরিবরা বঞ্চিত হবে না। চামড়ার বাজার আবদ্ধ মওসুমি ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের হাতে। তাদের হাত পেরিয়ে আমাদের হাতে আসে। আমরা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি দিয়ে কখনও চামড়া কিনি। দাম যা কমার কমায় মওসুমি ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা।’

চামড়ার বাজারের এই অবনতি ঠেকাতে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানান তিনি । সমাধান হিসেবে ফাতেহকে তিনি বলেন, এই অবনতি ঠেকানোর একটাই উপায়, চামড়া সরাসরি ট্যানারী মালিকদের হাতে তুলে দিতে হবে। মালিকরা তো সরাসরি চামড়া কালেকশন করবে না। সেজন্য থানা ও জেলায় চামড়া সংরক্ষাণাগার তৈরী করতে হবে। সেখান থেকে ট্যানারি মালিকরা সংগ্রহ করবে।

চামড়া রফতানি

খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকাকালে একবার চামড়া শিল্পের উন্নয়নের কথা ঘোষণা করেন। তখন তিনি বলেন, ক্রাস্ট লেদার ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়ানো হবে। এজন্য কাঁচা চামড়া ও ওয়েট ব্লু (লোম ছাড়ানো চামড়া) রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হবে। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ক্রাস্ট লেদার ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া ছাড়াই শুধু জিয়াউর রহমানের ঘোষণার বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কাঁচা চামড়া রপ্তানি নিষিদ্ধ করে দেয়। তখন থেকেই চামড়া খাত পুরোপুরি ট্যানারি মালিকদের তালুবন্দি হয়ে পড়ে।

সাভারে যে ট্যানারি পল্লী করা হয়েছে,  তাতে কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগারের (সিইটিপি) আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন না থাকার কারণে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রসহ ধনী দেশগুলোর ক্রেতারা বাংলাদেশি প্রক্রিয়াজাত চামড়ার কোনো পণ্য নিতে আগ্রহী নয়। এ কারণে এপেক্স, বে, ওরিয়নসহ যেসব বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশে জুতাসহ চামড়াজাত বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে, তারা অন্য দেশ থেকে চামড়া আমদানি করে তা দিয়ে পণ্য তৈরির পর রপ্তানি করছে। চামড়ার রফতানি ফেরাতে ২০১৭ সালে বর্তমান সরকার ওয়েট ব্লু (লোম ছাড়ানো চামড়া) রপ্তানির অনুমতি দেয়। উক্ত বছর সরকার চামড়াকে ‘প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার’  বলেও ঘোষণা করে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রক দপ্তরের নিয়ন্ত্রক জনাব মো. মাকসুদুল মান্নান ফাতেহকে বলেন, চামড়া রপ্তানির অনুমতি তিন-চার বছর আগেই দেয়া হয়েছে। এবারও সেটা বলবৎ থাকবে। যেহেতু চামড়ার দাম একদম পড়ে গেছে, আমরা সেটার উন্নয়ন প্রকল্পে রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছি।’

শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিসিক) মোস্তাক আহমেদ ফাতেহকে বলেন, কাঁচা চামড়া রফতানি নিষিদ্ধ। কিন্তু ওয়েট ব্লু (লোম ছাড়ানো চামড়া) রপ্তানির অনুমতি আছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ বছরও অনুমতি দিবে।

