রাকিবুল হাসান:
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশে মসজিদে নামাজ আদায়ের উপর বিধিনিষেধের এক মাস হতে চললো। গত ৬ এপ্রিল ধর্ম মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছিল, ‘আজ থেকে মসজিদে কোন জামাতে ৫ জনের বেশি অংশ নিতে পারবেন না। আর শুক্রবার জুমার নামাজের জামাতে অংশ নিতে পারবেন সর্বোচ্চ দশ জন।’ এরপর থেকেই সীমিত হয়ে পড়ে মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা। তারপর বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) ধর্মমন্ত্রণালয় থেকে দেয়া আরেক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানে এশার জামায়াতে ইমাম, মুয়াজ্জিন, খতিব, খাদিম এবং দুজন হাফেজনহ সর্বোচ্চ ১২ জন অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এশার জামায়াত শেষে এ ১২ জনই মসজিদের তারাবিতে অংশগ্রহণ করবেন।
এখন প্রশ্ন উঠছে এভাবে কতদিন আমাদের দেশে বন্ধ থাকবে মসজিদ। রমজানে মানুষ মসজিদমুখী হয়। নামাজে-ইবাদাতে আগের চেয়ে বেশি একনিষ্ঠ হয়। মসজিদে যেতে না পেরে তাদের মধ্যেও কাজ করছে ক্ষোভ। তারা বলছেন, অন্যান্য দেশের মতো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খুলে দেয়া হোক আমাদের মসজিদ।
মসজিদ খুলে দেয়ার ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কিছু ভাবছে কিনা জানতে চাইলে ইফার উচ্চ পর্যায়ের এক কর্মকর্তা ফাতেহ টুয়েন্টি ফোরকে বললেন, ‘আসলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আলাদা করে কিছু ভাবতে পারে না। বরং সরকার যে সিদ্ধান্ত দেয়, তা প্রকাশ করে মাত্র। কখনও প্রয়োজন হলে আলেমদের সঙ্গে বৈঠক করে সরকারকে পরামর্শ দেয়া হয়। তবে সরকার তা মানতেও পারেন, আবার নাও মানতে পারেন।’
গত ৮ এপ্রিল মসজিদ উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন বাংলাদেশের শীর্ষ ১৫ জন আলেম। এরপর তাদেরকে সমর্থন করে বিবৃতি দিয়েছেন আরও ৭০ জন আলেম। কিন্তু আলেমগণ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সরকারের কাছে মসজিদ খুলে দেয়ার আবেদন জানিয়েছেন কিনা জানতে চাইলাম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইফার এই কর্মকর্তা জানালেন, ‘না। আলেমগণ তেমন কোনো আবেদন নিয়ে আমাদের কাছে আসেননি। আর আসবেনই বা কেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন তো মসজিদ খুলে দেয়ার অধিকার রাখে না। হয়ত তারা অন্য কোনো মাধ্যমে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে থাকলে থাকতেও পারে।’
অন্য দেশের মতো সুরক্ষা পদ্ধতি গ্রহণ করে মসজিদ খুলে দেয়া যায় কিনা। এমন প্রশ্নের উত্তরে ইফার এই কর্মকর্তা বললেন, ‘লকডাউন হালকা করে দেয়ার সঙ্গে মসজিদ খুলে দেয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ, বাজার-হাট খুলে দিচ্ছে অর্থনীতি সচল রাখার জন্য, করোনার প্রকোপ কমে গেছে এজন্য নয়। মসজিদ বন্ধ করা হয়েছে সুরক্ষা এবং নিরাপত্তার প্রশ্নে। যেহেতু সুরক্ষার যেহেতু সুনিশ্চিত হয়নি, করোনার প্রকোপ যেহেতু কমেনি, বরং বেড়েছে, মসজিদ খুলে দেয়ার আবেদন অযৌক্তিক। তবে আলেমদের জায়গা থেকে মসজিদ খুলে দেয়ার দাবিও সঠিক। এবং সুরক্ষার প্রশ্নে সরকারের কঠোরতার সঠিক।’
জানতে চাইলাম, তাহলে করোনার প্রকোপ কমার আগে ইসলামিক ফাউন্ডেশন সরকারের কাছে মসজিদ খুলে দেয়ার আবেদন জানাবে না? ইফার কর্মাকর্তা জানালেন, ‘এটা আসলে ডিজি ছাড়া আর কেউ বলতে পারবে না।’
তাহলে মসজিদ কবে খুলছে এই বিষয়টি অনিশ্চিত। এই ক্ষেত্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশনেরও নেই উল্লেখযোগ্য কোনো তৎপরতা। এদিকে দেশে ক্রমশ বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সুরক্ষা প্রশ্ন আরও জটিল, আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন।
The post কবে খুলবে মসজিদ : যা ভাবছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন appeared first on Fateh24.
from Fateh24 https://ift.tt/2W2wM80
No comments:
Post a Comment