Sunday, April 5, 2020

করোনা-কালে মুসলমানের আকীদাহ : একটি প্রয়োগিক পাঠ

আশরাফ উদ্দীন খান

বর্তমান বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রকোপ বিস্তার লাভ করে চলেছে। নিকট ও দূর অতীতের মানবজাতির ইতিহাসে এই ধরণের মহামারীর প্রাদুর্ভাব খুব বেশী দেখা দেয়নি। গত বছরের ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে প্রথম পর্যায়ে এই ভাইরাসের কথা বিশ্ববাসী জানতে পারে। চীনের উহান শহরের একটি বাজার থেকে এই ভাইরাস প্রথম প্রকাশ পায় –যেমনটি বলা হচ্ছে এবং এরপর অতি অল্প সময়ের মধ্যেই বিশ্বের প্রায় প্রত্যেক দেশে এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পরে। সেই অর্থে এই বছরকে করোনা-বছর ও এই কালকে করোনা-কাল হিসাবে আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। 

‘আকীদাহ’ শব্দটি একটি আরবি শব্দ, যার সাধারণ অর্থ ‘বিশ্বাস’ আর পরিভাষায় বুঝানো হয়ে থাকে ‘ইমান ও ইমানের সাথে সম্পর্কিত বিষয়সমূহ, যেমন আল্লাহর পরিচয়, তাঁর সিফাত বা গুণাবলী, তাঁর আফয়াল বা কার্যাবলী, নবুওয়াত, রিসালাত, আখেরাত, গাইবিইয়াত বা অদৃশ্যবিষয় ইত্যাদি’। ইলমুল আকীদাহ হচ্ছে সেই শাস্ত্র যেখানে এই সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে। ফিকাহ শাস্ত্রের সম্পর্ক যেমন মুসলমানের আমল ও কর্মের সাথে তেমনি ইলমুল আকীদাহ এর সম্পর্ক হচ্ছে মুমিনের ইমান ও বিশ্বাসের সাথে। 

করোনাভাইরাসের এই যুগে, এই মহামারীকে কেন্দ্রকরে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ কিছু প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে। যা নিয়ে সাধারণ মানুষ যেমন নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছে, তেমনি ধর্মীয় আলেম সমাজের পক্ষ থেকেও তার উত্তর দেওয়া হয়েছে ও হচ্ছে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে উত্থাপিত প্রশ্নসমূহ যদি নির্ধারণ করা যায় তাহলে মোটামুটি সেগুলো হবে এই : 

  • এই ভাইরাস এক মানুষ থেকে আরেক মানুষে সংক্রমণ হয়ে থাকে, -এমন ধারণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অন্যদিকে মুসলমানদের মধ্যে একটি ধারণা প্রচলিত আছে যে, ‘সংক্রমণ’ বলতে কোন কিছু নেই’ তাহলে এই পরস্পর বিরোধী উভয় ধারণার ব্যাখ্যা কি হবে?   
  • এই ভাইরাস আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি আযাব, আর আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে আল্লাহর কাছে দোয়া-তাওবা-ইস্তিফগার করা দোয়ার সাথে জাগতিক উপায়-উপকরণ গ্রহণ করার যুক্তি ও জরুরত কতটুকু?  
  • ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার উদ্দেশ্যে গণ-জামায়েত এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, সেখানে মাদ্রাসা বন্ধের বিষয়, মসজিদে জামাত অনুষ্ঠিত করা না করার বিষয় এসে যাচ্ছে। ফলে এর একটি ধর্মীয় সমাধান জরুরী হয়ে যাচ্ছে
  • যদি তাকদিরে থাকে তাহলে হাজার চেষ্টা করেও এই বিপদ থেকে বাঁচার কোন উপায় নেই। কথা সত্য, কিন্তু এইজন্য কি আমাদেরকে এই ভাইরাসের ক্ষতি থেকে বাঁচার উদ্দেশ্য কোন কিছু করতে হবে না? এই ধরণের আরো প্রশ্ন ও বিতর্ক আমাদের সামনে আসছে, এর উত্তর ও সমাধান কি? 

