Thursday, July 30, 2020

অচিনপুর

জাবের আল হুদা চৌধুরী:

সিরাজ সাহেবের সামনে চেয়ারে যে লোকটা বসে আছে তাকে তিনি চিনেন না। চেনার কথাও না। লোকটা গভীর মনোযোগ দিয়ে পান খাচ্ছে। মুখটা হাসি হাসি।

কিছু বলবেন ভাইজান? কোন সেবা টেবা লাগবে? চেয়ারে বসা লোকটার গলাটা শ্যালো মেশিন স্টার্ট দেওয়ার মত খেক খেক করে উঠলো। বলেই যাচ্ছে-

আমার নাম বুলবুল। গানের গলা ভালো। মাঝে মাঝে বাউল গান গাই। লোকে আমাকে বাউল বুলবুলি ডাকে। বাড়ি নোয়াখালি। এই হাসপাতালে পঁচিশ বছর হয়ে গেছে।

আপনার সাথে পরিচয় হয়ে ভালই হইলো বাউল বুলবুলি সাহেব। সিরাজ সাহেব বললেন, আপনে মজার মানুষ। সো ইন্টারেস্টিং। পান খাওয়া লোকগুলো এমনই হয়। সিরাজ সাহেব ব্যাগ থেকে পানের বাটা বের করলেন।

আপনের মুখের পান শেষ। আরেকটা নেন বাউল ভাই। বুলবুলি দাঁত বের করে হাসলো।

বুলবুলির পান মুখে দেয়ার ভঙ্গি দেখে সিরাজ সাহেব খিলখিল করে হেসে দিলেন।

আপনার হাসার হেতু কী?

সাধারণত কোন হেতু নাই। আমি এমনিতেই একটু ফুর্তি-ফার্তিতে থাকার চেষ্টা করি। ফুর্তির মূল উপাদান হাসি। তা ছাড়া আপনার পান খাওয়া দেখে মনে হইতেছিল রসগোল্লা খাইতেছেন।

আমার কাছে পান রসগোল্লার চেয়ে কম কিছু না সিরাজ ভাই। পঁচিশ বছর ধইরা ডাক্তারদের সাথে উঠা বসা। তারা বিড়ি সিগারেট খায়। আমি খাই পান। জিনিস একই। শুকনা আর ভেজা। পার্থক্য এতটুকুই। তারপরও পানে তাদের এলার্জি। ছাড়াইতে পারে নাই। তামাক দুনোটাই। পান খাইলে দোষ। সিগারেটে দোষ নাই! আচ্ছা, আমি আপনার কী সেবা করতে পারি বললেন নাতো?

সেবা-টেবা কিছু না। আমার একজন অচেনা মানুষ দরকার।

অচেনা মানুষ দিয়ে করবেন?

এখন সময়টা খারাপ। চেনা জানা আপনজন পর হয়ে গেছে। আপনজনের সংখ্যা খুব দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। যারাওবা আছে, এরা পর মানুষের মত আচরণ করতেছে। দুনিয়ায় থাকতেই হাশরের ময়দান কায়েম হয়ে গেছে বুলবুলি ভাই! চেনা মানুষগুলোর অচেনা আচরণ মনে বড় কষ্ট দেয়।

এই কারণে অচেনা মানুষ দরকার। অচেনা মানুষ কষ্ট দিলে গায়ে লাগে না।

আমি আপনের সাথে যাবো। মানুষ নিয়া আমার খেলা নেলা। আমি মানুষ চিনি। আমি বোঝে গেছি। আপনে একজন কামেল মানুষ। চাকরী বাকরী করার সময় এখন না। আমার গলার দড়ি আপনের হাতে। দড়িতে টান দিবেন, আমি হাজির।

সিরাজ সাহেব হাসলেন। বাটা থেকে পান বের করে মুখে দিলেন। হাজি ক্যাম্পের পাশে প্রাইভেট এই হাসপাতালটার নাম ফরাজী বিশেষায়িত হাসপাতাল। সারি সারি ডাক্তারের চেম্বারগুলো শূন্য পড়ে আছে। রিসেপশন ডেস্কের পিছনে পিচ্চি মতন একটা ছেলে পুরনো মাস্ক পরে ভয়ার্ত মুখ নিয়ে বসে আছে। বিশাল হাসপাতাল কম্পাউন্ডে জঙ্গলের নির্জনতা বিরাজ করছে। ভয়, আতংক মৃত্যুর হাহাকার ধ্বনি এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে।