এবার ঈদে সরকার কী করছে

সাধারণত ট্যানারি শিল্প শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন। মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টগণ বলছেন, চামড়া যথাযথ সংরক্ষণ না করার কারণেই মূলত চামড়ার বাজারদর পড়ে যায়। তাই তারা চামড়া সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব  (বিসিক) কাজী সাখাওয়াত হোসাইন ফাতেহকে বলেন, ‘চামড়াটা যেন নষ্ট না হয়, দামটা যেন সবাই ঠিকঠাক পায়, তাই এবার কয়েকটি বিষয়ে আমরা জোর দিচ্ছি। এক—আমরা ইজারাদারদের বলব, প্রতিটি পশুর হাটের পাশে যেন সুলভ মূল্যে লবন বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়। দুই—মওসুমী ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করব, তারা যেন অস্থায়ী কাঁচা চামড়া সংরক্ষণাগার তৈরী করে। স্থানীয় প্রশাসনকেও অনুরোধ করব, তাদেরকে সহযোগিতা করতে এবং উদ্বুদ্ধ করতে৷ কারণ, মওসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়াটা কিনতে দেরী করে। ফলে চামড়াটা নষ্ট হবার উপক্রম হয়ে যায়। এই চামড়াটা যখন তারা আড়তে নিয়ে যায়, প্রায় নষ্ট চামড়া দেখে তারা কম দামে কিনতে চান। এভাবেই একটা সিন্ডিকেট গড়ে উঠে অঘোষিতভাবেই। তাই মওসুমী ব্যবসায়ীরা যদি লবন দিয়ে সংরক্ষণ করে, তারাও দামটা ভালো পাবে। ব্যক্তিপর্যায়েও আমরা এবার উৎসাহিত করব। সবাই তো ত্যাগের জন্যই কুরবানি দেয়। ৮০-৯০ হাজার টাকায় পশু কিনে। সঙ্গে যদি তারা কয়েক কেজি লবন কিনে নিজেরাই চামড়াটা সংরক্ষণ করে, তাহলে চামড়াটা নষ্ট হলো না। মওসুমি ব্যবসায়ীরা লবন দেয়া চামড়াটা কিনবে তাদের থেকে। নয়ত একদিনে পুরা দেশের চামড়া কেনা তো সম্ভব না। পাশাপাশি এবার আমরা টিভিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে মানুষকে কাঁচা চামড়ায় লবন দিয়ে সংরক্ষণ করতে উৎসাহিত করবো।’

শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিসিক) মোস্তাক আহমেদ ফাতেহকে বলেন, ‘এবার আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঈদের ১৫ দিনের মধ্যে ঢাকার বাইরের কোনো চামড়া ঢাকায় ঢুকবে না। এই ১৫ দিন কেবল ঢাকার ভেতরের চামড়াগুলো প্রসেস করা হবে। বাইরে যারা আছে, তারা লবন দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করবে। এজন্য আমরা কয়েকটি ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রথমত, লবনের সংকট কাটাতে জেলা-উপজেলা, থানা-ইউনিয়নে লবনের ডিলার নিয়োগ দিয়েছি। দাম একটু বাড়বে। গত বছর হয়তো ১০ টাকা কেজি ছিল, এবার হয়তো ১৩ টাকা থাকবে। কিন্তু লবনের সংকট হবে না। মওসুমি ব্যবসায়ী এবং যারা কুরাবানি দিবে, তারাও যেন চামড়াটা লবন দিয়ে রাখে, এই অনুরোধ করব এবং মানুষকে উৎসাহিত করব। আর জেলা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তারা যেন থানা-ইউনিয়নে অস্থায়ী সংরক্ষাণাগার তৈরী করে। যেখানে যতটা প্রয়োজন।

চামড়া সংরক্ষণের ব্যাপারে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারী মো. সাখাওয়াতুল্লাহ বলেন, ‘এখন গরমের কাল। যারা মওসুমি ব্যবসায়ী, তারা সন্ধ্যা ৭-৮ টার মধ্যে যেন চামড়া সংরক্ষণ করেন এবং রাত ১২ টার মধ্যে চামড়ায় লবন লাগান। এটা না করাতে চামড়া নষ্ট হয়। প্রতি বছর ৪০ শতাংশ চামড়ার গুণগত মান নষ্ট হয় সময়মত লবন না দেয়ার কারণে।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ২০৬টি ট্যানারি ইউনিট রয়েছে। এর মধ্যে ১১৪টি স্থানীয় মানদণ্ড অনুযায়ী বৃহৎ ও মাঝারি আকারের এবং শিল্প অধিদপ্তরে তালিকাভুক্ত। বাকি ইউনিটগুলো ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প পর্যায়ের এবং সরকারিভাবে নিবন্ধিত নয়।

The post চামড়া-সিন্ডিকেট : সরকার কী করতে পারে? appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/k2FQqR1

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে অফিস সময় কমানোর সুপারিশ

ফাতেহ ডেস্ক:

লোডশেডিং সংকট থেকে উত্তরণ ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে অফিস সময় কমিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের সভায়।

বৃহস্পতিবার ওই সভাশেষে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী। করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের সময়কার অফিসসূচিতে ফেরার সুপারিশ করা হয়েছে ওই সভায়।

তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, অফিসের সময় সংশোধন করা গেলে যেমন ৯টা থেকে ৩টা করা যায় কিনা বা ঘরে বসে কাজ করতে পারি কিনা, এটি সরকারের উচ্চপর্যায় চিন্তা করতে পারে। এতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে।

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয় হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা আছে। দাম না বাড়লে আমরা সবাইকে দিতে পারতাম। প্রধানমন্ত্রী দামের বিষয়ে সহনশীল হয়েছেন। সাবসিডি দেওয়া হচ্ছে। কোথায় যাবে কেউ বলতে পারে না।

বিয়ে ও সামাজিক অনুষ্ঠান সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে শেষ করার সুপারিশ করা হয়েছে সভায়। এ ছাড়া সারা দেশে এসির ব্যবহার ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে যেন না নামে সেই ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে সভায়।

সেপ্টেম্বরের আগে সংকট উত্তরণের সম্ভাবনা কম বলে সভায় জানানো হয়। সভাশেষে জানানো হয়, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সাড়ে ১২ হাজার মেগাওয়াট। আর চাহিদা ১৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। লোডশেডিং ৫০০ মেগাওয়াটের। তাই বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে হবে।

The post বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে অফিস সময় কমানোর সুপারিশ appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/k7b12IO

ঈদে আলোকসজ্জা করা যাবে না, মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব

ফাতেহ ডেস্ক:

আসন্ন ঈদুল আজহা উদযাপনে আট দফা নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। নির্দেশনা অনুযায়ী, ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোনো ধরনের আলোকসজ্জা করা যাবে না। ঈদের জামাতে অংশ নিতে পরতে হবে মাস্ক, জামাতে দাঁড়াতেও হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় এসব নির্দেশনা দিয়েছে।

আগামী ১০ জুলাই মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। ঈদের দিন মুসলমানরা জামাতের সঙ্গে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেন।

বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনে আটটি নির্দেশনা অনুসরণের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে। সেগুলো হলো-

১. আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে কোনো ধরনের আলোকসজ্জা করা যাবে না।

২. সবাইকে নিজ নিজ বাসা থেকে অজু করে ঈদগাহে বা মসজিদে যেতে হবে।

৩. করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মসজিদ বা ঈদগাহের ওজুখানায় সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।

৪. ঈদের নামাজের জামায়াতে যাওয়া মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে যেতে হবে। মসজিদ বা ঈদগাহে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

৫. ঈদের নামাজ আদায়ের সময় কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দাঁড়াতে হবে। এক কাতার ফাঁকা রেখে নামাজে দাঁড়াতে হবে।

৬. করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ শেষে মহান আল্লাহর দরবারে খতিব ও ইমামদের দোয়া করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

৭. খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এবং

৮. পশু কোরবানির ক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করতে বলা হয়েছে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

The post ঈদে আলোকসজ্জা করা যাবে না, মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/bf5VzHB

Wednesday, July 6, 2022

লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর মিনা, হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

মক্কার অদূরে মিনা নগরীতে এসে হাজির হচ্ছেন হাজিরা। বুধবার দিবাগত রাতে মক্কার মসজিদুল হারাম থেকে মিনার উদ্দেশ্যে রওনা দেন তারা। তাঁবুর এই শহর মুখরিত হয়ে উঠেছে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে।

কাবা প্রাঙ্গন থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মিনা। হজযাত্রীরা কেউ বাসে, কেউ পায়ে হেঁটে বা অন্য যানবাহনে মিনার উদ্দেশে রওনা দেন। বৃহস্পতিবার মিনার তাঁবুতে অবস্থান করবেন হাজিরা। শুক্রবার তারা যাবেন আরাফাতের ময়দানে। সেখানেই শুরু হবে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। এরপর মুজদালিফা হয়ে হাজিরা আবার মিনায় ফিরবেন। সেখানে অবস্থান করে শয়তানকে কংকর মারা, কোরবানি, মাথা মুণ্ডন, তাওয়াফ এসব আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হবে হজের কার্যক্রম।

আরাফাতের ময়দানে এ বছর পবিত্র হজের খুতবা দেবেন শায়খ ড. মোহাম্মদ বিন আবদুল করিম আল ঈসা। সৌদি আরবের স্থানীয় সময় ৯ জিলহজ (শুক্রবার) এ খুতবা দেবেন।

করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর হজে সৌদি আরবের বাইরে কেউ অংশ নিতে পারেননি। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় এবার সীমিত আকারে হজ পালনের সুযোগ দিচ্ছে সৌদি আরব। এ বছর বিভিন্ন দেশ থেকে ১০ লাখ মুসলিম হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন। বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৬০ হাজার হজযাত্রী ইতোমধ্যে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।

The post লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখর মিনা, হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/HNr6vc5

Tuesday, July 5, 2022

অনুমোদন ছাড়া হজ পালনের চেষ্টা, গ্রেফতার ২৮৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

চলতি বছর দেশি-বিদেশি ১০ লাখ মানুষকে হজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে অনুমোদন ছাড়া হজ পালনের চেষ্টা করায় প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেফতার ও জরিমানা করেছে সৌদি সরকার। দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর আহরাম অনলাইনের।

হজ নিরাপত্তার প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ আল-বাসামি বলেন, ২৮৮ জন নাগরিক ও বাসিন্দাকে হজের নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার রিয়াল জরিমানাও করা হয়।

করোনা মহামারিতে গত দুই বছর হজের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখে সৌদি কর্তৃপক্ষ। যদিও চলতি বছর বিদেশি নাগরিকদের জন্য হজের দুয়ার খুলেছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে হজযাত্রীরা যেতে শুরু করেছে দেশটিতে। কিন্তু কেউ যদি অনুমোদন ছাড়া হজ করে তাকে ১০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হবে বলে আগেই জানিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

The post অনুমোদন ছাড়া হজ পালনের চেষ্টা, গ্রেফতার ২৮৮ appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/MdK1xXu

ঢাকায় ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়েন্ট বি এ.৫ সক্রিয়

ফাতেহ ডেস্ক:

করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিএ.৫ সাব-ভ্যারিয়েন্টে ঢাকার বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআর,বি)। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি।

আইসিডিডিআর,বি বলছে, গত ১৯ মে ঢাকায় প্রথম সন্দেহভাজন ওমিক্রন সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএ.৫ শনাক্ত হয়। এরপর গত প্রায় ছয় সপ্তাহে উপ-ধরনটি সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ঘটিয়েছে ঢাকায়। এ সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ জিনোম সিকোয়েন্সিং ব্যবহার করে ৫২টি কোভিড-১৯ পজিটিভের মধ্যে ৫১টি বিএ.৫ সাব-ভ্যারিয়েন্ট এবং একটি বিএ.২ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।

আইসিডিডিআর,বি আরও জানায়, ওমিক্রনের বিএ.৪ ও বিএ.৫ সাব-ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। এটি সংক্রমণ বাড়াচ্ছে। দেশে গত ১৪ মে থেকে ২৪ জুন ছয় সপ্তাহ বি এ .৫ সাব ভ্যারিয়েন্ট সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিল। সক্রিয় এই সাব ভ্যারিয়েন্ট অন্য যেকোনও ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি সক্রিয়। যদিও বি এ ৫ দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তির অসুস্থতার তীব্রতা কম।

The post ঢাকায় ওমিক্রনের সাব ভ্যারিয়েন্ট বি এ.৫ সক্রিয় appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/C5JvtfS

Monday, July 4, 2022

ঈদে বাড়ি যেতে মানতে হবে ১২ নির্দেশনা

ফাতেহ ডেস্ক:

পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন রাজধানীবাসী। ঢাকা থেকে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে ১২টি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন (ডিএমপি) পুলিশ। সোমবার (৪ জুলাই) বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন এ নির্দেশনার কথা জানান।

তিনি বলেন, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। নাগরিক জীবনের নিরাপত্তা বিধান, ঈদের অনাবিল আনন্দ এবং শান্তি-শৃঙ্খলা অটুট রাখতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ নগরবাসীর আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করছে।’

নির্দেশনাগুলো হলো—
>> ঢাকা মহানগরীতে দূরপাল্লার ও আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের অভ্যন্তরে এবং বাইরের সড়কে বাস রেখে বা থামিয়ে যাত্রী ওঠানো যাবে না। যাত্রীরা টার্মিনালের ভেতরে থাকা অবস্থায় বাসের আসনগ্রহণ করতে পারেন। সংশ্লিষ্ট বাসের প্রতিনিধিদের এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।