উপরে উল্লেখিত বিষয় ও এই ধরণের আরো কিছু বিষয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সামনে প্রকাশ পাচ্ছে। সেই সকল বিষয়ের কিছু দিক বা অংশ ফিকাহ শাস্ত্রের সাথে সম্পর্কিত হলেও, সেটা হচ্ছে ব্যবহারিক দিক, কিন্তু তাত্ত্বিক দিক বা দার্শনিক ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের বিষয়টি ইলমুল আকীদাহ এর সাথেই সম্পর্কিত। তাই উত্থাপিত প্রশ্নসমূহকে একটি শিরোনামে একত্রিত করে আলোচনা করার জরুরত অনুভুত হয়েছে। সেই অনুভূতি থেকেই ‘করোনা-কালে মুসলমানের আকীদাহঃ একটি প্রয়োগিক পাঠ’ শিরোনামে এই আলোচনার অবতারণা করা হয়েছে। 

আলোচনার শুরুতে মুসলমানের আকীদাহ বা বিশ্বাসের কিছু মৌলিক বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করার পরে, নিম্মে উল্লেখিত বিষয়সমূহ নিয়ে অতি সংক্ষেপে আলোচনা পেশ করা হবে। উদ্দিষ্ট বিষয়সমূহ হচ্ছে : 

  • আল্লাহর সুনান, আয়াত, পরীক্ষা  ও করোনাভাইরাস 
  • বিপদ-বিপর্যয় কেন আসে? 
  • কাযা-কদরের প্রতি ইমানের অর্থ 
  • আসবাব গ্রহণ করা না করা 
  • তাওয়াক্কুল ও তায়াকুল
  • কিছু ভুল ধারণা 
  • ভুল ধারণা সৃষ্টি হওয়ার কারণ 

প্রথমেই আলোচনা করছি মুসলমানদের আকীদাহ বা ইমানের কিছু মৌলিক বিষয় নিয়ে।  

 

  • মুসলমানদের আকীদাহ কিছু মৌলিক বিষয় 

 

আলোচনার শুরুতে এমন কিছু বিষয় উল্লেখ করা জরুরী, যা ইলমুল আকীদাহ শাস্ত্রে মৌলিক ধারণা বা বিষয় হিসাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। সেই সকল বিষয়ের উল্লেখযোগ্য কিছু হচ্ছেঃ 

আল্লাহ তায়ালা এই বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তা ও মালিক

إن ربكم الله الذي خلق السماوات والأرض في ستة أيام ثم استوى على العرش يغشي الليل النهار يطلبه حثيثا والشمس والقمر والنجوم مسخرات بأمره ألا له الخلق والأمر تبارك الله رب العالمين.

“নিঃসন্দেহ তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ, যিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হয়েছেন, তিনি ঢেকে দেন দিনকে রাত দিয়ে, রাত দিনকে তালাশ করে দ্রুত, আর সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি নিয়োজিত তাঁর আদেশে। জেনে রেখ, তাঁরই হাতে সৃষ্টি ও আদেশ। বরকতময় আল্লাহ, বিশ্বজগতের প্রতিপালন”। (সুরা আ’রাফঃ ৫৪) 

আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন, কেউ তাঁকে বাঁধা প্রদান করতে পারে না

أولم يروا أنا نأتي الأرض ننقصها من أطرافها والله يحكم لا معقب لحكمه وهو سريع الحساب.

“তারা কি দেখে না যে, আমি জমিনকে সংকোচন করে আনছি বিভিন্ন দিক থেকে, আল্লাহই আদেশ প্রদান করেন, তাঁর আদেশ রদকরার কেউ নেই, তাঁর হিসাব দ্রুত” (সুরা রা’দঃ ৪১) 

আল্লাহ সবকিছু করতে সক্ষম 

وهو الغفور الودود. ذو العرش المجيد. فعال لما يريد.  

“তিনিই দয়াশীল, প্রেমময়। আরশের অধিপতি, চির-সন্মানিত। যা ইচ্ছা তাই করেন”। সুরা বুরুজঃ ১৪-১৬) 

বিশ্বজগতের কোন কিছু তাঁর ইলম ও কুদরতের বাইরে নয়  

وعنده مفاتح الغيب لا يعلمها إلا هو ويعلم ما في البر والبحر وما تسقط من ورقة إلا يعلمها ولا حبة في ظلمات الأرض ولا رطب ولا يابس إلا في كتاب مبين.

