Monday, May 4, 2020

দেশে ফিরতে হাজারো কুয়েত প্রবাসীর রাতভর বিক্ষোভ, ফাঁকা গুলি

ফাতেহ ডেস্ক

কুয়েত থেকে দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন প্রায় সাড়ে চার হাজার বাংলাদেশী। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পর তারা ২০-২৫ দিন ধরে দেশটির সিভদী, আবদালী, মাঙ্গাফ ও কসর নামে চারটি ক্যাম্পে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। তাদের মধ্যে ইতিমধ্যে দুইজন স্ট্রোক করে মারা গেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পে থাকার পরও দেশে ফিরতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন এসব প্রবাসী। রোববার দেশটির স্থানীয় সময় মধ্যরাতে সিভদী ও আবদালী ক্যাম্পে থাকা প্রবাসীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। মারা গেছেন তিনজন।

সর্বশেষ গতকাল সিভদী ক্যাম্পে দেশে ফেরার অপেক্ষায় থাকা চাঁদপুরের হাজিগঞ্জের কাজিগাঁও গ্রামের আমরান (৪৩) স্ট্রোক করে মারা গেছেন। এর কয়েকদিন আগে একই ক্যাম্পে আরো একজন মারা যান বলে জানা যায়। গত ২ মে মারা দেশটির আবদালি ক্যাম্পে মারা গেছেন কুমিল্লার রবিউল ইসলাম।

কুয়েত সরকার গত ১ এপ্রিল থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সে দেশে অবস্থিত অবৈধ প্রবাসীদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। এরপর বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে চার হাজার অবৈধ প্রবাসী সাধারণ ক্ষমার জন্য আবেদন করেন। যারা আবেদন করবে তাদের দেশে ফেরানোর বিমানভাড়াসহ যাবতীয় খরচ বহন করবে কুয়েত সরকার।

কিন্তু প্রায় এক মাস ক্যাম্পে থেকেও দেশে ফিরতে না পেরে ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা দেশটির সিভদী ও আবদালী ক্যাম্প থেকে রাস্তায় বের হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। রোববার দেশটির স্থানীয় সময় মধ্যরাতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভসহ দেশে ফেরত আসার জন্য বিভিন্ন গান দেন হাজারো প্রবাসী বাংলাদেশী। কুয়েতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণ করে।

সিভদী-ক্যাম্পে থাকা কুমিল্লার রিফাত বলেন, কুয়েতে আছি তিন বছর ধরে। সাধারণ ক্ষমায় আত্মসমর্পণ করার পর হোম কোয়ারেন্টিনে আছি ২২ দিন ধরে। আমাদের ক্যাম্পে দুই হাজারেরও বেশি লোক রয়েছেন। প্রথম যেদিন আত্মসমর্পণ করি, বলা হয়েছিল পাঁচ দিন পরই ফ্লাইট দেয়া হবে। এরপর বলে ৩০ এপ্রিল। কিন্তু এখন দূতাবাসের পক্ষ থেকে কোনো খোঁজই নেয়া হয় না।

আমাদের এখানে ইতোমধ্যে দুইজন স্ট্রোক করে মারা গেছেন। প্রত্যেক দিন একই খাবার আমাদের দেয়া হচ্ছে। গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। গতকাল রাতে সবাই বিক্ষুব্ধ হয়ে ক্যাম্পের গেটে গিয়ে বিক্ষোভ করেছি। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। প্রায় ৩ ঘণ্টা ওখানে ছিলাম আমরা।

কুয়েতের আবদালি ক্যাম্পে থাকা আশরাফুল বলেন, দুই বছর আগে কুয়েতে এসেছি। আমাদের কোম্পানির নাম আল কোর্তাস। এখানে আসার পর প্রাথমিকভাবে বৈধতা পাই। তারপর আর আকামা দেয়নি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি আল কোর্তাস নামে যে কোম্পানিতে এসেছি তাদের নামে কুয়েত সরকার ৭০টি ভিসার অনুমোদন দিয়েছিল।

কিন্তু তারা জালিয়াতি করে ৭০০ লোক নিয়ে আসে। ধরা পড়ার পর ওই কোম্পানি নিষিদ্ধ করা হয়। এই কোম্পানির দায়িত্বে ছিলেন বাংলাদেশের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বারেক নামের একজন।

তার মাধ্যমেই বেশির ভাগ লোক কুয়েতে আসি। কুয়েতে তার ১০ বছর জেল হয়েছে। তিনি পালিয়ে চলে গেছেন। আবদালি ক্যাম্পে আমরা প্রায় দুই হাজার মানুষ রয়েছি। কুয়েত সরকার আমাদের ক্ষমা করে দিয়েছে। অনেক দিন অপেক্ষায় আছি বাড়ি যাব। করোনাভাইরাসের এই সময় এখানে কত সমস্যা। কিন্তু আমাদের দেশে নেয়ার কোনো লক্ষণ নেই। দূতাবাসের নম্বরে ফোন দিলে ধরে না।

-এ

The post দেশে ফিরতে হাজারো কুয়েত প্রবাসীর রাতভর বিক্ষোভ, ফাঁকা গুলি appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/2L2F9dg

No comments:

Post a Comment