ফাতেহ ডেস্ক:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) জানিয়েছে, মহামারী করোনা থেকে বাঁচতে সারাবিশ্বে মোট ১৩৩টি ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে। এর মধ্যে ১০টি ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। ডব্লিউএইচও’র সবশেষ তথ্যানুযায়ী, করোনার অন্তত ১০টি টিকা ক্লিনিক্যাল ইভালু্যশন বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা পর্যায়ে আছে। এছাড়া আরো অন্তত ১২১টি সম্ভাব্য টিকা নিয়ে ‘প্রি-ক্লিনিক্যাল’ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে।
সিএনএন হেলথের এলিজাবেথ কোহেন এবং ডিভন এম জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে ১৩৩ টি সম্ভাব্য কোভিড -১৯ টি ভ্যাকসিন আবিস্কারের কাজ চলছে। সম্ভাব্য দশটি ভ্যাকসিনের দশটি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং চীনে ক্লিনিকাল ট্রায়ালে রয়েছে।
অন্যান্য 123টি বিশ্বব্যাপী প্রাক-ক্লিনিকাল মূল্যায়নের মধ্যে রয়েছে। ডাব্লিউএইচও তথ্য মতে, টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়, তুলানে বিশ্ববিদ্যালয়, আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন মূল্যায়নের কাজ চলছে।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের স্কুল অব মেডিসিনের সেন্টার ফর ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্টর এপিডেমিওলজিস্ট ডক্টর দিলরুবা নাসরিন বলেন, ‘আমি যদি খুব আশাবাদী হয়ে বলতে পারতাম যে আগামী মাসের মধ্যে ভ্যাকসিন চলে আসবে, তাহলে আমার চেয়ে খুশি কেউ হতো না। বাস্তবতা হলো, কভিড-১৯-এর টিকা এই মুহূর্তে আমাদের হাতে নেই। কিন্তু বিজ্ঞানকে আমি ভীষণভাবে তারিফ করি। বিজ্ঞান সুপারসনিক গতিতে ছুটছে ভ্যাকসিনের পেছনে। এখন পর্যন্ত অন্তত ২২৪টি ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চলছে।’
তিনি বলেন, অন্তত ছয়টি ভ্যাকসিন ‘হিউম্যান ট্রায়াল ফেজে’ (মানুষ পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা) চলে এসেছে। ভ্যাকসিন তৈরির অনেকগুলো পর্যায়। গবেষণাগার থেকে শুরু হয়ে ‘প্রি-ক্লিনিক্যাল স্টেজ’ (জীবজন্তু পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা) এর জন্য তৈরি হয় প্রতিটি ভ্যাকসিন। মানুষের ওপর পরীক্ষার ধাপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিধায় তিনটি ফেজে মানুষের ওপর ভ্যাকসিন পরীক্ষা করা হয়।
ড. দিলরুবা নাসরিন বলেন, মানুষের শরীরে পরীক্ষামূলক একটি ভ্যাকসিন দেওয়ার অনেক ঝুঁকি আছে। ভ্যাকসিনের নিরাপত্তা, কার্যক্ষমতা ও কার্যকারিতা কেমন তা দেখতে হয়। ফেজ ওয়ান, টু ও থ্রি-তিনটি পর্যায়েই যদি পুরোপুরি ভালো ফলাফল পাওয়া যায় কেবল তখন ভ্যাকসিন ‘অ্যাপ্রুভাল ফেজে’ (অনুমোদন পর্যায়ে) যায়।
তিনি বলেন, ২২৪টি ভ্যাকসিনের মধ্যে অন্তত ছয়টি ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ পর্যায়ের ফেজ ওয়ান বা টুতে আছে। এর মধ্যে তিনটি একেবারে ‘ইউনিক’। সেগুলো খুবই ভালোভাবে কাজ করছে।
দিলরুবা নাসরিন বলেন, বেশিরভাগ মানুষ চেনেন অক্সফোর্ডের জেনার ইনস্টিটিউটের স্যারা গিলবার্টকে। তাঁর ভ্যাকসিনকে আমরা বলি ‘ভেক্টর’ ভ্যাকসিন। অপেক্ষাকৃত দুর্বল অ্যাডিনো ভাইরাসের গায়ে কভিড ভাইরাসকে ইমপ্ল্যান্ট করে মানুষের শরীরে ঢুকানো হচ্ছে। এটিকে বহিঃশত্রু মনে করে মানুষের শরীর এর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করছে। সেটি ‘ফেজ ওয়ানে’ আছে এবং ভালো ফলাফল হচ্ছে। তারপর যে ভ্যাকসিনটি সামনে চলে আসবে তা হলো যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনের মডার্না ভ্যাকসিন। এটি খুব নতুন ধরনের ভ্যাকসিন। একে বলে এমআরএনএ ভ্যাকসিন। সেটি কিন্তু ‘সেকেন্ড ফেজে’ চলে এসেছে।
তিনি বলেন, ফেজ ওয়ানে ১০-এর গুণিতক নম্বর প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে (সাধারণত ২০ থেকে ৮০ জন) ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। ফেজ টুতে শতকের গুণিতকে মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। ছয় শ জন লোকের ওপর এখন পরীক্ষাটি চলছে। ইতিমধ্যে জুলাই থেকে ফেজ-থ্রি পর্যায়ের পরিকল্পনা করে ফেলেছে। তখন কয়েক হাজার লোকের ওপর ভ্যাকসিনটি পরীক্ষা করা হবে।
দিলরুবা নাসরিন বলেন, আমি গর্বিত যে আমার সেন্টার ফর ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্টও ‘ফেজ থ্রি’ পর্যায়ে ওদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। আমরা সেটি ট্রায়াল দেব।
-এ
The post বিশ্বে ১৩৩টি ভ্যাকসিনের কাজ চলছে: ডাব্লিউএইচও appeared first on Fateh24.
from Fateh24 https://ift.tt/2Mo5dQL
No comments:
Post a Comment