“আর তাঁর কাছেই গায়েবের চাবিকাঠি, যা তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না। এবং তিনি অবগত আছেন যা জলে ও স্থলে রয়েছে। এবং একটি পাতা পর্যন্ত পড়ে না, কিন্তু তিনি তা জানেন, এবং জমিনের অন্ধকারে কোন দানা নেই, এবং নেই কোন ভেজা ও শুকনা কোন কিছু কিন্তু তা রয়েছে সুস্পষ্ট কিতাবে” (সুরা আনয়াম ৫৯) 

বিশ্বজগতের ভাল-মন্দ সবকিছু আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত

قل اللهم مالك الملك تؤتي الملك من تشاء وتنزع الملك ممن تشاء وتعز من تشاء وتذل من تشاء بيدك الخير إنك على كل شيء قدير. 

“বলুন, হে আল্লাহ, ক্ষমতা দানকারী, আপনি ক্ষমতা দান করেন যাকে ইচ্ছা, ক্ষমতা চিনিয়ে নেয় যার থেকে ইচ্ছা, যাকে ইচ্ছা সন্মানিত করেন এবং যাকে ইচ্ছা অসন্মানিত করেন, আপনার হাতেই সকল কল্যাণ, নিঃসন্দেহ আপনি সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান” (সুরা আলে-ইমরানঃ ২৬) 

উপরে উল্লেখিত বিষয়সমূহ পেশ করার কারণ এটাই যে, আমরা যখন ইলমুল আকীদাহ নিয়ে যে দৃষ্টিকোণ থেকেই আলোচনা করি না কেন, আমাদের সামনে মৌলিক কিছু বিষয় অবশ্যই থাকতে হবে। সেই সকল মৌলিক বিষয়ের জ্ঞান ও ধারণা চিন্তায় রেখেই আমরা এখানে আকীদাহ সম্পর্কিত কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। 

 

  • আল্লাহর সুনান, আয়াত, ইবতিলা-পরীক্ষা ও করোনাভাইরাসঃ  

 

এই বিশ্বজগত আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত নীতিমালা দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। সেই সকল নীতিমালাকে পরিভাষায় ‘আল্লাহর সুন্নত বা সুনান’ বলা হয়ে থাকে। তেমনি এই বিশ্বজগতে যা কিছু ঘটছে তার সবকিছু আল্লাহর সুনানের অন্তর্ভুক্ত। ‘সুনান’ এর সাধারণ অর্থ হচ্ছে নীতিমালা। পরিভাষায় বলা হয় :  

هي الطريقة المتبعة في معاملة الله تعالى للبشر بناء على سلوكهم وأفعالهم وموقفهم من شرع الله وأنبيائه وما يترتب علي ذلك من نتائج في الدنيا والأخرى.

“আল্লাহর সুনান হচ্ছে মানবজাতির আচার, কর্ম ও আল্লাহর শরীয়ত ও তাঁর নবী-রাসুলদের সাথে তাদের আচরণের ভিত্তিতে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে যে পদ্ধতিতে ‘মুয়ামালা’ করে হয়ে থাকে, এবং এর ভিত্তিতে দুনিয়া ও আখেরাতে যে ফলাফল অর্জিত হয়ে থাকে” (ডঃ আব্দুল কারিম যাইদান) 

আল্লাহর তায়ালা তাঁর সুনান সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের আয়াতে এরশাদ করেনঃ  

استكبارا في الأرض ومكر السييء ولا يحيق المكر السييء إلا بأهله فهل ينظرون إلا سنة الأولين فلن تجد لسنة الله تبديلا ولن تجد لسنة الله تحويلا.

“পৃথিবীতে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে ও কূট ষড়যন্ত্রের কারণে, আর কূট ষড়যন্ত্র তার পরিকল্পনাকারীদেরকেই পাকড়াও করে। তারা কি পুর্ববর্তীদের (ব্যাপারে আল্লাহর) সুন্নতের অপেক্ষায় আছে, তাহলে আপনি আল্লাহর সুন্নতের কোন পরিবর্তন পাবেন না এবং কস্মিনকালেও আপনি আল্লাহর সুন্নতের কোন ব্যতিক্রম পাবেন না” (সুরা ফাতির ৪৩) 

