Tuesday, March 24, 2020

করোনাভাইরাস নিয়ে উৎকণ্ঠায় রোহিঙ্গারা

ফাতেহ ডেস্ক

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত ১১ লাখের বেশী রোহিঙ্গা চলমান করোনাভাইরাস নিয়ে চিন্তিত। জনঘনত্বের কারণে এ দুই উপজেলার ৩৪ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটলে তার পরিণাম ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সেবাধানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে রোহিঙ্গাদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, এখানে আশ্রিত রোহিঙ্গারা মাঝে-মধ্যে মিয়ানমার পারাপার করে থাকে। তাছাড়া মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের সীমান্ত রয়েছে, আর রোহিঙ্গারা চোরাপথে মিয়ানমারে আসা-যাওয়া করে। সেজন্য আমাদের ঝুঁকিটা অনেক বেশি। রোহিঙ্গাদের বেশির ভাগই অসচেতন।

বিদেশ সফর শেষে একাধিক ব্যক্তি ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ না থেকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এ নিয়ে শিবিরের মানুষজনের মধ্যে কাজ করছে উৎকণ্ঠা। একবার যদি ক্যাম্পের কারও শরীরে সংক্রমণ ঘটে তাহলে তার ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

বাংলাদেশে একাধিক ব্যক্তির করোনা আক্রান্তের খবরে রোহিঙ্গাদের মাঝে ভয় বেড়েছে জানান আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। যেহেতু শিবিরে ঘিঞ্জি বসতি, সেহেতু ঝুঁকিটাও বেশি। সম্প্রতি শিবিরে বিদেশ সফর শেষে কয়েকজন রোহিঙ্গা নারী এসেছেন। তারা বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করছেন। তার কোনও পরীক্ষা করা হয়নি।

এখন পর্যন্ত সরকার ও এনজিও সংস্থার পক্ষ থেকে করোনা সংক্রান্ত কোনও কার্যক্রম হয়নি। তাই দ্রুত সচেতনতা ও করোনাভাইরাস কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় সে প্রস্তুতি নেয়ার দাবি এ নেতার।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত শিবিরের কারোর মধ্যে করোনাভাইরাসের কোনও লক্ষণ পাওয়া যায়নি। তবে তেমনটা দেখা গেলে রক্ত সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানোর প্রস্তুতি রয়েছে। বিদেশ ফেরত এক পরিবারের চারজন রোহিঙ্গাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রোহিঙ্গাদের মাঝে সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন সংস্থার ২৮০ জন ডাক্তার, নার্স ও স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জানিয়ে অতিরিক্ত ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, শরণার্থীদের স্বাস্থ্য ও ভালো থাকার বিষয়টিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি, যদিও শিবিরগুলোয় এখনও কোভিড-১৯ সম্পর্কিত কোনও সন্দেহজনক ঘটনা পাওয়া যায়নি। তবু বর্তমান পরিস্থিতিতে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে ইউএনএইচসিআরসহ সংশ্লিষ্টরা।

তিনি আরও বলেন, করোনা প্রতিরোধে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ ছাড়া বাকি সব বন্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবত থাকবে। এছাড়াও সংক্রমণ ঠেকাতে বিদেশি পরিদর্শকদের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। নতুন করে আসা বিদেশিদের ক্যাম্পে প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) কক্সবাজার এক নারীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এছাড়াও ৪ রোহিঙ্গাসহ ২৭১ জন, ১১ চিকিৎসক ২২ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে।

-এ

The post করোনাভাইরাস নিয়ে উৎকণ্ঠায় রোহিঙ্গারা appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/2vKq4Jm

No comments:

Post a Comment