সবাই অপেক্ষা করছে- এই বুঝি তার পালা আসলো। মানবজাতির মৃত্যুভীতির এই ক্রান্তিকালে পৃথিবী আঁধার করে ঝমঝম করে বৃষ্টি নামলো। সিরাজ সাহেব বাউল বুলবুলিকে নিয়ে বৃষ্টির মধ্যেই বের হয়ে আসলেন।

হাসপাতালের গেইট সংলগ্ন একটা চায়ের স্টল। লকডাউনের কারণে সেটা বন্ধ। তবে পাশের বিল্ডিংয়ের সিঁড়ির নিচে বসে পান সিগারেট দেদারসে বিক্রি হচ্ছে। লোকজন আড়ালে দাঁড়িয়ে একবার চায়ে চুমুক দিচ্ছে, আরেকবার পিছন দিকে তাকিয়ে দেখছে পুলিশ আসে কিনা। সিরাজ সাহেব বুলবুলি বাউলকে নিয়ে সেখানে চা খাচ্ছেন। বুলবুলির হাতে সিগারেট।

সিরাজ সাব!

বলেন, বাউল ভাই।

সিগারেট আমি আগে খাইতামনা। অভ্যাস নাই। ইদানিং খাই। মনটা ভীষণ খারাপ। তিনটা ছেলে এক সপ্তার মধ্যে মারা গেছে। যে দিকে তাকাই শুধু লাশ দেখতে পাই। বউয়ের লাশটা তিন দিন পরে দাফন করা হয়েছে। জানাজা হয় নাই। এলাকায় কওমী মাদ্রাসার চার পাঁচটা ছাত্র লাশ দাফনের কাজগুলো করছিলো, গতকাল খবর পেলাম সবাই আক্রান্ত।

মসজিদে আজান হয় না আজ কতদিন! আমার মসজিদের ইমাম সাব শত শত জানাজা পড়িয়েছেন, সকালে তার লাশ দাফন হয়েছে। জানাজায় লোক ছিল দুইজন।

ভাই!

হুঁ, কন।

এখন আমরা কোথায় যাবো?

আমরা প্রত্যেকেই গোরস্থানে যাব বুলবুলি! টেনশন মত কর। যতদিন আছি, ভয়হীন সময় কাটাইতে চাই। বিপদ সবার কান্দে সমান তালে সওয়ার হইছে। আপনে একা না। আমি আপনার চেয়ে আরো বেশি বিপদে আছি। বললেন সিরাজ সাহেব।

আপনারে দেখে তো বিপদে আছেন মনে হয় না।

কী মনে হয়?

মনে হয় আপনে চা টা খেয়েই সিনেমা দেখতে যাবেন।

এটা একটা ভাল আইডিয়া বাউল! আপনে মনে হয় আমার ফিলিংটা ধরতে পেরেছেন?

বেশি বিপদের সময় আনন্দ ফূর্তি করো- রাস্তা খুলে যাবে। বিপদ হালকা মনে হবে। বিপদে ঘাবড়ে যাওয়া মানে পরাজয়কে ফুলের মালা পিন্দানো। বুঝলে ভালো, না বুঝলে আরো বেশি ভালো। ঐযে শোনেন নাই, করোনা ভাইরাস আসার পর থাইকাই প্রশাসনের লোকজন বলছে- ডোন্ট পেনিক। পেনিক হবেন না। পেনিক মানে কী?

পেনিক মানে আতঙ্ক, ভয়। সিরাজ সাহেব চা শেষ করে পকেট থেকে একটা কৌটা বের করে কালো জিরা খেলেন।

আপনি খাবেন?