এই শিরোনামের দ্বিতীয় শব্দটি ছিল ‘আয়াত’ যার অর্থ নিদর্শন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদেরকে আল্লাহর শক্তি, নীতি, কুদরত ইত্যাদির পরিচয় পেশ করার জন্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাধ্যমে ‘আয়াত’ বা নিদর্শন উপস্থাপন করে থাকেন। যাতে চিন্তাশীল মানুষ এই আয়াতসমূহ দেখে ও প্রত্যক্ষ করে আল্লাহর পরিচয় ও তাওহীদ সম্পর্কে অবগত হতে পারে, হিদায়েত লাভ করতে পারে। এই সম্পর্কে কুরআনের আয়াতে এরশাদ করা হয়েছে : 

سنريهم آياتنا في الآفاق وفي أنفسهم حتى يتبين لهم أنه الحق أولم يكف بربك أنه على كل شيء شهيد.

“শীঘ্রই আমি তাদেরকে দেখাবো আমার আয়াতসমূহ বিশ্বজগতে (দিগন্তে) ও তাদের নিজেদের মধ্যে, যাতে তাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে যায় যে তিনিই সত্য। আপনার প্রতিপালকের জন্য কি এটা যথেষ্ট নয় যে, তিনি সব বিষয়ে সাক্ষী” (সুরা হা-মীম সিজদা ৫৩) 

আর তৃতীয় শব্দটি ছিল ‘ইবতিলাহ’ যার সাধারণ অর্থ হচ্ছে পরীক্ষা করা। আল্লাহ তায়ালা ইবতিলাহ সম্পর্কে এরশাদ করেন : 

ولنبلونكم بشيء من الخوف والجوع ونقص من الأموال والأنفس والثمرات وبشر الصابرين. الذين إذا أصابتهم مصيبة قالوا إنا لله وإنا إليه راجعون. 

“আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, তাদেরকে যখন বিপদ আক্রান্ত করে তখন বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী” (সুরা বাকারাহ ১৫৫-১৫৬)। 

উল্লেখিত এই তিনটি পরিভাষার পরিচয় পেশ করার পরে, আমরা যদি করোনা মহামারী নিয়ে চিন্তা করে দেখি তাহলে বুঝতে পারবো যে, এই মহামারী আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি আয়াত বা নিদর্শন, যার মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হচ্ছে যে, মানুষ যতই শক্তি ও প্রযুক্তি অর্জন করুক না কেন, মানবজাতি নিজের ভবিষ্যৎ, নিজের নিরাপত্তা পরিপুর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হতে পারে না। 

আজকে আমরা বিশ্বের সকল শক্তিকে এই সামান্য একটি ভাইরাসের সামনে চরমভাবে অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে ও নিজেদের অপারগতা স্বীকার করতে দেখছি। কেউ কেউ ইতিমধ্যে –প্রত্যক্ষভাবে বা পরোক্ষভাবে- স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে, মানবীয় শক্তি হিসাবে আমাদের পক্ষে যা করার ক্ষমতা ছিল আমরা তার সবটুকু ইতিমধ্যে করেছি। এর বেশী কিছু করার আমাদের পক্ষে আর সম্ভব নয়। এখন আমাদেরকে সমাধানের জন্যে একমাত্র আসমানের দিকে তাকিয়ে অপেক্ষা করা ছাড়া বা অদৃশ্য কোন শক্তির তরফ থেকে অলৌকিক কোন সমাধান ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই। 

আবার এটাও বলা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে মানব জাতিকে সতর্ক করার জন্যে, জগতের মধ্যে শক্তির মাত্রা ঠিক রাখার জন্যে এই ধরণের সুন্নত প্রকাশ করে থাকেন। আজকে দেখা যাচ্ছে যে যাদেরকে শক্তিশালী জাতি হিসাবে মনে করা হত তারা যে পরিমাণ নিজেদের দুর্বলতা প্রকাশ করে দিয়েছে, অন্য যাদেরকে তেমন শক্তিশালী মনে করা হত না তারা কিন্তু এই বিপদে নিজেদেরকে নিরাপত্তার মধ্যে ফিরিয়ে আনতে কিছুটা সক্ষম হয়েছে। আল্লাহ তায়ালার একটি বিশেষ সুন্নত হচ্ছে ‘সুন্নাতুত-তাদাফু’। এক জাতির মাধ্যমে আরেক জাতিকে আল্লাহর তায়ালা এই দুনিয়াতে নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। কুরআনের আয়াত : 

الذين أخرجوا من ديارهم بغير حق إلا أن يقولوا ربنا الله ولو لا دفع الله الناس بعضهم ببعض لهدمت صوامع وبيع وصلوات ومساجد يذكر فيها اسم الله كثيرا ولينصرن الله من ينصره إن الله لقوي عزيز.