>> ঢাকা মহানগরীতে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাসগুলো টার্মিনাল সংলগ্ন প্রধান সড়কের অংশ দখল করে থামবে না।

>> ভ্রমণকালে ঢাকা মহানগরের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথের গণপরিবহনগুলো শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে, যেন অযাচিত যানজটের সৃষ্টি না হয়।

>> ঢাকা মহানগর থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার যানবাহনগুলোকে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন থেকে নিবৃত থাকতে হবে।

>> আন্তঃজেলা পরিবহনের যাত্রীরা বা গমনপ্রত্যাশীদের প্রধান সড়কে এসে অপেক্ষা বা দাঁড়িয়ে না থেকে টার্মিনালের ভেতরে অবস্থান করতে হবে।

>> ঢাকা মহানগর থেকে দূরপাল্লার রুট পারমিটবিহীন বা অননুমোদিত রুটে কোনো বাস চলাচল করবে না। বাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই এ বিষয়টি কঠোরভাবে মেনে চলবেন এবং কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করবেন।

>> বাসের ভেতরে যাত্রীদের অপরিচিত কারও কাছ থেকে কিছু না খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো।

>> সংশ্লিষ্ট যাত্রীরা অবশ্যই যানবাহনে টিকিট সঙ্গে রাখবেন।

>> যাত্রীদের মালামাল নিজ হেফাজতে সাবধানে রাখবেন।

>> কোনো যানবাহনেই ছাদের ওপর অতিরিক্ত যাত্রী বহন করবে না।

>> যাত্রী তোলার ক্ষেত্রে বাসচালকরা এমন কোনো অসম প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন না। এতে সড়কের শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটে ও জীবনহানির শঙ্কা থাকে।

>> করোনার প্রকোপ ঊর্ধ্বগতি বিধায় পরিবহন চালক ও যাত্রী সবাইকে যথাযথ স্বাস্থবিধি অনুসরণ করে যাতায়াত করতে হবে।

প্রয়োজনে ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বর ০১৭১১-০০০৯৯০ অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।

The post ঈদে বাড়ি যেতে মানতে হবে ১২ নির্দেশনা appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/U4n3hxD

একদিনে করোনায় মৃত্যু ১২, শনাক্ত ২২৮৫

ফাতেহ ডেস্ক:

দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু বেড়ে দাঁড়ালো ২৯ হাজার ১৭৪ জনে।

একদিনে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ২ হাজার ২৮৫ জন। এ নিয়ে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ১৯ লাখ ৮০ হাজার ৯৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় দুজনের মৃত্যুর পাশাপাশি শনাক্ত হয়েছিল ১ হাজার ৯০২ জন।

সোমবার (৪ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪৮২ জন। এ নিয়ে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ১৯ লাখ ৮ হাজার ৭৭৯ জন।

এদিকে ১৩ হাজার ৮২৮টি নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে দেশের সরকারি-বেসরকারি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৩ হাজার ৮৪২টি। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ১২ জনের মধ্যে ৯ জনই ঢাকা বিভাগের। এছাড়া চট্টগ্রাম, খুলনা ও ময়মনসিংহে একজন করে মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে ৯ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী রয়েছেন।

The post একদিনে করোনায় মৃত্যু ১২, শনাক্ত ২২৮৫ appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/FYmnLUu

Sunday, July 3, 2022

আইনের শাসন সূচকে ১৩৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২৪

ফাতেহ ডেস্ক:

আইনের শাসন সূচকে বিশ্বের ১৩৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৪ তম। দক্ষিণ এশিয়ার ৬টি দেশের মধ্যে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। দক্ষি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট (ডব্লিউজেপি) গত শুক্রবার বৈশ্বিক আইনের শাসনের এই সূচক প্রকাশ করে।

এর আগে ২০২০ সালে ইনডেস্ক প্রকাশ করে। এতে ১৩৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ছিলো ১২৫তম। এ হিসেবে গত বছরের চেয়ে এবার একধাপ উন্নতি করেছে। পক্ষান্তরে আইনের শাসন প্রশ্নে আন্তর্জাতিকভাবে ৭০তম অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ারই আরেক দেশ নেপাল। এবারের সূচকে আন্তর্জাতিকভাবে এক নম্বরে অবস্থান করছে ডেনমার্ক।