দেন খাই।

খান। এটা হলো ভাইরাসসহ যে কোন রোগের মহা ওষুধ। নবিজির বাতলানো মহা ওষুধ। দামে সস্তা। কাজে উস্তাদ। বিশ্বাসটা শর্ত। বিশ্বাসে মুক্তি মিলে।

বাউল বুলবুল অতি ভদ্র একজন শ্রোতা। সিরাজ সাহেব খুব খুশি। দশ দিন হাজি ক্যাম্পের আইসোলেশনে থেকে জীবনটাকে তার বিষ মনে হয়েছে। কথা শোনার কেউ নাই। এখানে বেশিরভাগ লোক বিদেশি। বিদেশিরা কথা বেশি বলে। দেশে এসে এরা বাংলাদেশের সবাইকে শ্রোতা মনে করে। খালি পটর পটর।

সিরাজ সাহেব বললেন, শুনেন বাউল সাহেব। হ্যানিম্যানের নাম শুনেছেন? শুনেননি। শোনার কথাওনা। আপনে তো আর আমার মত প্রাইমারী স্কুলের হেড মাস্টার না যে, ইতিহাস ঐতিহ্য মুখস্থ রাখতে হবে।

হ্যানিম্যান হইলো – হোমিওপ্যাথির আবিস্কারক। ঠিকানা জার্মানী। হোমিও ওষুধ পানির মত দেখতে। ইউরোপিয়ানরা পানির মত দেখতে কোন কিছুকে মেডিসিন মনে করেনা। হ্যানিম্যান বললেন, ওহে ইউরোপবাসী! ট্রিট দ্যা প্যাশেন্ট, নট দ্যা ডিজিজ- চিকিৎসা রোগের হয় না, রোগীর চিকিৎসা আসল। তেজোদীপ্ত মানব মন হইলো শক্তিশালী মেডিসিন। তোমরা অবিশ্বাসী, আমার ওষুধ তোমাদেরকে ক্রিয়া করবে  না। আটলান্টিকে আমি হোমিও’র মেডিসিন ভাসিয়ে দিলাম। বিশ্বাসী ভারতবাসী তা খাবে আর পট পট করে রোগমুক্ত হবে।

কথা আপনে জ্ঞানের বলেছেন স্যার। বাউল বুলবুল এখন সিরাজ সাহেবকে স্যার ডাকতে শুরু করলো। হাতের ধরা সিগারেটটাও ফেলে দিল। এখন থেকে আমি আপনাকে স্যার ডাকবো সিরাজ সাহেব।

ডাকতে পারেন, কারণ আমাকে অনেকেই স্যার ডাকে।

পড়ন্ত বিকেলে ঢাকা শহরে এক ধরণের গুমোট ভাব থাকে। চৈত্র্যের শেষ দুপুরে গরমে গা শন শন করে। এক পশলা বৃষ্টির পরে ঢাকার রাজপথ জনমানবহীন তেপান্তরের মত লাগছে। তাতানো রোদে হয়ে যাওয়া আষাঢ়ে বাঁদল বৃষ্টির পর জনমানবহীন ঢাকার রাজপথ কেমন অচেনা নিষ্ঠুরতার চাদরে যেন ঢেকে আছে।

বিমানবন্দর রেল লাইন ক্রস করে সিরাজ সাহেব ধীর পায়ে সামনে যাচ্ছেন। তার ডান পাশে বাউল বুলবুলি। সিরাজ সাহেব পাঞ্জাবীর বুক পকেট থেকে চশমা বের করে চোখে দিলেন। বিমাবন্দর গোল চত্বরে লাইন ধরে পুলিশের লোকজন দাঁড়িয়ে আছে। সবার মুখে নীল রঙ্গের মাস্ক। হাতে গ্লাভস। চোখে ভীতির ছাপ। এয়ারপোর্টে ঢোকার মূল প্রবেশমুখে তেরপাল দিয়ে তাঁবু টানিয়ে রাখা হয়েছে। ভেতরে অল্প কিছু পুলিশ সদস্য লুঙ্গি পরে ভাবলেশহীনভাবে বসে আছে। বড় ডেগচিতে খাবার রান্না হচ্ছে। রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া একদমই নাই। মাঝে মাঝে দু’ একটা এ্যাম্বুলেন্স কিংবা প্রশাসনিক গাড়ি হুইসেল বাজিয়ে এদিক সেদিক ছুটছে। চিরাচরিত বিমান বন্দর এলাকার ব্যস্ততা, ছুটে চলা মানুষের ঢল এখন নাই। ঢাকার বেশিরভাগ মানুষ মারা গেছে। গ্রামে গঞ্জে পালিয়ে গেছে অনেকেই। আশেপাশে দোকানগুলো বন্ধ। কিছু দোকানের শাটারগুলো ভাঙ্গা। এদিক সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে কিছু কসমেটিক্স ও অন্যান্য মালামাল। খাওয়া যায় এমন কিছু চোখে পড়ছেনা তাতে। একটা ফার্মেসীতে পিপিই পরে তরুণ বয়সের একটা ছেলে ভীত চেহারায় বসে বসে বাদাম খাচ্ছে। এই সময়ে সে বাদাম কোথায় পেল জিজ্ঞেস করা দরকার ছিল।