“যাদেরকে তাদের ঘর-বাড়ী থেকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করা হয়েছে শুধু এই অপরাধে যে, তারা বলে আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ। আল্লাহ যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা প্রতিহত না করতেন, তাহলে (খৃষ্টানদের) গির্জা, (ইহুদীদের) উপাসনালয় এবং মসজিদসমূহ বিধ্বস্ত হয়ে যেত, যেগুলাতে আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করা হয়। আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদেরকে সাহায্য করবেন, যারা আল্লাহর সাহায্য করে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী শক্তিধর” (সুরা হাজ্জ ৪০) 

আবার করোনা মহামারীকে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি ইবতিলাহ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে মানবজাতিকে পরীক্ষা করা উদ্দেশ্য। এই পরীক্ষার সামনে যারা নিজেদের ধর্যের প্রমাণ দিতে পারবেন, এবং ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী আচরণ করতে সক্ষম হবেন তাদেকে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এর উত্তম প্রতিদান দান করবেন, তাদেরকে পুরস্কিত করবেন, আর যারা সেটা করতে সক্ষম হবেনা তাদেরকে ধরা হবে যে তারা এই ইবতিলাহতে উত্তীর্ণ হতে পারল না। 

 

  • বিপদ-বিপর্যয় কেন আসে? 

 

দুনিয়ার বিভিন্ন স্থানে ও বিভিন্ন সময়ে বিপর্যয়, দুর্যোগ নেমে আসে –এটা একটি স্পষ্ট বিষয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই বিপদ ও বিপর্যয়ের কারণ কি? বিপদ-বিপর্যয় অবতীর্ণ হওয়ার কারণ বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নিয়ে ভিন্নতা রয়েছে। কারো নিকট এটা নিছক প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা দুর্যোগ, আর আমরা –মুসলমানদের- মতে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত আযাব। যেটা আল্লাহর ক্রোধের বহির্প্রকাশ হয়ে থাকে। যা আল্লাহর দ্বীন থেকে মানুষের দূরে সরে যাওয়া, পাপাচার, অন্যায়, জুলুম-অতাচারের কারণে আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী মানুষের উপর আপতিত হয়ে থাকে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেনঃ 

ظهر الفساد في البر والبحر بما كسبت أيدي الناس ليذيقهم بعض الذي عملوا لعلهم يرجعون. 

“জলে-স্থলে বিপর্যয় প্রকাশ পেয়েছে, মানুষের কৃতকর্মের কারণে, যাতে তিনি তাদেরকে তাদের কিছু কৃতকর্মের ফল ভোগ করাবেন, সম্ভাবত তারা ফিরে আসবে”। (সুরা রোমঃ ৪১) 

وما أصابكم من مصيبة فبما كسبت أيديكم ويعفو عن كثير.

“তোমরা যে বিপদের শিকার হয়েছ তা তোমাদের কৃতকর্মের কারণে, আর তিনি অনেক কিছু ক্ষমা করে দেন”। (সুরা শুরা ৩০) 

একটি হাদীসের ভাষ্য : 

“يا معشر المهاجرين خمس إذا ابتليتم بهن ـ وأعوذ بالله أن تدركوهن ـ لم تظهر الفاحشة في قوم قط حتى يعلنوا بها إلا فشا فيهم الطاعون والأوجاع التي لم تكن مضت في أسلافهم الذين مضوا، ولم ينقصوا الميكال والميزال إذا أخذوا بالسنين وشدة المؤونة وجور السلطان عليهم، ولم يمنعوا زكاة أموالهم إلا منعوا القطر من السماء ولو لا البهائم لم يمطروا، ولم ينقضوا عهد الله وعهد رسوله إلا سلط الله عليهم عدوا من غيرهم فأخذوا بعض ما في أيديهم، وما لم تحكم أئمتهم بكتاب الله ويتخيروا مما أنزل الله إلا جعل الله بأسهم بينهم”.