একটি দেশের ৭টি বিষয়ের মানদণ্ডে এই সূচক নির্ণীত হয়। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৫তম। নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতার প্রয়োগের দিক থেকে ১২২তম, ফৌজদারি বিচারের দিক থেকে ১১৭তম, দেওয়ানি বিচার পাওয়ার দিক থেকে ১২৯তম, দুর্নীতি না হওয়ার দিক থেকে ১১২তম, জননিরাপত্তায় ১১১তম এবং সরকারি তথ্য প্রকাশের দিক থেকে ১০২তম অবস্থানে বাংলাদেশ। এই বিষয়গুলোর ৫টিতেই বাংলাদেশের অবস্থার অবনতি হয়েছে। শুধু জননিরাপত্তা ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১ লাখ ৩৮ হাজার খানা এবং ৪ হাজার ২০০ জন আইনজীবী ও বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে এই সূচক করা হয়েছে। বাংলাদেশের ১ হাজার খানা (পরিবার) এবং আইন পেশাসংশ্লিষ্ট ১৭ জনের মতামত নেয়া জরিপে।

প্রকাশিত সূচকে বাংলাদেশের পরই উগান্ডা, হন্ডুরাস, জিম্বাবুয়ে ও মিয়ানমারের স্থান। বিশ্বে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এটিই প্রথম প্রতিবেদন। তাতে দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ দেশেই আইনের শাসন অবনতিশীল।

The post আইনের শাসন সূচকে ১৩৯ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১২৪ appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/0ugXxtq

Saturday, July 2, 2022

বাংলাসহ ১৪ ভাষায় সম্প্রচার হবে হজের খুতবা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

চলতি বছর পবিত্র হজের আরবি খুতবা বাংলাসহ ১৪টি ভাষায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে বলে জানিয়েছে সৌদি আরব সরকার। শনিবার (২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আরব নিউজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর ১৪ ভাষায় হজের খুতবা সম্প্রচার করা হবে। ভাষাগুলো হলো- ইংরেজি, ফরাসি, বাংলা, চীনা, মালয়, উর্দু, ফার্সি, রুশ, তুর্কি, হাউসা, স্প্যানিশ, ভারতীয়, সোয়াহিলি ও তামিল।

এর আগে গত বছর হজের খুতবা বাংলাসহ ১০ ভাষায় অনুবাদ সম্প্রচার করা হয়েছিল। এবার নতুন করে আরও চারটি ভাষা যোগ করা হয়েছে। তালিকায় যুক্ত হওয়া ভাষাগুলো হলো- স্প্যানিশ, ভারতীয়, সোয়াহিলি ও তামিল। এতে করে পবিত্র হজের গুরুত্বপূর্ণ এই খুতবা বিশ্বের ২০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে।

গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ ও মদিনার মসজিদে নববীর জেনারেল প্রেসিডেন্সির সভাপতি শায়খ আবদুর রহমান বিন আবদুল আজিজ আল সুদাইস বলেন, এবার পঞ্চমবারের মতো আরাফাতের খুতবার লাইভ অনুবাদ সম্প্রচার হবে। ১৪ ভাষায় খুতবা সম্প্রচারের ফলে প্রায় ২০ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছাবে।

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর সীমিত আকারে হজ পালিত হয়। তবে সংক্রমণ কমায় এবার বিদেশিদের হজ পালনের অনুমতি দেয় সৌদি আরব। চলতি বছর ১০ লাখের বেশি মুসল্লি হজে অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে দেড় লাখ সৌদি আরবের ও ৮ লাখ বিদেশি নাগরিক।

The post বাংলাসহ ১৪ ভাষায় সম্প্রচার হবে হজের খুতবা appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/LWdqJUx

করোনায় আরও ৬ জনের মৃত্যু

ফাতেহ ডেস্ক:

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২৯ হাজার ১৬০ জন। মৃতদের মধ্যে তিনজন ঢাকা বিভাগের, দুজন চট্টগ্রাম ও একজন ময়মনসিংহ বিভাগের। তাদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও তিনজন নারী।

এসময় রোগী শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১০৫ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮৭ জনে।

শনিবার (২ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় ৮ হাজার ১৭৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ৮ হাজার ৩৫৭টি নমুনা। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২৩৩ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৭ হাজার ৯৯০ জন।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম কোনো রোগীর মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

The post করোনায় আরও ৬ জনের মৃত্যু appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/vFc6ap4