স্যার, কিছু ভাবতেছেন? হুঁ।

কি ভাবেন?।

ভাবতেছি তোমাকে কাজের কথাটা বলে ফেলা দরকার। তুমি কি আমার সাথে যাবে? সিরাজ সাহেব বুলবুলিকে তুমি বলতে শুরু করেছেন। এতে বুলবুলি খুশিই হয়েছে মনে হয়।

আপনে কামেল মানুষ। আপনের সাথে যাওন দরকার। আজাব গজবের সময় কামেল মানুষদের সঙ্গ ছাড়া উপায় নাই।

তোমার কথা অনেক দামী। বুলবুলি!

বলেন স্যার।

আমি জীবনে কোনদিন ভয় পাই নাই।

এখন ভয় পাইতেছেন?

হুঁ।

কেন ভয় পাইতেছি জিজ্ঞাসা কর।

কেন ভয় পাইতেছেন?

ঢাকায় আমি কালে ভদ্রে আসি। বাংলাবাজার যাই। পুরানা বই পত্র কিনি। সন্ধ্যার আগেই নারায়ণগঞ্জের তিলাপাড়ায় ফেরত যাই। গত মাসের আটাশ তারিখে ঢাকায় আসি কুয়েত থেকে আসা আমার এক ছাত্রকে রিসিভ করতে। মজনু। মতিউর রহমান মজনু। ছেলেটা ভাল। বিদেশে গিয়েও স্যারকে ভুলে নাই। গরীব। মা ছাড়া ঘরে আর কেউ নাই। ওর আব্দার আমি যেন তাকে নিতে আসি। আমি আসিও। ইমিগ্রেশন পার হয়ে ছেলেটা আমার হাত ধরা অবস্থায় মারা যায়। কভিড উনিশে আক্রান্ত বাংলাদেশে এটাই প্রথম মৃত্যু। আজিমপুরে প্রশাসনের লোকজন ওকে দাফন করে দেয়। আমাকে হাজি ক্যাম্পে আইসোলেশনে রাখা হয় দশদিন। আজ সকালে সেখান থেকে আমি পালিয়ে আসি।

তাইলে তো স্যার আপনার সামনে মহামুসিবত। সামনে পুলিশ। ডোন্ট পেনিক বাউল। আমার ভয় এটা না। আমার সিক্সথ সেন্স খুব ভালো। সিক্সথ সেন্স মানে হলো ষষ্ঠইন্দ্রীয়। আমার ষষ্ঠইন্দ্রীয় বলছে- আমরা আরো অনেকেই মারা যাবো। মারা যাওয়া উচিতও। কারণ, আমরা এমন সব কাজ কাম করা শুরু করেছিলাম, যার কারণে আমাদের প্রত্যেকের তিনবার করে মরা উচিত। আমার কথা কি বুঝতে পারতেছো বাউল?

তিনবার করে মরার বিষয়টা বুঝতে অসুবিধা হইতেছে কিঞ্চিত। তিনবার করে মরার অর্থ হলো- আমরা মানবজাতি এমন উল্টা পাল্টা আকাম কুকাম করেছি, যেগুলোর শাস্তি স্বরূপ আমাদের তিনবার মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। বুলবুলি, এটা ভাইরাস না। এইটা হইলো খোদাপাকের গোস্বা। খোদাপাকের গোস্বার আগুন নিভানোর ক্ষমতা মানুষের নাই। মানুষ দুর্বল। মানুষ নিজের গোস্বার আগুনই নিভাইতে পারেনা। খোদা পাকের গোস্বা কিভাবে নিভাইবে।

তাইলে এখন কি হইবে মানবজাতির? আমি তো দেখতেছি মানবজাতি পেটের ক্ষুধার আগুন নিভাইতে ব্যস্ত, খোদাপাকের গোস্বার আগুন নিভাইবে কোন সময়?