“হে মুহাজির সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে পাঁচটি জিনিস দেখা দিলে (পাঁচটি আযাবের আশংকায় থেকো) – আর আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থণা করি যাতে তোমরা এই অবস্থার সম্মুখীন না হও : 

১) যখন কোন সম্প্রদায়ের মধ্যে অশ্লীলতা প্রকাশ পায় এবং তা তাদের মাঝে প্রকাশ্য হয়ে যায়, তখন তাদের মধ্যে এমন মহামারী ও রোগ-ব্যাধি প্রকাশ পায় যা তাদের পুর্ববর্তীদের মধ্যে ছিল না 

২) যখন কোন সম্প্রদায় ওজনে কম দিতে অভ্যস্ত হয়ে যায়, তখন তাদের উপর দুর্ভিক্ষ, জীবনযাপনের কষ্ট ও ক্ষমতাশীলদের অত্যাচার নেমে আসে 

৩) যখন কোন সম্প্রদায় যাকাত দিতে অস্বীকার করে তখন তারা আসমানের বৃষ্টি থেকে মাহরুম হয়, যদি পশু-পাখি ও চতুষ্পদ জন্তু না থাকত তাহলে তাদের উপর এক ফোঁটা বৃষ্টিও হত না  

৪) যখন কোন সম্প্রদায় আল্লাহর অঙ্গীকার ও তাঁর রাসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে তখন আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর এমন শত্রু চাপিয়ে দেন যারা তাদের হাতের সম্পদ ছিনিয়ে নেয়

৫) যখন কোন সম্প্রদায়ের শাসকগণ আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী শাসন করে না, আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা গ্রহণ করে না তখন আল্লাহ তায়ালা তাদের মধ্যে সমস্যা তৈরি করে দেন

(হাদীসটি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত, ইমাম ইবনে মাজাহ উল্লেখ করেছেন) 

এই সকল আয়াত ও উল্লেখিত হাদীসের মর্মকথার বিপরীতে বেশ কিছু আয়াতে বর্ণনা এসেছে যে, আল্লাহ তায়ালা বান্দাদেরকে ইমান ও নেক আমলের কারণে ভাল অবস্থা, বরকত ও সমৃদ্ধি দান করেন। সামনের দুটি আয়াতের দিকে খেয়াল করি :   

ولو أن أهل القرى آمنوا واتقوا لفتحنا عليهم بركات من السماء والأرض ولكن كذبوا فأخذناهم بما كانوا يكسبون.

“যদি জনপদের অধিবাসীরা ইমান আনে ও তাকওয়া অবলম্বন করে তাহলে আমি তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিবো আসমান ও জমিনের বরকতসমূহ। কিন্তু তারা মিথ্যা মনে করল, ফলে আমি তাদেরক পাকরাও করলাম তাদের কৃতকর্মের কারণে”। (সুরা আ’রাফ ৯৬) 

وضرب الله مثلا قرية كانت آمنة مطمئنة يأتيها رزقها رغدا من كل مكان فكفرت بأنعم الله فأذاقها الله لباس الجوع والخوف بما كانوا يصنعون.

“আল্লাহর একটি দৃষ্টান্ত পেশ করছেনঃ একটি জনপদ (যার অধিবাসী ছিল) ইমানদার ও প্রশান্ত, সকল স্থান থেকে অনায়াসে তার রিজিক উপস্থিত হত, (কিন্তু) তারা আল্লাহর নিয়ামত অস্বীকার করল ফলে আল্লাহ তাদেরকে ক্ষুধা ও ভয়ের চাদর তাদেরকে পরিয়ে দিলেন, তাদের কৃতকর্মের কারণে” (সুরা নাহল ১১২) 

উল্লেখিত আয়াত ও হাদীসসমূহের মাধ্যমে এটা স্পষ্ট হয় যে, দুনিয়ার বিপদ-আপদ ও বিপর্যয়-দুর্যোগ আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে, মানুষের অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার ইত্যাদির কারণে যা আল্লাহ তায়ালা অপছন্দ করেন, আবার আল্লাহর পক্ষ থেকে মানুষকে ভাল অবস্থা দান করা হয় তাদের ইমান ও নেক আমলের কারণে। এটাই মুসলমানদের বিশ্বাস

 

  • কাযা-কদরের প্রতি ইমানের অর্থ 

 

