Wednesday, February 3, 2021

উইঘুরে মুসলিম নারীদের ওপর চীনা কর্মকর্তাদের যৌন নির্যাতন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

চীনের জিনজিয়ান অঞ্চলে কথিত ‘পুনঃশিক্ষণ’ শিবিরে সংখ্যালঘু মুসলিম উইঘুর সম্প্রদায়ের নারীরা পদ্ধতিগত ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যের বরাত দিয়ে আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

বিবিসিকে এক ভুক্তভোগী বলেছেন, চীনা কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য হলো, উইঘুরদের সবাইকে শেষ করে দেওয়া।

জিনজিয়ান অঞ্চলের শিবিরে নয় মাস বন্দী ছিলেন তুরসুনাই জিয়াউদুন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে শিবির থেকে ছাড়া পান তিনি। পরে জিনজিয়ান থেকে পালান জিয়াউদুন। তিনি প্রথমে কাজাখস্তানে যান। সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্র। এখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। জিয়াউদুনের ভাষ্য, শিবিরে করোনার প্রার্দুভাব নেই। তবু শিবিরের দায়িত্ব থাকা পুরুষেরা সব সময় মাস্ক পরে থাকেন। তাঁরা স্যুট পরেন। তবে তাঁদের পরনে থাকা সেই স্যুট ঠিক পুলিশের উর্দির মতো নয়।

জিয়াউদুন বলেন, ওই পুরুষেরা কখনো কখনো মধ্যরাতের পর শিবিরের সেলে আসেন। তাঁরা সেলে আসেন নারী বাছাই করতে। পরে তাঁরা বাছাই করা নারীদের ‘বিশেষ’ কক্ষে নিয়ে যান। সেই কক্ষে কোনো নজরদারি ক্যামেরা নেই। জিয়াউদুন নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, তিনি নিজে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। প্রতিবারই তাঁকে দুই বা তিন ব্যক্তি ধর্ষণ করেছেন।

জিনজিয়ান অঞ্চলের ‘পুনঃশিক্ষণ’ শিবির বেশ বড়। স্বাধীন হিসাবমতে, এই শিবিরে ১০ লাখের বেশি উইঘুর নারী-পুরুষ বন্দী আছেন। সেখানকার ব্যবস্থা বেশ গোপনীয়। ফলে শিবিরের ভেতরে কী ঘটে, তার খবরাখবর তেমন বাইরে আসে না।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, চীন সরকার ধীরে ধীরে উইঘুরদের ধর্মীয়সহ অন্যান্য স্বাধীনতা কেড়ে নিচ্ছে। জিনজিয়ানের শিবিরে উইঘুর নর-নারীকে সব সময় কড়া নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। শিবিরে তাঁদের ওপর নানা নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়। সেখানে তাঁদের প্রজনন ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। জোর করে তাঁদের বিশেষ মতবাদ শেখানো হচ্ছে।

জিয়াউদুনের ভাষ্য পুরোপুরি যাচাই করা অসম্ভব। কারণ, চীনে সাংবাদিকদের ওপর কঠোর বিধি জারি করে রেখেছে দেশটির সরকার। তবে তাঁর বিবরণের সঙ্গে অন্যান্য তথ্য-প্রমাণ ও আগে প্রকাশিত হওয়া ভাষ্যের মিল রয়েছে।

জিয়াউদুন বলেন, শিবির থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি হয়তো বেঁচে আছেন। কিন্তু তিনি আসলে ‘মৃত’। ধর্ষণের শিকার হয়ে তিনি পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছেন। চীনা কর্তৃপক্ষ বলে, শিবির থেকে লোকজনকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাঁর মতে, যে বা যাঁরাই শিবির থেকে ছাড়া পান, তাঁরা আসলে শেষ হয়ে যান। চীনা কর্তৃপক্ষের লক্ষ্যই হলো—সবাইকে (উইঘুর) শেষ করে দেওয়া।

The post উইঘুরে মুসলিম নারীদের ওপর চীনা কর্মকর্তাদের যৌন নির্যাতন appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/3jb0W2T

No comments:

Post a Comment