তুমি হক কথা বলেছো বাউল। মানুষ খোদাপাকের রাগ গোস্বার বিষয়টা ধরতে পারে নাই। মানবজাতি এখনও গ্লাভস আর মাস্ক নিয়া পড়ে আছে। কাজেই অপেক্ষা কর। বিপদ আরো ভয়াবহ। বসন্তের ঝরা পাতার মতন আমরা ঝরতে থাকবো। অগনিত

চেনা মানুষগুলো আমরা সদলবলে দৃষ্টির আড়াল হয়ে যাবো। ভয় পাওয়ার কিছু নাই। ভয় দিয়ে মরণ আটকানো যায় না। মানবজাতি এই সময়টাতে ভড়কে যায়। ভড়কানো উচিত না। হ্যামিংওয়ে কি বলেছেন জানো? A Man Can Be Destroyed but Not Defeated – মানুষ ধ্বংস হতে পারে, পরাজিত হতে পারে না। আমি এ কারণে ভীত না। আমার ভয় স্মৃতিশক্তি নিয়ে। চেনা মানুষগুলোকে চিনতে পারছি না। চেনা রোড ঘাট ভুলে যাচ্ছি। কালকে খবর পেলাম মজনুর মা আক্রান্ত হয়েছে। ছেলের জন্য সে অপেক্ষা করছে। মজনুর মৃত্যুর খবরটা তাকে দিতে হবে।

সিরাজ সাহেবের পেটে প্রচণ্ড ক্ষিদা পেয়েছে। হাঁটতে হাঁটতে তারা বিমানবন্দর রেল-স্টেশনে এসে পৌঁছেছেন। বিপদের সময় মানুষ ক্ষিধার কথা ভুলে যায়। পেশাবের বেগ বেশি হয়। শিকদার সাহেব ক্ষিধের কথা ভুলে গেলেন। তার কানদুটো শোঁ শোঁ আওয়াজ করতে লাগলো। লক্ষণ শুভ।

বাউল!

বলেন স্যার।

পান খাবা?

আপনে খান স্যার। আমার ডর লাগতাছে।

ডরানোর কিছু নাই। এখন ভালো কিছু একটা হতে যাচ্ছে। আমার কানে শোঁ শোঁ আওয়াজ করলেই আমার ষষ্ঠইন্দ্রীয় জাগ্রত হয়।

আপনের ষষ্ঠইন্দ্রীয় এখন কি বলতেছে?

সিরাজ সাহেব বিমানবন্দর রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে বসে পড়লেন। বুলবুলিও তার পাশে বসলো। সিরাজ সাহেব তার দিকে ঝুকে এলেন।

বাউল!

বলেন স্যার!

আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রীয় বলছে, আমি এই মুহূর্তে মারা যাবো!

কি আজে বাজে কথা বলতেছেন স্যার!

বাউল তোমাকে একটা কথা বলে মরতে চাই। মানবজাতিকে জানিয়ে দাও, এটা কিছুইনা। ভাইরাসও না, মহামারীও না। এটা ভয়, শুধুই ভয়। কিন্তু আফসোসের ব্যাপার কী জান? জীবনের এই শেষ বেলায় এসে অজানা এই ভয়ের কাছে আমি নিজেই পরাজিত হতে চলেছি।

বুলবুল দেখলো সিরাজ সাহেবের প্রচণ্ড শ্বাস কষ্ট শুরু হলো। তিনি প্লাটফ্রমে লুটিয়ে পড়লেন। এই মুহূর্তে কি করা যায়, তা ভেবে উঠার আগেই সিরাজ সাহেব মারা গেলেন…..

The post অচিনপুর appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/2CY7cdI

No comments:

Post a Comment