ইসলামী আকীদাহতে একটি মৌলিক বিষয় হচ্ছে কাযা-কদরের উপর বিশ্বাস বা ইমান স্থাপন করা। ‘কাযা’ ও ‘কদর’ শব্দদুটি আভিধানিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রদান করলেও এবং পারিভাষিকভাবেও শব্দদুটির দুটি ভিন্ন ভিন্ন অর্থ করা হলেও, চূড়ান্ত পর্যায়ে শব্দদুটি অভিন্ন অর্থ বুঝায়। 

সংক্ষেপ ও সহজে ‘কাযা-কদর’ এর অর্থ হচ্ছে তাকদির বা ভাগ্যলিপি, অর্থাৎ এটা বিশ্বাস করা যে, আমাদের জীবনে ও এই জগতে ভাল-মন্দ যা কিছু হয়ে থাকে তা আল্লাহ তায়ালা পুর্ব থেকেই লেখে রেখেছেন, এবং তাঁর ইচ্ছায় ও আদেশেই এই সকল ঘটনা ঘটে থাকে। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :  

لا يعزب عنه مثقال ذرة في السماوات ولا في الأرض ولا أصغر من ذلك ولا أكبر إلا في كتاب مبين.

“আসমানসমূহ ও যমীনে অনু পরিমাণ কিংবা তদপেক্ষা ছোট অথবা বড় কিছুই তাঁর অগোচরে নেই, বরং সবই সুস্পষ্ট কিতাবে রয়েছে।” (সুরা সাবাঃ ৩)   

ما أصاب من مصيبة في الأرض ولا في أنفسكم إلا في كتاب من قبل أن نبرأها إن ذلك علي الله يسير لكيلا تأسوا على ما فاتكم ولا تفرحوا بما آتاكم والله لا يحب كل مختال فخور.

“পৃথিবীতে এবং তোমাদের (জীবনের) মধ্যে যে কোন বিপদই আসুক, তা রয়েছে একটি কিতাবের মধ্যে, যা আমি পৃথিবী সৃষ্টির আগেই লিপিবদ্ধ করে রেখেছি। নিঃসন্দেহে এটা আল্লাহর জন্য সহজ। যাতে তোমরা অনুশোচনা না করো যা হাত ছাড়া হয়ে গিয়েছে তার জন্য, এবং (অধিক) খুশি না হও যার তিনি তোমাদেরকে দান করেছেন তা পেয়ে। আর আল্লাহ অহংকারী ও গর্বকারীকে পছন্দ করেন না” (সুরা হাদীদ  ২২-২৩)  

কাযা-কদরের প্রতি ইমানের চারটি স্তর রয়েছে, যা হচ্ছে :  

১) ইলমের স্তর   অর্থাৎ এই ইমান বা বিশ্বাস রাখা যে আল্লাহ তায়ালা আসমান-জমিন তথা সমগ্র বিশ্বজগতের সবকিছু সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন 

২) লিপিবদ্ধকরণের স্তর অর্থাৎ এই ইমান রাখা যে, আল্লাহ তায়ালা সমস্ত সৃষ্টিজীবের ভাল-মন্দ সবকিছু ‘লাওহে মাহফুজে’ লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন 

৩) ইচ্ছা ও মাশয়িইতের স্তর অর্থাৎ এই ইমান রাখা যে, জগতে যা কিছু হচ্ছে ও ঘটছে তা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা ও মাশিয়াতের দ্বারাই হচ্ছে ও ঘটছে

৪) সৃষ্টির স্তর অর্থাৎ এই ইমান রাখা যে, আল্লাহ তায়ালা এই জগতের সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, মানুষের সকল কর্মের সৃষ্টিকর্তাও তিনি 

কাযা-কদরের বিষয়টি বান্দার ইমানের সাথে সম্পর্কিত একটি বিষয়, যাকে ‘অন্তরের আমল’ হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে। আল্লাহ আমাদের জন্যে কি লেখে রেখেছেন তা আমাদের জানা নেই, তবে ভাল-মন্দ আমাদের সামনে স্পষ্ট। তাই বান্দা হিসাবে আমাদের উচিত ভাল কাজ করা ও মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকে। 

কাযা-কদরের কারণে মানুষ কোন কাজ করতে বাধ্য নয়, বরং মানুষকে আল্লাহ তায়াল ইখতিয়ার দান করেছেন, যা ইচ্ছা সেটা করার। তবে আল্লাহর অনুমতি ও ইচ্ছা ছাড়া কোন কাজ হতে পারে না। মানুষ যখন কোন কাজ করতে ইচ্ছা করে ও চেষ্ঠা করে তখন আল্লাহ বান্দাকে সেই কাজ করার শক্তি দান করেন। মানুষ যদি কোন কাজ করতে ইচ্ছা না করে তাহলে আল্লাহ তাঁকে সেই কাজ করতে বাধ্য করেন না। 

মানুষকে যে দ্বীনের প্রতি আমল করার আদেশ দেওয়া হয়েছে, আল্লাহর নাফরমানি করতে নিষেধ করা হয়েছে। এবং নেককাজ করার কারণে পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে আর মন্দ কাজের কারণে শাস্তির ভয় দেখানো হয়েছে। মানুষের মধ্যে যদি ইচ্ছা ও স্বাধীনতা না থাকে, মানুষ যদি অন্য কোন মাধ্যমে কোন একটি নির্দিষ্ট কাজ করতে বাধ্যও হয়ে থাকে তাহলে এই আদেশ-নিষেধ ও পুরস্কার-তিরস্কারের কোন অর্থ থাকে না। আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন :  

وقل الحق من ربكم فمن شاء فليؤمن ومن شاء فليكفر إنا أعتدنا للظالمين نارا… 

“বলুন, সত্য আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে, সুতরাং যার ইচ্ছা সে যেন ইমান আনে, আর যার ইচ্ছা সে যেন কুফুরি করে, আমি তৈরি করেছি জালিমদের জন্য জাহান্নাম…” (সুরা কাহাফ ২৯)

এইজন্যে মানুষ যদি কোন অন্যায় কাজ করে কাযা-কদরের অজুহাত পেশ করা থাকে তাহলে সেই অজুহাত ও যুক্তি শরিয়াতের দৃষ্টিতে ও যুক্তির নিরিখে কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যারা নিজেদের কুফুরি করার পক্ষে আল্লাহর ইচ্ছা বা তাকদিরের যুক্তি পেশ করেছে তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা কুরআনের আয়াতে এরশাদ করেছেন :  

وقالوا لو شاء الرحمن ما عبدناهم ما لهم بذلك من علم إن هم إلا يخرصون.

“তারা (কাফেররা) বলেঃ যদি রহমান ইচ্ছা করতেন তাহলে আমরা তাদের (মুর্তিদের) ইবাদত করতাম না। এই সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই, তারা শুধু ধারণা করে কথা বলছে” (সুরা যুখরুফ ২০)

এর মাধ্যমে স্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, আল্লাহ তায়ালা কাযা-কদরের দ্বারা মানুষকে কোন কিছু করতে বাধ্য করেননি, বরং তিনি তাদেরকে স্বাধীনতা ও ইখতিয়ার দান করেছেন এবং এই স্বাধীনতা ও ইখতিয়ারি হচ্ছে পুরস্কার ও শাস্তি অর্জনের ভিত্তি বা মুল কারণ। 

আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইবনে আব্বাস রাঃ কে শিক্ষা দিতে এরশাদ করেছেনঃ 

…واعلم أن الأمة لو اجتمعت على أن ينفعوك بشيء لم ينفعوك إلا بشيء قد كتبه الله لك، وإن اجتمعوا على أن يضروك بشيء لم يضروك إلا بشيء قد كتبه الله عليك. رفعت الأقلام وجفت الصحف.

“…মনে রেখো যদি সমগ্র উম্মত একত্রিত হয় কোনভাবে তোমার উপকার করতে তাহলে তারা তোমার সেই পরিমাণই উপকার করতে পারবে যা আল্লাহ তোমার জন্যে লিখে রেখেছেন, কিংবা তারা যদি একত্রিত হয় কোনভাবে তোমার ক্ষতি করতে তাহলে তারা তোমার শুধুমাত্র সেই পরিমাণই ক্ষতি করতে পারবে যা আল্লাহ তায়ালা তোমার বিপক্ষে লিখে রেখেছেন। কলম উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে আর নথি শুকিয়ে গেছে”।

( আগামী সংখ্যায় সমাপ্ত হবে ) 

 

The post করোনা-কালে মুসলমানের আকীদাহ : একটি প্রয়োগিক পাঠ appeared first on Fateh24.



from Fateh24 https://ift.tt/2V2wgoD

No comments:

Post a Comment